লিভিং ইনসাইড

আপনার সন্তান যখন কৈশোরে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 15/11/2018


Thumbnail

সেই ছোট থেকে গুটি গুটি পায়ে পার্থ যে কবে কৈশোরে পা দিয়ে দিলো, অবাক লাগে মায়ের। চোখের সামনে ছেলেটা এখন যেন আরও তরতর করে বেড়ে উঠছে। শারীরিক-মানসিক বিভিন্ন পরিবর্তন চোখে পড়ছে। কখনো মনে হচ্ছে একটু দূরে সরে যাচ্ছে,আবার কখনো মনে হচ্ছে ছেলেটার বোধহয় মন খারাপ বা কিছু লুকাচ্ছে। মাঝেমোঝে কথা শুনতে চাচ্ছে না। আবার কখনো কোনো সমস্যায় ছেলে পার্থ খুব ভরসা নিয়ে মাকে সমাধান দিচ্ছে, ঠিক বড়দের মতো করে সবকিছু শুনছে, সমাধান দিচ্ছে।

এই কৈশোর বয়সটা আমাদের সবার জীবনেই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে শুরু হয় নিঃসঙ্গবোধ, স্বাধীনচেতা মনোভাব। কিছুটা দুরন্তপনা, পরিবার থেকে একটু একটু করে সরে যাওয়া। সমাজের মতো বড় পরিসরে অন্তর্ভুক্ত হওয়া। এতে চিন্তা বাড়তে থাকে অভিভাবকের। আবার মনে রাখতে হবে যে, এই সময় থেকেই সন্তান তার বাবা-মায়ের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে। তাই তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে হবে অন্যভাবে।

  • বাবা-মায়ের সঙ্গে কৈশোরে দ্বন্দ্ব-সংঘাতগুলো সাধারণত শুরু হয় পড়ালেখা নিয়ে। এসময় পড়াশুনায় মন বসতে নাই চাইতে পারে। সেটা নিয়ে বকাবকি না করে সিলেবাস মেনে পড়াশুনার ওপর জোর দিন। তবে বেশি চাপ দেবেন না। নিজে খোঁজ নেবেন, সম্ভব হলে পড়াতে বসাবেন নিজেই।
  • বাইরে ঘোরাঘুরি, টিভি কিংবা মোবাইল ফোনের সামনে অতিরিক্ত সময় কাটানো, বন্ধুদের সঙ্গে অতিরিক্ত সময় দেওয়ার জন্যও মনোমালিন্য হয়। এগুলো ঠাণ্ডা মাথায় সামলে নিন। এগুলোর একটি নির্দিষ্ট সীমা আছে সেটা বোঝান। সীমার মধ্যে থাকলে সেটা মেনেই তার সঙ্গে ব্যবহার করুন।
  • কোনোকিছু এড়িয়ে যাচ্ছে, কম কথা বলছে বা কিছু লুকাচ্ছে দেখলে বাবা-মা হয়ে আপনি উল্টো বেকে বসবেন না। এসময়ে এটা হয় সেটা বুঝুন। আপনি তার সঙ্গে একটু ফ্রি হওয়ার চেষ্টা করুন। নিজে থেকে কথা বলুন, প্রশ্ন করুন। আপনি বেকে বসলে সে আরও বেশি বেকে বসবে, সেটাই স্বাভাবিক।
  • তাকে আপনি নিজে একটু সময় দিন। সময় পেলেই তাকে নিয়ে ঘুরতে যান। সম্ভব হলে নিয়মিত আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের বাসায় নিয়ে বেড়ান। যেই জায়গাগুলো সন্তানের পছন্দ সেখানে তাকে নিয়ে যান, কেনাকাটা করুন।
  • এই বয়সে নতুন শখ বা ইচ্ছা তৈরি হতে পারে কারণ এখনই সে নতুন দুনিয়াতে প্রবেশ করে। সেই শখের মূল্যায়ন করুন। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে হলে তার শখগুলো পূরণ করুন। তাকে সৃজনশীল হতে দিন। তার ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবেন না। কিছু সিদ্ধান্ত তাকে নিতে শিখান।
  • সন্তানকে পরিবারের সদস্য হিসেবে গুরুত্ব দিন। পরিবারে অনেক ঘটনাই আমরা উঠতি বয়সের সন্তানদের কাছে লুকাই। সেটা না করাই ভালো। বরং তাকে সমস্যাগুলো কিছুটা শেয়ার করতে পারেন। প্রয়োজনে তার থেকে মতামত, পরামর্শও নিতে পারেন। এতে সে অতোটা একাবোধ করবে না।
  • বাবা-মায়েরা একটা ভুল প্রায়ই করে। কিশোর সন্তানেরা অবাধ্য হলে বা কোথাও ব্যর্থ হলে সেটা অন্যদের কাছে বলেন, সন্তানের সামনেই বলেন। এতে করে সে জেদি হয়ে উঠতে পারে, মনও খারাপ করবে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সেটা তাকে আগে বলুন, অন্য কাউকে না। আর অবশ্যই তার ভালো কাজের প্রশংসা করবেন।
  • তাকে একা করে রাখবেন না। শুধু ঘরে বসে পড়াশুনা করবে, এই প্রবণতা ধরে রাখবেন না। তাকে বন্ধু বানাতে দিন, খেয়াল রাখবেন সেটা অবশ্যই ভালো বন্ধু। সেই বন্ধুকে আপনি নিজেও মূল্যায়ন করবেন।
  • আর সম্পর্কের উন্নতির ব্যাপারে দুই পক্ষেরই সক্রিয় হতে হবে। একে অপরের ভুল সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে। এ ধরনের আন্তঃসম্পর্ক তৈরি করতে হবে সহযোগিতা ও সহমর্মিতার মধ্য দিয়ে। এতে পরিণত আবেগ থাকবে।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭