ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে ভাঙনের শব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 28/11/2018


Thumbnail

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে বিএনপিতে ভাঙনের শব্দ শোনা যাচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আসন্ন নির্বাচনে যে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, আজ বুধবার মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে জানা তা গেলো। খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, এটা নিশ্চিত হওয়ার পর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন বিএনপির বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট  প্রার্থী। যার মধ্যে আছেন আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। এরা সবাই বিএনপিতে খালেদাপন্থী হিসেবে পরিচিত। এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নীতিগত কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। আজ মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে বিএনপির সিনিয়র এইসব নেতারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন। 

আপিল বিভাগের আদেশের কারণে বিএনপির অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতা এবারের সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এদের মধ্যে আছেন আমান উল্লাহ আমান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন অনেক বিএনপি নেতা। এর ফলে বিএনপিতে নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষের শক্তি অনেক ভারী হয়ে পড়লো। যারা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছিল খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পক্ষের অংশ নির্বাচন বিরোধীদের এই বলে আশ্বাস দিয়েছিল যে, শেষ পর্যন্ত খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং শর্ত ছিল যে বেগম খালেদা জিয়া যদি জেলে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, তাহলে খালেদা জিয়া অনেক বেশি জনপ্রিয় হবেন এবং তাঁরা জেলে থেকে নির্বাচন করার আবেগকে কাজে লাগিয়ে বিএনপি নির্বাচনে জোয়ার তুলতে পারবেন। কিন্তু এখন আপিল বিভাগের আদেশে খালেদা জিয়ার নির্বাচন করার সম্ভাবনা নেই। এমতাবস্থায় ক্ষত-বিক্ষত ও দ্বিধাবিভক্ত বিএনপি নিয়ে যাওয়া উচিৎ নয় বলেই দলের এই সিনিয়র নেতারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এইসব সিনিয়র নেতাদের বিএনপিকে নির্বাচন থেকে সরে আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। বিএনপির তৃণমূলের একজন নেতা বলেছেন, ‘বর্তমান অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়ার কোানো মানে হয় না। বর্তমান অবস্থাতো ২০১৪ সালের নির্বাচনের চেয়েও খারাপ। ২০১৪ সালে বেগম খালেদা জিয়া ছিল এবং সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবও ছিল। সেই সময় যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তাহলে এখন কেনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে?’ দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের কাছে তৃনমূলের নেতা-কর্মীদের এমন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো আর কোনো যুক্তি অবশিষ্ট নাই। মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণ আন্দোলনের একটা অংশ।’

অবশ্য, কারাগারে থাকা হাবিব-উন-নবী খান সোহেলসহ অনান্য বিএনপি নেতাদের বক্তব্য হচ্ছেন, বেগম খালেদা জিয়া যদি এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে, তাহলে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা কি সরকারকে বৈধতা দেওয়ার নির্বাচন। বিএনপির এই শীর্ষ নেতারা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা, অপরদিকে বিএনপির একটি অংশ যদি নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে অনড় থাকে এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে দলটি একটা অনিবার্য ভাঙনের মুখে পরবে। আজ মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে বিএনপিতে ভাঙনের শব্দই শোনা যাচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭