ইনসাইড পলিটিক্স

সংলাপ নাকি আওয়ামী লীগের পুনর্মিলনী?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 01/11/2018


Thumbnail

গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যকার সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। সংলাপে কারা অংশ নেবেন সে তালিকা দুই পক্ষই ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের পক্ষ থেকে সংলাপে অংশ নিতে যাচ্ছেন ২১ জন আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে ১৬ জন সংলাপে অংশ নেবেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১৬ নেতার অধিকাংশই অতীতে আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় আজকের সংলাপকে অনেকে ঠাট্টা করে আওয়ামী লীগের পুনর্মিলনী বলে অভিহিত করছেন।  

প্রথমেই আসা যাক জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ডা. কামাল হোসেনের কথায়। ড. কামাল আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগের অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে রাজনীতিতে এসে আওয়ামী লীগের আইনমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। ’৯১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন ড. কামাল।

এবার আসা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মূল দল বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের কথায়। ব্যারিস্টার মওদুদও এক সময় আওয়ামী লীগ করতেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম প্রধান কৌঁসুলি ছিলেন তিনি।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আরেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা জাসদ সভাপতি আ. স. ম. আব্দুর রবেরও রাজনীতিতে হাতেখড়ি আওয়ামী আদর্শের রাজনীতি মাধ্যমেই।  এক সময় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন তিনি। আ. স. ম. আব্দুর রব বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন, বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা উপাধি প্রদানের কৃতিত্বটিও তাঁরই। প্রাক্তন আওয়ামী লীগার রব ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকেটে লক্ষ্মীপুর জেলা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং আওয়ামী লীগ সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আরেক শীর্ষস্থানীয় নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নাও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচনও করেছিলেন তিনি।

এছাড়া গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টুও অতীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা আওয়ামী লীগের ঢাকা মহনগরের সভাপতি এবং যুবলীগের নেতা ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত মন্টু ১৯৮৬ সালের আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং এমপি নির্বাচিত হন।

সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একজন প্রথম সারির সক্রিয় নেতা। আ. স. ম. আব্দুর রবের মতো তিনিও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে ডাকসুর ভিপিও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করে মৌলভীবাজার থেকে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক।

এছাড়া ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতনও সাবেক আওয়ামী লীগার। অতীতে ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন তিনি।

এই নেতারা ছাড়া আজকের সংলাপে আরও অংশগ্রহণ করবেন আ স ম আব্দুর রবের সহধর্মিনী তানিয়া রব। তাঁর অবশ্য অতীতে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ছিল না। একমাত্র রবের স্ত্রী হিসেবেই তিনি রাজনীতিতে আসেন।

সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে বিএনপির চার নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দীন সরকার, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং  মির্জা আব্বাস ছাড়া প্রায় সবাই প্রাক্তন আওয়ামী লীগার।  তাই অনেকেই মজা করে প্রশ্ন করছেন, এটি কি সংলাপ নাকি আওয়ামী লীগের পুনর্মিলনী? এই নিয়ে সরস আলোচনায় মেতেছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭