কালার ইনসাইড

আ. লীগ নাকি বিএনপি, নির্বাচনে ঝুঁকিহীন তারকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/11/2018


Thumbnail

ঝুঁকি বুঝেনতো ভাই? আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দেশের বেশিরভাগ মানুষ রাজনৈতিক বড় দুই দল, আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে বিভক্ত। তার মধ্যে এমন অনেক তারকাই আছেন প্রকাশ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচারে নিয়োজিত। কেউ আছেন মনোনয়ন পত্র কেনা নিয়ে আলোচনায়, কেউবা সমর্থন জানিয়ে। তবে কিছু তারকা আছেন এসব থেকে দূরে। মুখে কুলুপ এঁটেছেন এ সময়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা গণমাধ্যম, কোথাও তাঁদের মুখ থেকে টু শব্দ বের হয় না নির্বাচন নিয়ে। তাঁরা কি রাজনীতি পছন্দ করেন না? রাজনীতিতে কি কিছু যায় আসে না তাঁদের? অবশ্যই যায় আসে।

এদের সুবিধাভোগী হিসেবে চিহ্নিত করা খুব কঠিন কাজ নয়। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায়, সকল সুযোগ সুবিধা অবলীলায় ভোগ করেছেন। যদি সরকার পরিবর্তন হয়ে বিএনপি চলে আসে। তখনও তারা সমানে বিএনপি থেকে সুবিধা ভোগ করবেন। তারকাদের নিরপেক্ষ থাকতে হবে কোন বইয়ে লেখা আছে? হলিউড থেকে বলিউড, বড় বড় সুপারস্টাররা নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী নিয়ে কথা বলেছেন। তির্যক বাক্য বিনিময় হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে নিরপেক্ষতার ভাব কেন? যারা এমন নিরপেক্ষতার ভাব ধরে। নিশ্চিন্তে তাদের সুবিধাভোগী হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন।

নির্মাতা অমিতাভ রেজা বিএনপির গড়া চ্যানেল ওয়ান টিভি চ্যানেলের সঙ্গে কাজ করেছেন। সে সময় তিনি এই টিভির নানা কার্যকলাপে যুক্ত ছিলেন। গ্রে অ্যাড ফার্মের গাওসুল আজম শাওন এখন আওয়ামী লীগের সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) এর বেশিরভাগ বিজ্ঞাপনের কাজ করে বলে জানা যায়। একটা সময়ে তিনি বিএনপির জন্যও কাজ করেছেন। সময় মত সরে পরেছেন। তাদের সমসাময়িক পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে নানা সময়ে নানা ইস্যু নিয়ে কথা বলতে দেখা গেলেও এখন নিশ্চুপ।

তৌকির- বিপাশা হায়াত জুটির কে কোন দলের সাপোর্টার তা জানা যায় না। শাহরিয়ার নাজিম জয় বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাসাসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু গত ১০ বছরে সেটা কেউ ঠাওর করতে পারেনি। কারণ তিনি বিএনপি ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পরে নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছেন। আফজাল হোসেনসহ চ্যানেল আইয়ের আরও অনেকেই আছেন যারা নিরপেক্ষতার ভাব ধরে আছেন। শাইখ সিরাজের পেছনে তো রয়েছে বিরাট ইতিহাস। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিএনপি সরকারের সুবিধা ভোগ করেছেন। গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের অনেকের কাছে ধরনা দিয়ে ঠিকই সুবিধা ভোগ করেছেন।

জাতীয় পার্টির নেতা জিএম কাদেরের জামাতা অভিনেতা মাহফুজ আহমেদও বেশ চুপচাপ। শ্বশুরের মন্ত্রিত্বের সুবিধা ভোগ করলেও রাজনৈতিক কার্যকলাপে তাঁকে দেখা যায় না। আসিফ আকবর একসময় বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু নানা কারণে তিনি বিএনপি থেকে দূরে। গত দশ বছরে আওয়ামী সরকারের আমলে বিএনপির হয়ে কোনো কথাই বলেননি। ফলে অবলীলায় তিনি উপস্থিত থাকতেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতাদের নানা আয়োজনে। এবার নির্বাচনের আগে তিনিও মুখে কুঁলুপ এঁটেছেন।

মৌসুমি- ওমর সানী কোন দলের সাপোর্টার সেটা কখনো স্পষ্ট করে বলেননি। নানা সময়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বললেও নির্বাচনের আগে চুপ। পূর্ণিমা, পপিরও একই দশা।

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অনেক তারকা সংস্কৃতিকর্মী দেখেছি। তারা শুধু দলেই ভিড়েননি, দলের জন্য নানা সময়ে প্রতিপক্ষের হামলা- মামলা নিগ্রহের স্বীকার হয়েছেন। সৈয়দ হাসান ইমাম, আসাদুজ্জামান নূর, তারানা হালিমের মতো সংস্কৃতি কর্মীদের আমরা রাস্তায় পরে মার খেতে দেখেছে জাতি। সেই আওয়ামী লীগে বিএনপির সিল লাগানো তারকারা এখন সুবিধার লোভে নিত্য ভিড় বাড়াচ্ছে নেতাদের কাছে। এদের থেকে আওয়ামী লীগের সাবধান হওয়া উচিত।

চিত্রনায়িকা কবরী, ফারুক, তারানা হালিম, মমতাজ, শমী কায়সার, মাশরাফি, রোকেয়া প্রাচী, জ্যোতিকা জ্যোতি, তারিন, সিদ্দিকুর রহমান, আসাদুজ্জামান নূরসহ একঝাঁক তারকা আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারে যোগ দিয়েছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ, ফেরদৌস, তারিন, তানভিন সুইটি, বিজরী বরকত উল্লাহ, অরুণা বিশ্বাস, জাহিদ হাসান এবং তাঁর স্ত্রী মৌসহ দেশের প্রতিষ্ঠিত প্রায় শতাধিক অভিনয়শিল্পী। তাঁরা আওয়ামী লীগের ধানমন্ডিতে অবস্থিত সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে এ নিয়ে কিছুদিন আগে বৈঠকও করেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমর্থন জানিয়ে কথা বলছেন। শাকিব খান মনোনয়ন কিনতে চেয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকে। তাদের জন্য শুভকামনা।

বিএনপি দলে সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে পরিচিত মুখ রয়েছে জাহাঙ্গীর শিকদার, ছড়াকার আবু সালেহ, গীতিকার মনিরুজ্জামান মনি, কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন,কনকচাপা, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব গাজী মাজহারুল আনোয়ার, কণ্ঠশিল্পী মনির খান, নায়ক হেলাল খান, সঙ্গীত পরিচালক ইথুন বাবু, চলচ্চিত্র অভিনেতা আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল ও কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সি। এদের মধ্যে কেউ মনোনয়নও কিনেছেন। তাদের জন্যও শুভকামনা।

এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুপক্ষই নজর রাখছে তারকাদের দিকে। সুবিধাভোগীদের সুযোগ নেয়ার দিন এবার নির্বাচনে শেষ হবে। নির্বাচনের এই কঠিন সময়ে যদি না পাওয়া যায়। তাহলে ক্ষমতায় গেলে কাছে ভিড়লে সেটার উত্তর দেওয়া হবে কঠিনভাবে।

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ/জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭