ইনসাইড পলিটিক্স

কার এজেন্ট ড. কামাল?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 29/11/2018


Thumbnail

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যেন হঠাৎ আলোর ঝলিকানির মতো। হঠাৎ করেই শুরু, হঠাৎ করেই শেষ। ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে যে উত্তেজনা এবং হুলস্থূল তা নির্বাচনের শুরুতেই চুপসে গেল। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল একরাশ আশার ফুলঝুরি ছড়িয়ে। ড. কামাল হোসেন এবং অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা যখন যুক্তফ্রন্ট গঠন করেছিল, তখন থেকেই রাজনীতিতে তৃতীয় ধারার আওয়াজ উঠেছিল। এই দুই প্রবীণ রাজনীতিবিদই রাজনীতিতে শুদ্ধাচারের কথা বলেছিলেন। সুশাসনের কথা বলেছিলেন, ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিলেন। তাঁদের এসব কথায় অনেকেই পরিবর্তনের ইঙ্গিত পেয়েছিলেন। কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের শুরুতেই অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রস্থান জনগণকে একটা ধাক্কা দেয়। জামাতের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না, একথা বলে ড. কামাল হোসেন নতুন ধারার রাজনীতির কথা বলেছিলেন। কিন্তু বিএনপি জামাত ত্যাগের আগেই ড. কামাল হোসেন ঐক্যফ্রন্ট গঠন করলেন। বিএনপি একদিকে ২০ দল এবং অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে সরকার পতনের ঘোষণা দিল। সংলাপ হলো। এখন নির্বাচনের পথে দেশ। ড. কামাল হোসেনের এখন তেমন গুরুত্ব নেই বিএনপিতে। তালে কি ড. কামালের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে? এই প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গে যে প্রশ্নটি উঠেছে তা হলো ড. কামালের হোসেন কার পক্ষে খেললেন সরকার বা আওয়ামী লীগ নাকি বিএনপি? ড. কামালের হঠাৎ উত্থান দুপক্ষকেই কিছু সুবিধা দিয়েছে। ড. কামালের সরব রাজনীতির কারণে সরকারের কি কি লাভ হয়েছে দেখা যাক:

১. সরকার জামাত এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের বাদ দিয়ে একটি সফল সংলাপ করতে পেরেছে। ড. কামাল হোসেন নেতৃত্বে না থাকলে বিএনপির সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগ রাজি হতো না। তাহলে কি সরকারের এজেন্ট হয়েই ড. কামাল হোসেন বিএনপিকে নিয়ে ঐক্য করেছিলেন।

২. একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার চাপ ছিল। নির্দলীয় সরকারের বিএনপির অনড় অবস্থান ছিল। বিএনপির নূন্যতম দাবি ছিল সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করা। কিন্তু ড. কামালের নেতৃত্বের কারণেই বিএনপি কোনো দাবি অর্জন ছাড়াই নির্বাচন করছে। তাহলে কি ড. কামাল হোসেন সরকারের দূত হিসেবে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার মধ্যস্থতা করলেন।

৩. ড. কামালের কারণেই বিএনপি এবং ২০ দল জ্বালাও পোড়াও এর রাজনীতি থেকে নির্বাচনের রাজনীতিতে এলো। এটাও সরকারের পক্ষেই গেছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

আবার ড. কামাল হোসেন বিএনপিকেও কিছু সুবিধা এনে দিয়েছেন। ড. কামাল হোসেনের জন্য বিএনপির কি কি লাভ হয়েছে দেখা যাক:

১. বিএনপির সঙ্গে জামাতের সম্পর্ক নিয়ে দেশে বিদেশে অস্বস্তি এবং আপত্তি ছিল। কিন্তু ড. কামাল এই সম্পর্ককে আড়াল করতে সক্ষম হন। এতে বিএনপি লাভবান হয়েছে।

২. ড. কামাল না থাকলে, বিএনপির জন্য তারেক জিয়া ইস্যু বড় হয়ে থাকতো। তার পুরোনো অপকর্ম সামনে আসতো, কিন্তু ড. কামাল তা ঢেকে দিয়েছেন।

৩. বিএনপির জন্য বেগম জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাওয়া ছিল এক কঠিন সিদ্ধান্ত। ড. কামাল একজন ভাড়াটে নেতা হলেও বিএনপিকে নির্বাচনে যেতে সাহায্য করেছেন।

৪. বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে ড. কামাল বিএনপিকে নতুন ইমেজে উপস্থাপন করেছেন।

কাজেই পাঠক, এসব বিষয় বিবেচনা করে আপনি সিদ্ধান্ত নিন ড. কামাল কার এজেন্ট।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭