ইনসাইড আর্টিকেল

বঙ্গবন্ধুর শেখ রাসেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/10/2018


Thumbnail

সারাদিন রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন ছেলেটির বাবা শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর চারপাশে ঘিরে থাকে অজস্র মানুষ। থাকবে নাই বা কেন? ছেলেটির বাবা যে বঙ্গবন্ধু, পুরো বাঙালি জাতির পিতা। এই মানুষদের কথা শুনতে শুনতে তার কথা শোনার আর সময়ই পায় না বাবা। কিন্তু ছেলেটি বুঝতে পারে, বাবা তাঁকে অনেক ভালোবাসেন। এই ছেলেটি আর কেউ নেয়, বলছি বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের কথা। আজ ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেলের ৫৪তম জন্মদিন।

স্বল্পায়ু জীবনে বাবার সঙ্গে একরাশ স্মৃতি জমা করার সুযোগ না পেলেও বাবাকে নিয়ে শেখ রাসেলের স্মৃতি ভান্ডার কিন্তু কম সমৃদ্ধ নয়। জীবনের একটি বিশাল সময় বঙ্গবন্ধু জেলে কাটিয়েছেন। অন্য সন্তানেরা বিষয়টির গাম্ভীর্য বুঝলেও কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল বিষয়টি বুঝতে পারতো না। তাই শিশু রাসেল বাবাকে জেলে দেখতে আসলে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যেতে চাইতো। কিন্তু একবার বঙ্গবন্ধু আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলেন রাসেল আর তাঁকে বাড়ি নিয়ে যেতে চাইছে না। এমনকি তাঁকে বাবা বলেও ডাকছে না। বরং মা বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের গলা জড়িয়ে তাঁকেই বাবা, বাবা বলে ডাকছে রাসেল। বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেলের এই গল্পই একই সঙ্গে মজাদার ও দুঃখজনক।

আরেকদিনের ঘটনা। ধানমন্ডির ৩২ নাম্বারের তিনতলা সেই বিখ্যাত বাড়ির একপাশে বঙ্গবন্ধুর পড়ার ঘর। সেই ঘরে বসে লেখালেখিও করতেন বঙ্গবন্ধু। শিশু রাসেলের মনে প্রশ্ন জাগে, কী লেখেন বাবা? তাই মাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘মা, বাবা টেবিলে ঝুঁকে পড়ে কি লেখে? কবিতা!’

ছেলের কথা শুনে মা বেশ শব্দ করে হেসে ওঠেন। তারপর বঙ্গবন্ধুর জ্যাষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনাকে ডেকে বললেন, ‘হাসু, শুনে যা তোর ছোট ভাই কি বলে। শুনে যা-’

হাসু আপা রাসেলের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘রাসেল তুই নিজে বাবাকে জিজ্ঞেস করিস, বাবা তো এ বাড়িতে তোকেই সবচেয়ে বেশি আদর করে।’

কিন্তু বাবার আদরের রাসেল ব্যস্ত বাবার কাছে কখনো এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চায়নি বলেই জানা গেছে।

বাবার সান্নিধ্য পাওয়ার সুযোগ খুব বেশি না পেলেও বাবার ন্যাওটা ছিলেন রাসেল। শেখ রাসেলের বড় বোন শেখ রেহানার ভাষ্য থেকে জানা যায়, একবার বঙ্গবন্ধু বন্যার্ত এলাকা পরিদর্শনে গেলে বঙ্গবন্ধুর পোশাক, পায়ের স্যান্ডেল কী হবে ঠিক করে দিয়েছিলেন শেখ রাসেল।

বাবাও ভালোবাসতেন ছোট্ট ছেলেটিকে। কর্মব্যস্ত দিনপঞ্জির মধ্যেই সময় রাসেলকে আদর করতে ভুলতেন না তিনি। প্রতিদিন সকালেই ঘুম থেকে জেগে গিয়ে একটু সময় বাঁচিয়ে পরম ভালোবাসায় তার ছোট ফুটফুটে রাসেল সোনার কপালে, মাথায়, বুকে, চিবুকে, গালে, চুলে আদর করে দিতেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

রাসেলের মৃত্যুর দিনটিও পিতার আশীর্বাদেই উজ্জ্বল হওয়ার কথা ছিল। সমাবর্তন উপলক্ষে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের । বঙ্গবন্ধুকে স্যালুট জানানোর জন্য ইউ ল্যাব স্কুলের পক্ষ থেকে বাছাই করা হয়েছিল ছয়জন শিক্ষার্থীকে। বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ রাসেল ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম একজন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে আর স্যালুট জানানো হয়নি শেখ রাসেলের। ঘাতকের বুলেট তার আগেই কেড়ে নিয়েছে ছোট্ট রাসেলের প্রাণ। মাত্র ১০ বছর বয়সে তাঁকে সেনাসদস্যরূপী কিছু পিশাচের হাতে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করতে হয়।

জন্মদিনে বঙ্গবন্ধুর আদরের শেখ রাসেলের জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭