নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 12/11/2018
ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনে যাওয়ার শর্ত হিসাবে দাঁড় করিয়েছেন, ‘নির্বাচনী তফসিল এক মাস পিছিয়ে দেবার দাবিকে।‘
সাধারণ জনগণ হিসেবে এটা জানার অধিকার অবশ্যই আছে, কেন এই এক মাস প্রয়োজন? কোন পরিকল্পনা হাতে নিয়ে তারা এই এক মাস সময় চেয়েছেন? নিশ্চয়ই ড. কামাল সেই ব্যাখ্যা জনগণকে দেবেন।
তাদের চাওয়ার প্রতি নির্বাচন কমিশন সেই সম্মান দেখাবেন কি না সেটা জানি না। যদি আগামী এক মাস সময় তারা পায় তাহলে যে ব্যাখ্যা তিনি দেবেন সেই ব্যাখ্যাকে গলা টিপে হত্যা করে যদি এই দেশে কোন বিধ্বংসী পরিস্থিতির জন্ম নেয় তাহলে তার সকল দায় ঐক্যফ্রন্টকেই নিতে হবে মর্মে ওয়াদাবদ্ধ হতে হবে বলে মনে করি।
ড. কামাল নিসন্দেহে ঐক্যফ্রন্টের নাম দিয়ে বিএনপির ছুড়ে দেয়া চাহিদার কথা উল্লেখ করেছেন। কারণ বিএনপি ব্যতীত অন্য যারা আছেন তাদের না আছে দল, না আছে বল। যা আছে তাদের জন্য নির্বাচন সকালে হলেই কি আর বিকালে হলেই কি? কিছুই যায় আসে না তাতে। তবুও ধরে নিচ্ছি এটা ঐক্যফ্রন্টের চাওয়া।
জনগণ প্রশ্নই করতে পারে কেন এই এক মাস? কি হবে এই এক মাসে? রাজনীতির কোন সমীকরণ পূর্ণ হবে আগামী এক মাসে?
নির্বাচন কোন মাসে হবে, সেই অনুসারে তফসিল কোন সময়ে ঘোষিত হবে রাজনৈতিক দল হিসাবে তার সকল হিসাব জানা থাকা জরুরী এটা সকলেই জানে। সেই জানার আলোকে তাদের সকল পর্ব সমাপ্ত করতে হবে সেটাই একটি পরিশীলিত রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
তাহলে দৃশ্যমান যে আশায় এখন নির্বাচনী তফসিল এক মাস পিছিয়ে দেবার জন্য বলা হলো সেই সকল আশা বাস্তবায়ন করার জন্য কেন তারা যথেষ্ট সময় নিয়ে মাঠে নামেনি সেটার ব্যাখ্যা কি হতে পারে? একটি নির্ধারিত সময়কে টার্গেট করে ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হলো কোন উদ্দেশ্যে? এই গঠন পক্রিয়া কেন আরো আগে সমাধা হলনা?
ড. কামাল এবার অন্তত স্বীকার করবেন যে, যা তারা করছেন সেটার পিছনে একটি সুক্ষ বার্তা লুকায়িত ছিলো। যে কোন উপায়ে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা। কিন্তু এই চাওয়াটা এভাবে না হয়ে সাধারণ মানুষের সমর্থন নিয়ে করলেই বিষয়টা স্বাভাবিক হতো। আমরা সাধারণ মানুষ চাই দেশ চলুক শান্তিপূর্ণ ভাবে। আমরা চাই দেশের মাটিতে কোন রক্তপাত না হোক।
যখন দেখি আচমকা লাফ দিয়ে উঠে কোন বিধ্বংসী সময় দেশের মাটিতে নামিয়ে আনার পায়তারা চলছে তখন এটা ভাবতে বাধ্য করে আগামী এক মাস কোন ভালো সময়কে নির্দেশ করে না। এবং এটাও ভাবতে বাধ্য করে, জনগণের দোহাই দিয়ে যে কর্ম পন্থা আহ্বান করা হচ্ছে তার মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বিক বিষয়ে যে গ্রোথ সেটাকে আটকে দেয়ার পায়তারা।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিগত যে কোন সময়কে পিছনে ফেলেছে। এটা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীগণ চোখে না দেখতে পেলেও পাকিস্তান বুদ্ধিজীবী ঠিক দেখতে পেয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান নিজেদের দেউলিয়া অবস্থা উত্তরণের জন্য দ্বারেদ্বারে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছে। কোন ভাবেই পাকিস্তান বাংলাদেশের এই উন্নয়ন মেনে নিতে পারবে না। ঠিক একি ভাবে পৃথিবীর অনেক দেশ সেটা মেনে নিতে পারবে না। মুখে ভালো কথা বললেও বাংলাদেশ নিজের পায়ে উঠে দাঁড়িয়েছে এটা অনেকের মেনে নেয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কারণ তাদের নিকটে হাত পেতে থাকা একটি সদস্যের অকাল মৃত্যু হোক তারা সেটা চায় না।
সাধারণ মানুষের এমন ভাবনার বিপক্ষে ড. কামাল কোন ব্যাখ্যা দেবেন কি?
আগামী এক মাস নির্বাচনী তফসিল পিছিয়ে দেবার চাহিদা এবং তার বিনিময়ে নির্বাচনে অংশ নেবার বার্তা একটি ফাঁদ বলেই মনে করি। যে কেউ বুঝবে "যা হয়না বাসর রাতে, তা হয় না কোন রাতে"। একটি প্রবাদ না ব্যবহার করে উপায় ছিলোনা।
নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, বিএনপি নির্বাচনে অবশ্যই অংশ নেবে। এটা ছাড়া তাদের সামনে আর কোন অপশন নেই। কারন তারা ভালো করেই যানে এবার নির্বাচনে অংশ না নিলে তাদের ব্যবসায়ী নেতা কর্মিগণ নিজেদের তাগিদে দল পরিবর্তন করবে। শুকনা মৃত বৃক্ষে কেউ পানি ঢালে না এটা দুনিয়ার নিয়ম। তাছাড়া নির্বাচনে অংশ না নিলে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে নিয়ে যুদ্ধ করার সকল পথ রুদ্ধ হবে। আস্তে আস্তে নেতা কর্মি হারিয়ে বিএনপি হয়ে যাবে রুগ্ন একটি দল। এই সহজ সরল সমীকরণ জনগণ এখন বোঝে সেটা ড. কামালের মনে রাখা উচিত।
এক মাস তফসীল পিছিয়ে দেয়ার যে দাবি, সেটাকে নির্বাচন কমিশনের অবশ্যই তলিয়ে দেখা উচিত। কারণ এই একমাসে কোন নীলনক্সা আঁকা হয়েছে সেটা ক্ষতিয়ে দেখা উচিত বলেই মনে করি। যদি ভালো কিছু থাকে তাহলে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু যদি কোন অশনি সংকেত থাকে তাহলে অবশ্যই সেই অশনিসংকেত সমূলে ধ্বংস করা অপরিহার্য।
ক্ষমতায় কে যাবে আর কে যাবে না সেটা আমাদের মতো সাধারণের চিন্তা নয়। কিন্তু এই দেশ আমারও। আমার সন্তান এই মাটিতেই বেঁচে আছে। আর তাই সেই মাটি কোন নীল নক্সায় পতিত হোক সেটা কখনই চাইনা। ভালোভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আমাদের আছে। কোন স্বার্থান্বেষী রাজনীতির নিকট সেই ভালো থাকা ইজারা দিতে আমি বা আমরা বাধ্য নই।
লেখক: কলামিস্ট, সাধারণ সম্পাদক, দুর্জয় বাংলা সাহিত্য ও সামাজিক ফাউন্ডেশন
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭