ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্র: বিভক্ত সরকার, বিভক্ত দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 16/11/2018


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে সব জরিপ ও পূর্বানুমানই সত্যি হয়েছে। ৬ নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্রেটরা কংগ্রেসের দখল নিয়েছে। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা সিনেটে আধিপত্য ধরে রেখেছে। সবগুলো জরিপে ঠিক এমনটাই বলা হচ্ছিল। আগামী জানুয়ারিতেই নির্বাচিত প্রতিনিধি ও সিনেটররা দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ডেমোক্রেটরা কংগ্রেসে জয় পাওয়ায় তারা এখন সরকারের অংশ। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখায় তারাও শক্ত অবস্থানে থাকবে।

মার্কিন সংসদের দুইটি চেম্বারে দুই দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় উভয় পক্ষই বিজয় অর্জন করেছে। একই সঙ্গে দ্বিধা বিভক্ত দেশটি বিভক্ত একটি সরকারও পেয়েছে। ভোটের ফলাফল বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, ডেমোক্রেটরা বড় শহরগুলোতে ভালো ফল করেছে। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর ভোটারদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে। আরেকটি বিষয় লক্ষ্যনীয় যে, জনবহুল এলাকাগুলোতে ডেমোক্রেটরা জয় পেয়েছে। অন্যদিকে কম জনবহুল আসনগুলো রিপাবলিকানরা দখল করেছে। দেখা গেছে যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মার্কিনিই ডেমোক্রেটদের সমর্থন করে। কিন্তু আঞ্চলিক সীমারেখার কারণে রিপাবলিকানরাই সিনেটে বেশি আসন পেয়েছে।

কোনো দেশের সংসদ সদস্যদের একটি অংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে এবং অপর অংশ আঞ্চলিক সীমারেখার ফলে নির্বাচিত হলে সেটা সমস্যার কারণ হতে পারে। এর ফলে সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রেও জটিলতা দেখা দিতে পারে। আগামী জানুয়ারি থেকে মিনেসোটা হবে যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র অঙ্গরাজ্য যেখানে সংসদের একটি চেম্বার থাকবে ডেমোক্রেটদের দখলে, আর অন্যটি থাকবে রিপাবলিকানদের দখলে। এমনটা সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ১৯১৪ সালে।

কোন দেশের সংসদ বা আইনসভার দুইটি চেম্বারে দুই দলের নিয়ন্ত্রণ ভারসাম্যপূর্ণ বটে। তবে এর কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা মিচ ম্যাককোনেল একবার বলেছিলেন, তারা ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সব সিদ্ধান্তেরই বিরোধিতা করবেন। প্রকৃতপক্ষে তারা সেটা করেছিলেনও। তবে রিপাবলিকানদের বিরোধিতার মুখে তিনি কংগ্রেসে আইন পাশ করাতে ব্যর্থ হয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন। দেশ ও জাতির জন্য কোন ভালো কিংবা খারাপ সেটা বিবেচনা না করেই প্রেসিডেন্টের বিরোধিতা করা অবশ্যই সমীচীন নয়। ডেমোক্রেটদের অবশ্যই প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিল ক্লিনটনের সময় রিপাবলিকান আইনপ্রনেতারা তার বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো। কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় ডেমোক্রেটরাও এখন ঠিক সেই কাজটিই করতে পারবে। তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনৈতিক সম্পর্কসহ সব অপকর্মের তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে।

২০১০ সালে বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন রিপাবলিকানরা কংগ্রেসে সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল। ডেমোক্রেটদের সব পরিকল্পনাই বাধাগ্রস্ত করছিল তারা। ওবামা তখন বলেছিলেন, এটা অন্যায্য। সময়ের পরিবর্তনে পরিস্থিতিও উল্টে গেছে। বারাক ওবামার জায়গায় এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে রিপাবলিকানদের জায়গায় রয়েছে ডেমোক্রেটরা। প্রতিশোধের সুযোগ পেয়ে তারা কী পদক্ষেপ নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়। 

সূত্র: দি ইকোনমিস্ট

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭