ইনসাইড আর্টিকেল

বিশ্বের বিস্ময় খাদ্যে স্বনির্ভর বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 16/10/2018


Thumbnail

একটা সময় ছিল যখন সারের দাবিতে আন্দোলন করলে কৃষককে গুলি খেয়ে মরতে হতো। এছাড়া খাদ্য সহায়তার জন্য বহির্বিশ্বে হাত পাতা কিংবা বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে বছরের নির্দিষ্ট একটা সময়ে মঙ্গা বা খাদ্যাভাব দেখা দেওয়া ছিল বাংলাদেশের জন্য অতি সাধারণ বিষয়। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে পাল্টে গেছে চিত্রটা। বাংলাদেশ এখন খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশে উৎপাদিত খাদ্যশস্য এখন রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। অধিক জনসংখ্যার বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদনে এমন বিস্ময়কর সাফল্য পুরো বিশ্বকেই বিস্মিত করেছে। আজ ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবসের সকালটি তাই বাংলাদেশের জন্য আশঙ্কা নয়, আশা নিয়েই এসেছে।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির অত্যধিক হারের কারণে স্বাধীনতার পর প্রতি বছরই বাংলাদেশে আবাদী জমির পরিমাণ কমেছে। কিন্তু গত ১০ বছরে এসব সমস্যা খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্য রুখতে পারেনি। সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও কৃষি খাতের উন্নয়নে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে গত দশ বছরে দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন বেড়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি। হেক্টরপ্রতি ধানের উৎপাদন তিন গুণের বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সময়টাতেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ধান রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। এছাড়া জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। বিশ্বে ফল উৎপাদন বৃদ্ধির হারও এখন বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। সব মিলিয়ে, বাংলাদেশকে বিশ্বের দশম বৃহত্তম খাদ্য উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

খাদ্য উৎপাদনে এত সব সাফল্যের পর বাংলাদেশে এখন আর খাদ্যাভাবে জর্জরিত মানুষ চোখে পড়ে না। পিকেএসএফ এবং গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব মাইক্রোফাইন্যান্সের (আইএনএম) একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৮ সালে উত্তরবঙ্গের মঙ্গাপীড়িত পাঁচ জেলায় মঙ্গার সময় তিন বেলা খেতে পারতো মাত্র ২৩ শতাংশ পরিবার। ২০১৩ সালে এসে তার পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৪ শতাংশে। এছাড়া এসব এলাকার পরিবারপ্রতি বার্ষিক আয় ১২০ শতাংশ বেড়ে পূর্বের ৩৫ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ৪২ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে দাঁড়ায় ৭৮ হাজার একশত টাকায়। এই চিত্রটি থেকেই বোঝা যায় বাংলাদেশের মানুষ এখন আর না খেয়ে থাকে না। এমনকি খাদ্যের দাম যদি কোনো কারণে বেড়ে তবুও সবাইকে ব্যাগ ভর্তি করেই বাজার করতে দেখা যায়। বাংলাদেশের ক্রমাগত অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে এমনটা সম্ভব হয়েছে।

কৃষকবান্ধব কৃষিনীতি, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের আন্তরিকতা প্রভৃতির ফলে বাংলাদেশের কৃষিতে এখন রমরমা বিরাজ করছে। দেশে সুশাসনের ধারা বজায় থাকলে খাদ্য উৎপাদনের এই উল্লম্ফন বজায় থাকবে বলে মনে করেন কৃষিবিদগণ।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭