ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আমেরিকার ট্রাম্প আফ্রিকায় কীভাবে জনপ্রিয়?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/11/2018


Thumbnail

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনোই আফ্রিকায় পা রাখেননি। এই মহাদেশটি সম্পর্কে মন্তব্য করার ক্ষেত্রেও তিনি খুব কমই ভদ্রতার পরিচয় দিয়েছেন। নাইজেরিয়ানদের তিনি হাট বাজারের বাসিন্দা এবং আফ্রিকান দেশগুলোকে অত্যন্ত নোংরা বলে অভিহিত করেছিলেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, অন্য যেকোনো অঞ্চলের তুলনায় আফ্রিকাতেই তিনি বেশি জনপ্রিয়। বিশ্বখ্যাত পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

পিউ তাদের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ৫৯ শতাংশ নাইজেরীয় ও ৫৬ শতাংশ কেনীয় বিশ্বাস করেন, ট্রাম্প সারাবিশ্বে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছেন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকানদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কিছুটা কমই বলা চলে। দেশটির ৩৯ শতাংশ মানুষ বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ইতিবাচক মনে করেন। কিন্তু এই হার বিশ্বব্যাপী ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কেনিয়ায় ট্রাম্পের থেকে বেশি জনপ্রিয় ছিলেন। ওবামার বাবা ছিলেন কেনীয় নাগরিক। তবে বাবা কেনীয় নাগরিক হওয়ার কারণেই দেশটিতে বারাকের জনপ্রিয়তা বেশি ছিল, এটা ঠিক নয়। কারণ জার্মানিতেও তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। অন্যদিকে তার উত্তরসূরি ট্রাম্পকে পছন্দ করে মাত্র ১০ শতাংশ জার্মান।

প্রশ্ন হচ্ছে, আফ্রিকায় কি ট্রাম্প সত্যিই জনপ্রিয়? এর উত্তর পেতে হলে আরও বেশ কিছু তথ্যের দিকে তাকাতে হবে আমাদের। জরিপকারী প্রতিষ্ঠান ইপসস জানিয়েছে, ৩৮ শতাংশ কেনীয় নাগরিক মার্কিন প্রেসিডেন্টের নামই জানেন না। পিউ’র জরিপে এ কারনেই হয়তো কেনিয়ায় ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বেশি দেখা গেছে। কারণ অচেনা কারও বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া কিছুটা কঠিনই বটে।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষক রিচার্ড উইক বলেন, সম্ভবত আফ্রিকানরা ট্রাম্পকে পছন্দ করেন, কারণ তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রকে ভালোবাসেন। সম্ভবত নাইজেরিয়ান, কেনীয় ও দক্ষিণ আফ্রিকানরা জার্মানির তুলনায় দ্বিগুণ হারে মার্কিন মতাদর্শ ধারণ করেন। মার্কিন সংস্কৃতি নিঃসন্দেহে ফ্যাশনেবল। ‘ব্লাক প্যান্থার’ চলচ্চিত্রটিও আফ্রিকাতে দারুন জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। হিপ-হপ গান ও মার্কিন ফাস্ট ফুডও আফ্রিকায় জনপ্রিয়।

ট্রাম্প আফ্রিকায় জনপ্রিয় হওয়ার আরও কিছু কারণ থাকতে পারে। হয়তো অনেকেই ট্রাম্পের স্টাইল, ক্ষমতা এবং সম্পদের কারণে তাকে পছন্দ করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে দক্ষিণ আফ্রিকান কমেডিয়ান ট্রেভর নোয়া বলেন, ট্রাম্পের দম্ভ, ক্ষমতা এবং বুদ্ধি অনেকটা উগান্ডার সাবেক একনায়ক ইদি আমিনের মতো।

মোগাদিসুর এক বাসিন্দা বলেন, ‘সোমালিয়ার বাবা-মায়েরা ক্ষমতাধর মানুষের নামে তাঁদের সন্তানের নাম রাখতে পছন্দ করেন। ট্রাম্প যদি মুসলিম হতেন, তাহলে হয়তো অনেকেই তাদের ছেলের নাম রাখত ডোনাল্ড।’

কেনিয়ার রিফট ভ্যালির একটি পাবে মদ্যপানরত এক ব্যক্তি ট্রাম্পের কঠোর চীন নীতির কারণে তার প্রশংসা করছিলেন। কেনিয়ানরা চীনের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রকেই বেশি পছন্দ করে থাকে। এমনকি তারা মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিশ্বকেই ইতিবাচক বলে মনে করেন।  

আফ্রিকায় ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার আরেকটি কারণ হতে পারে মহাদেশটি সম্পর্কে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ইতিবাচক মনোভাব। সম্প্রতি মার্কিন ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্প আফ্রিকা সফর করেন। এরপর ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আফ্রিকা অত্যন্ত সুন্দর। তবে অনেকেই ট্রাম্পের স্বভাবসুলভ আক্রমনাত্মক মন্তব্যের কারণেই তাকে পছন্দ করে থাকেন। উইলি উইকিসা নামের একজন ট্রাকচালক বললেন, ট্রাম্প আফ্রিকা নিয়ে সেই মন্তব্যগুলোই করেন, যেগুলো অন্যরা ভেবে থাকেন। টিভিতে মার্কিন রেসলিং শো দেখতে দেখতে উইকিসা আরও বললেন, তিনি অবশ্যই মন্তব্যের ক্ষেত্রে সততার পরিচয় দিয়েছেন।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭