ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কী হলো আসিয়ার?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/11/2018


Thumbnail

পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া খ্রিস্টান নারী আসিয়া বিবিকে নিয়ে রহস্য কাটছেই না। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাকে কোথায় রাখা হয়েছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানাচ্ছে না পাক প্রশাসন।

আসিয়ার আইনজীবী সাইফ মুলুক দাবি করেছিলেন, আসিয়াকে পাকিস্তানের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সুনির্দিষ্টভাবে তাঁর অবস্থান জানাননি তিনি। অন্যদিকে পাক প্রশাসন দাবি করেছে আসিয়াকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে তাকে দেশের বাইরে পাঠানোর কথা অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, আসিয়াকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করছে তাঁর দেশ। গত রোববার একথা জানান তিনি।

ফ্রান্সের প্যারিসে একটি সম্মেলনে ট্রুডো বলেন, ‘পাকিস্তানে অনেক স্পর্শকাতর বিষয় রয়েছে। এ কারণে আসিয়ার বিষয়টি নিয়ে আমি বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে আমি মনে করিয়ে দিতে চাই, কানাডা একটি আন্তরিক দেশ।` এরপরই বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রুডো জানান, আসিয়া বিবিকে কানাডায় নিয়ে আসা এবং আশ্রয় দিতে চায় তাঁর সরকার। আসিয়াকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে দেশটির বিরোধী রক্ষণশীল পার্টিরও সমর্থন রয়েছে। তাঁর পরিবারকে আশ্রয় দিতে সব রকম ক্ষমতা ব্যবহার করার জন্য দলটি প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোকে অনুরোধ জানিয়েছে।

পাকিস্তানের কয়েকটি সূত্র দাবি করেছে, আসিয়াকে ইতিমধ্যেই দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আসিয়ার মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে বিক্ষোভরত উগ্র ডানপন্থী তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি)’র সঙ্গে করা চুক্তির কারণে বিষয়টি জানাচ্ছে না পাক সরকার।

৪৭ বছর বয়সী আসিয়া বিবি ২০০৯ সালের জুনে পানি খাওয়াকে কেন্দ্র করে মুসলিম প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এর এক পর্যায়ে আসিয়া নবী হযরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন বলে দাবি করেন তাঁর প্রতিবেশীরা। এরই জের ধরে তার বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি আইনে মামলা হয়। ওই মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। তবে গত ৩১ অক্টোবর আসিয়া বিবির মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এরপর থেকেই কট্টরপন্থী মুসলিমরা আসিয়ার শাস্তি পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। উগ্র ডানপন্থী দল (টিএলপি) এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয় বলে জানা যায়। আন্দোলনকারীরা সারা দেশে অবস্থান ধর্মঘট পালন করতে থাকে। বিক্ষোভ থামাতে টিএলপির সঙ্গে একটি চুক্তি করে পাক সরকার। চুক্তির আওতায় আসিয়া বিবির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার বিনিময়ে বিক্ষোভ থামাতে সম্মত হয় টিএলপি।

আসিয়াকে মুক্তির আদেশের পরপরই তার স্বামী পশিমা কোনো দেশে আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন। আসিয়ার আইনজীবী সাইফুল মুলুককে অস্থায়ী শরণার্থী আশ্রয় দিয়েছে নেদারল্যান্ডস। তাকেও হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছিলো।

আসয়া বিবি পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া প্রথম অমুসলিম নারী। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট মুক্তির আদেশ দেওয়ার আগে আট বছর কারাগারে কাটিয়েছেন তিনি। পাঁচ সন্তানের এই জননীর প্রকৃত নাম আসিয়া নরিন। ২০১১ সালে আসিয়ার পক্ষ নেওয়ার কারণে পাঞ্জাবের গভর্নর সালমান তাসির হত্যার শিকার হন বলে মনে করা হয়। একই কারণে দেশটির সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী শাহবাগ ভাট্টিকেও গুলি করে হত্যা করা হয়।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭