ইনসাইড থট

কি করবে বিএনপি জোট?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 17/10/2018


Thumbnail

ড.কামাল হোসেনের সঙ্গে যাওয়ার পর দুই দিনের মাথায় বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রথম দফায় মঙ্গলবার এ জোট ভুক্ত দুটি দল জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে।
ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবদের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক গড়ার অভিযোগ তুলে ২০ দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ন্যাপ ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)।

২০ দলীয় জোটের বাইরে কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিএনপি যুক্ত হওয়ার তিন দিনের মাথায় এই ঘোষণা দিল দল দুটি।

বিএনপির সঙ্গ ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে মঙ্গলবার গুলশানে একটি কমিউনিটি সেন্টারে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসেন বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মর্তুজা।
তবে ছয় বছরের জোটসঙ্গী দুটি দলের আকস্মিক সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণায় বিস্মিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে বলে তারা মনে করেন।

প্রয়াত রাজনীতিক মশিউর রহমান যাদু মিয়ার নাতি জেবেল গানি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিএনপি যোগ দেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ঐক্যফ্রন্ট গঠন নিয়ে যাদের অগ্রণী ভূমিকা দেখা যাচ্ছে, তাদের প্রায় সবাই ১/১১ এর অরাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাদের অনেকেই মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে গণফোরাম সভাপতি কামালের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিএনপি ছাড়াও রয়েছে আ স ম আবদুল রবের জেএসডি ও মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য।
এই জোট গঠনের উদ্যোগে সক্রিয় রয়েছেন সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মইনুল হোসেন। এই জোট গঠনে সক্রিয় ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মো. মনসুর আহমেদও জরুরি অবস্থার সময় সংস্কারপন্থী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে মান্নার মতো আওয়ামী লীগে স্থান হারিয়েছিলেন।

এক সময়ের সহকর্মী কামাল হোসেনকেও অগণতান্ত্রিক সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে দেখেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা বলছেন, নতুন এই জোটের আত্মপ্রকাশের উদ্দেশ্যও ষড়যন্ত্র করা।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে আন্দোলন জোরদারের লক্ষ্যে ২০১২ সালে চারদলীয় জোটের পরিসর বাড়িয়ে ১৮ দল গঠন করেছিল বিএনপি, তখন এই জোটে অন্তর্ভুক্ত হয় বাংলাদেশ ন্যাপ ও এনডিপি। পরে আরও দুটি দল যোগ দিলে তা ২০ দলীয় জোট নামে পরিচিতি পায়।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে ব্যর্থ হওয়ার দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল ২০ দল। ওই দাবিতে সরকারের সাড়া না মেলার পাশাপাশি দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পর আন্দোলনে জোরদারের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয় বিএনপি।

গত শনিবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর সোমবার রাতে ২০ দলের বৈঠক হয়েছিল। তাতে জোটের পক্ষ থেকে বিএনপির অবস্থানে সমর্থনের কথা জানানো হলেও পরদিনই দুটি দল জোট ছাড়ল।

২০ দলীয় জোটের সোমবারের বৈঠকে গানি কিংবা মর্তুজা ছিলেন না। দুই দলের মহাসচিব প্রতিনিধিত্ব করেন ওই বৈঠকে।

মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে গানি ও মর্তুজার সঙ্গে বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া ও এনডিপির মহাসচিব মন্জুর হোসেন ঈসাও ছিলেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে তারা কেউ কথা বলেননি। শুধু গানিই কথা বলেন।

কিন্তু কথা একটাই। ড. কামালের সংগে এ জোটে তারা রাজনৈতিক কোন লাভ দেখছেন না। এজন্যই তাদের জোট ত্যাগের সিদ্ধান্ত। কাল দুটি দল বিএনপির জোট থেকে বের হওয়ার পর এটি ১৮ দলীয় জোটে পরিণত হলো। ধারনা করা হচ্ছে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই আরো কমপক্ষে চারটি দল জোট ছাড়ছে। ফলে বিএনপিতে এখন গড়ার চেয়ে ভাঙার শব্দই বেশি শোনা যাচ্ছে। এ অবস্থায় বিএনপি নেতৃত্ব কি করে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

লেখক: সাংবাদিক
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭