ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ব্রেক্সিট হবে তো?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 19/11/2018


Thumbnail

ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র ওপর ক্রমশই চাপ বাড়ছে। তাঁর সিদ্ধান্তে অনাস্থা জানিয়ে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। মে ‘কে সরিয়ে দেওয়ারও দাবি তুলছেন অনেকে। তবে মে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, তিনি বিদায় নিলেই ব্রেক্সিট সফল হবে এমনটা নয়। বরং তাঁর প্রস্থান ব্রেক্সিট প্রক্রিয়াকে আরও বিলম্বিত করবে বলেই মন্তব্য করেছেন তিনি।

ইইউ (ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন) থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়া নিয়ে ব্রিটিশ সরকার সত্যিকার অর্থেই মহা বিপাকে পড়েছে। গত দুই বছরের দরকষাকষির পর দুই পক্ষের টেকনিক্যাল কর্মকর্তারা সম্প্রতি ব্রেক্সিট চুক্তির একটি খসড়ায় সহমত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে জানিয়েছিলেন, তাঁর মন্ত্রীসভাও ঐ খসড়ায় সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু এর কয়েক ঘন্টা পরই একের পর এক মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী খসড়ায় অসন্তোষ জানিয়ে পদত্যাগ করতে শুরু করেন। খসড়া নিয়ে ব্রিটিশ নেতাদের এই বিভক্তি প্রশ্ন জাগাচ্ছে, থেরেসা মে’র নেতৃত্বে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন সম্ভব? অনেকে আবার একধাপ এগিয়ে এমন প্রশ্নও করছেন, ব্রেক্সিট আদৌ হবে তো?

১৯৭৩ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের নেতৃত্বে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়। কিন্তু শুরু থেকেই দেশটি ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ নীতি অবলম্বন করে আসছিল। ইইউ’তে যোগ দিলেও তারা জোটের মূদ্রা ইউরো গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। এছাড়া ইইউ’র ভিসা প্রথায়ও দেশটি নিজেদের যুক্ত করেনি। অন্যদিকে ইউরোপীয় একক বাজারব্যবস্থার সুফল তারা ঠিকই ভোগ করে আসছে। বলা চলে, যুক্তরাজ্য শুধু ইইউ জোটের সুবিধাটুকুই ভোগ করছিল। এই জোটকে তারা ইউরোপীয় রাজনীতিতে নিজেদের প্রভাব ধরে রাখতেও ব্যবহার করছিল। ব্রিটেনের এই নীতির কারণে ১৯৮৩ সালে ফরাসি প্রেসিডেন্ট শার্ল দ্য গল বলেছিলেন, ‘ব্রিটিশরা ইউরোপে শুধু একটি দ্বীপরাষ্ট্র মাত্র। তারা ইইউ’র সঙ্গে নিজেদের একাত্ম করতে পারেনি।’

২০১৬’র মার্চে ব্রিটেনের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে আসার পক্ষে রায় দেয়। ব্রেক্সিটপন্থী নেতারা ব্রিটিশদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল যে, ইইউ জোটে থাকাটা তাঁদের সার্বভৌমত্ব ও স্বতন্ত্রতার জন্য হুমকিস্বরুপ। এছাড়া ইইউ ছাড়লে সরকারের বিপুল পরিমান আর্থিক সাশ্রয় হবে বলেও প্রচারণা চালাচ্ছিল ব্রেক্সিটপন্থী শিবির।

যুক্তরাজ্যের আইন বলছে, ব্রেক্সিট অবশ্যম্ভাবী। তবে অনেকে দ্বিতীয় দফার গণভোটের দাবি তুলছেন। তাদের দাবি এবারের গনভোটে প্রশ্ন তোলা হোক, `চুক্তির বিস্তারিত জানার পরেও কি আপনি ব্রেক্সিট চান?` এমনটা করা হলে হয়তো ব্রেক্সিটের বিষয়টি বদলে যেতে পারে। তবে থেরেসা মে দ্বিতীয় দফার গণভোট হবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছেন।

অনেকে মনে করেন, ব্রেক্সিটপন্থী নেতারা ইইউ ছাড়ার পক্ষে যতই গলা ফাটাক না কেন, আসলে তারা চান ব্রিটেন ইইউ জোটেই থাকুক। কেননা এতেই দেশটি ব্যাবসায়িকভাবে লাভবান হবে। প্রকৃতপক্ষে ব্রিটিশ নেতারা চান ইইউকে চাপের মধ্যে রেখে বাড়তি সুবিধা আদায় করে নিতে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিচ্ছেদের পর যুক্তরাজ্য ইইউ’র একক বাজারের সুবিধা হারাবে। এতে দেশটির অর্থনীতিতে ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে ইইউ এবং ব্রিটেনের মধ্যে যতই দরকষাকষি চলুক না কেন, শেষ পর্যন্ত ব্রেক্সিটের বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭