কালার ইনসাইড

বলিউডের হাওয়া বদল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/11/2018


Thumbnail

একসময় বলিউডের ছবি মানেই ছিল ধুমধাড়াক্কা নাচ, গান আর অ্যাকশন। বস্তাপঁচা গল্প হলেও, হাইপ্রোফাইল তারকাবলে এসব ছবির বক্স অফিস সাফল্য পেতে খুব একটা বেগ পেতে হতো না। কিন্তু সময়ের সাথে দর্শকদের রুচিবোধ বদলে যাওয়ায়, এই ধারা বিগত কয়েক বছরে অনেকটাই বদলে গেছে। সাধারণ মানুষের গল্প, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা ব্যক্তিদের জীবনী এমনকি সমসাময়িক বৈজ্ঞানিক পরিক্ষনিরিক্ষার ওপর ছবি নির্মিত হচ্ছে বলিউডে। ভালো গল্পের পাশপাশি ছবিতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারও হচ্ছে সমানতালে। 

বলিউডের হাওয়া বদল বিশেষ করে ২০১৬-১৭ সাল থেকে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়। সেই সময় মুক্তি পায় ‘বেফিকরে’ ও ‘যাব হ্যারি মেট সেজাল’ এর মতো গতানুগতিক কিছু প্রেমের ছবি। শাহরুখ খান, রণবীর সিং ও আনুশকা শর্মার মতো নামীদামী তারকা এবং দৃষ্টিনন্দন লোকেশন থাকা সত্ত্বেও বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে ছবিগুলো। অথচ ওই একই সময় মুক্তি পায় ‘বারেলি কি বারফি’ ও ‘শুভ মঙ্গল সাবধান’-এর মতো ভালো গল্পের ছবি। অপেক্ষাকৃত ছোট মাপের তারকা থাকা সত্ত্বেও ছবিগুলো বক্স অফিসে হিট তকমা লাভ করে।

অক্ষয় কুমারের মতো গ্ল্যামারাস নায়কও নিজের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে ‘টয়লেট এক প্রেমকথা’ বা ‘প্যাডম্যান’ এর মতো জনপ্রিয় ও ব্যবসাসফল ছবিতে অভিনয় করেছেন। যেখানে অক্ষয়কে সাধারন মধ্যবিত্ত শ্রেনীর চরিত্রে দেখা গেছে। এসব ছবির জনপ্রিয়তা প্রমাণ করেছে যে, ঝাঁ চকচকে বস্তাপঁচা প্রেমের গল্পের চেয়ে সাধারণ মানুষের বিষয়গুলোকে ছবিতে বেশি দেখতে চায় দর্শক।   

এদিকে সালমান খানের অ্যাকশন ছবিগুলোরও একই দশা। অর্থ উঠে আসলেও দর্শকদের মন ভরাতে পারছে না। চলতি বছর মুক্তি পাওয়া ‘রেস থ্রী’ এর জলন্ত উদাহরণ। অর্থাৎ গ্ল্যামারাস চরিত্র এখন আর গিলছে না দর্শক।

২০১৮ সালে এসে বলিউডের ছবির গল্প এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার আরও জোরালো হয়েছে। এ বছর `সঞ্জু` এবং `বাঘী ২` ছাড়া সেই অর্থে বড় বাজেটের কোনো হিট ছবি নেই। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘ফিল্মফেয়ার’ এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি বছর মুক্তি পাওয়া ছবির মধ্যে শতকারা হারে সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করেছে ‘স্ত্রী’ ছবিটি। অথচ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন শ্রদ্ধা কাপুর ও রাজকুমার রাওয়ের মতো মধ্যম সারির তারকারা। ‘আন্ধাধুন’, ‘বাধাই হো’, ‘অক্টোবর’, ‘মনমর্জিয়া’ও বড় বাজেটের কোনো ছবি নয়। ছবির অভিনয়শিল্পীরাও কোনো গ্লামারাস চরিত্রে আবির্ভূত নয়।

সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘থাগস অব হিন্দুস্তান’ সেভাবে দর্শকদের মন জয় করতে না পারলেও, ছবিতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার প্রশংসা পেয়েছে। যদিও অতিমাত্রায় ‘ভিএফএক্স’ (স্পেশাল ইফেক্টস) এর ব্যবহারকে অনেকে কটাক্ষ করেছেন। তবে এ ধরনের ছবি নিঃসন্দেহে বলিউডে নতুন ধারা তৈরি করেছে। স্পেশাল এফেক্টস-এর কারসাজী দেখা যাবে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা শারুখের ‘জিরো’, অক্ষয়ের ‘২.০’, সুশান্ত সিং রাজপুতের ‘কেদারনাথ’ এবং রণবীর সিংয়ের ‘সিম্বা’ ছবিতেও।

‘ডেকান ক্রনিকেল’-এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বলিউডে বর্তমান সময়ের বেশীরভাগ ছবিতে শুধুমাত্র ‘ভিএফএক্স’ প্রযুক্তির জন্য ছবির মোট বাজেটের অন্তত ২০ শতাংশ বরাদ্ধ থাকে।

বলিউডের এমন হাওয়া বদল যেমনি ছোট-বড় পরিচালক ও প্রযোজকদের উৎসাহ দিচ্ছে, তেমনি দিচ্ছে আমাদের দেশীয় সিনেমা বদলে যাওয়ার ইংগিতও। কারণ বলিউডি হাওয়া তো আমাদের গায়ে হামেশাই লেগে থাকে।

সূত্রঃ ফিল্মফেয়ার, ডেকান ক্রনিকেল ও উইকিপিডিয়া  

বাংলা ইনসাইডার/ এইচপি 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭