ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

দায় এড়াতে পারবেন সৌদি যুবরাজ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/10/2018


Thumbnail

সাংবাদিক জামাল খাসোগি সৌদি কনস্যুলেটেই খুন হন বলে গত শুক্রবার স্বীকার করে নিয়েছে দেশটির প্রশাসন। তবে এ বিষয়টিই গত দু’সপ্তাহ ধরে অস্বীকার করে আসছিল তারা। দেশটি দাবি করছিল, কনস্যুলেটে প্রবেশ করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেরিয়ে যান ওই সাংবাদিক। এমনকি, খাসোগি অন্তর্ধানের দায় তুরস্ক ও কাতারের ওপরেও চাপাতে চাইছিল তারা।

সৌদি আরবের অ্যাটর্নি জেনারেল এক বিবৃতির মাধ্যমে জানান, ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটে মারামারিতে জড়িয়ে প্রাণ হারান খাসোগি। এ ঘটনায় দেশটির গোয়েন্দা বিভাগের উপ প্রধান আহমেদ আল-আসিরি এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সৌদ আল-খাতানিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ১৮ জনকে গ্রেপ্তারের কথাও বলা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই বিবৃতির মাধ্যমে কি দায় এড়াতে পারবেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান?

তুরস্ক শুরু থেকেই দাবি করে আসছিল সৌদি যুবরাজ সালমানের নির্দেশেই খাসোগিকে হত্যা করা হয়। যুবরাজ বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে সৌদি সরকারের অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের সম্পৃক্ততা ছাড়া এ হত্যাকাণ্ড সম্ভব হতো না বলে বিভিন্ন তদন্তে উঠে এসেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদি সরকার যে ব্যাখ্যা দিচ্ছে তা মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। যুবরাজ সালমান নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে যত ব্যাখ্যাই উপস্থাপন করুন না কেন, কোনটাই বাঁচাতে পারবে না তাকে। যুবরাজ অচিরেই তার পদ হারাতে যাচ্ছেন বলেও মনে করছেন মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকরা।

তুরস্ক প্রশাসনের বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, খাসোগি হত্যাকাণ্ডে সালমানের জড়িত থাকার সুস্পষ্ট প্রমাণ তারা পেয়েছে। হত্যাকারী দলের ১৫ জন সদস্যকে সৌদি আরব থেকে বিমানযোগে ইস্তাম্বুলে পাঠানো এবং তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে সালমানের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এছাড়াও কনস্যুলেটের ভেতরে স্বয়ং কনসাল জেনারেলের উপস্থিতিতে হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করা, উচ্চ পর্যায়ের একজন ফরেনসিক কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেওয়া; কোনটাই যুবরাজের নির্দেশ ছাড়া হয়নি বলেও সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বিশ্লেষকরা জানান, সৌদি আরবের মতো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত একটি দেশে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সম্মতি ছাড়া অল্প কয়েকজন কর্মকর্তার পক্ষে এত বড় হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। তারা বলছেন, বাদশাহ সালমান সব অপারেশনের কথা নাও জানতে পারেন। তবে অত্যন্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষী মোহাম্মদ বিন সালমান, যিনি একইসঙ্গে দেশটির ক্রাউন প্রিন্স, ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী, তিনি এই অপারেশনের কথা জানতেন না, এই দাবি হাস্যকর।

আরব বিশ্বের আইন ও রাজনীতি নিয়ে কাজ করেন এমন কয়েকজন জানান, কঠোর কোন শাস্তি হয়ত যুবরাজ পাবেননা। তবে তিনি নিঃসন্দেহে ক্ষমতা হারাতে চলেছেন। এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭