লিভিং ইনসাইড

পরিবারের সঙ্গে দারুণ সময় কাটুক খাবার টেবিলে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 06/11/2018


Thumbnail

স্ত্রী আর দুই সন্তান, ছোট ভাই নিয়ে বসবাস রায়হানুল করীমের। তিনি সরকারি চাকুরে, স্ত্রী ব্যাংকার। দুই ছেলেমেয়ে সারাদিন কলেজ-স্কুল, কোচিং আর প্রাইভেট নিয়ে ব্যস্ত। ছোট ভাইয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস। যে যার মতো ব্যস্ত। সারাদিন কারও সঙ্গে কারো দেখা নেই, শুধু ফোনে প্রয়োজনীয় কথা। সন্ধ্যা নামতেই ঘরে ফেরা, সবাই ক্লান্ত, বিশ্রাম বা যে যার কাজে যার যার মতোই। সারাদিন কী ঘটল, কার কী খবর সেটা একই ছাদের নিচে বসেও জানা হয়না অনেক সময়। তবে সবাই মিলে একান্ত সময় কাটানো বলতে রাতে একসঙ্গে ডাইনিং টেবিলে রাতের খাবার খাওয়া। সেখানেই জমে ওঠে আড্ডা, কর্মব্যস্ত দিনের গল্প।

আমাদের ব্যস্ত জীবনে তাই এই রাতের খাবার আর ডাইনিং টেবিল খুবই প্রয়োজনীয়। সারাদিন পরে সব সদস্যরা এক হওয়া মানে তাদের সারাদিনের বিভিন্ন জমে থাকা ঘটনা, কথা ভাগাভাগি করে নেওয়া।

পুরো পরিবার অন্তত একবেলা একসঙ্গে খেতে বসলে পরিবারের সন্তানেরা তার বাবা মায়ের কাছ থেকে অনেক কিছু সম্পর্কে গল্পের ছলে জানবে। একজন আরেকজনের সঙ্গে খাবার ভাগাভাগি করে খাওয়া হয়। ফলে পরস্পরের প্রতি টান, বাড়ে এবং নিজেদের মধ্যে বন্ধন দৃঢ় হয়।

তবে আজকাল দিন পাল্টে গেছে অনেকটাই। টিভিতে পছন্দের অনুষ্ঠান দেখতে দেখতে, পড়াশুনার ফাকে বা সামাজিক মাধ্যম ঘাটতে ঘাটতেই যে যার মতো খেয়ে নেয়। এতে করে পুরো বাড়িটাই যেন ডাইনিং টেবিল হয়ে গেছে। মনে রাখতে হবে যে পরিবারের সবাইকেই তো একটু সময় দিতে হবে। সেক্ষেত্রে খাওয়ার সময়টাই তো উপযোগী।

এই সময়টাকে কাজে লাগালে পারিবারিক দুরত্বটা হয়তো কমানো সম্ভব। কেউ কোনোরকম সমস্যায় থাকলে সেটা নিয়ে এখানে আলোচনা করা হয়। ফলে সবাই সেটা জেনেশুনে একটা সমাধান দিতে পারে।

আপনার পারিবারিক কোনো পরিকল্পনা থাকলে সেটা খাওয়ার টেবিলে সেরে নিতে পারেন। কোথাও দাওয়াত থাকলে, কাউকে কোনো উপহার দিতে হলে, সবাই মিলে কোথাও ঘুরতে যাবেন, সেই পরিকল্পনা করার জন্য এই সময়টুকু কাজে লাগান।

বাবা-মায়েরা সন্তানদের পড়ালেখাসহ সব ধরনের খোঁজখবর নিতে পারেন এই সময়। তার কিসে কি সমস্যা সেটাও জেনে নিতে পারেন। বাড়িতে বাবা-মা থাকলে তাদেরকেও বিশেষ সময় দিন, খোঁজখবর নিন। যে যার নিজেদের সারাদিনের গল্পগুলো সবাইকে শেয়ার করুন, এতে দুরত্ব কমবে।

সময় আর কাজের চাপে এখন অতীতকে ভুলেই যাই আমরা। একটা সময়ে কি করেছি, কাদের সঙ্গে মেলামেশা ছিল, ভালো লাগা আর খারাপ লাগাগুলো নিজেদের ভেতরেই থেকে যায়। খাবার টেবিলে কথা প্রসঙ্গে অতীতের কথাগুলো উঠে আসে। এতে করে আপনার ভালোলাগা কাজ করে, আপনি চাইলেও অতীত ভুলে যেতে পারেন না।

এজন্য খাবার টেবিলে প্রতিদিন একসঙ্গে খাওয়ার কিছু নিয়ম চালু করে ফেলতেই পারেন। তাছাড়া ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের একসঙ্গে খাবার খেতে অভ্যাস করান। আর সবার পছন্দের খাবার রাখুন খাবার তালিকায়। তাহলে খাবার টেবিলে একসঙ্গে খেতে আগ্রহী হবে সবাই।

খাওয়ার সময়ে টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন দূরে রাখতে বলুন সবাইকে। কারণ এগুলো মনোযোগ নষ্ট করে এবং পরিবারের একে অপরের সঙ্গে মানসিক যোগাযোগে ব্যাঘাত ঘটায়।

পারিবারিক কোনো সমস্যা নিয়ে যখন কোনো আলোচনা করবেন, তখন নিজের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখবেন। কাউকে বকাবকি না করে সমাধানে আসার চেষ্টা করুন।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭