ইনসাইড পলিটিক্স

সরকার, সংবিধান, সংসদের সংস্কারই বিএনপির নির্বাচনী অঙ্গীকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 01/12/2018


Thumbnail

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি তাদের ইশতেহারের কাজ প্রায় শেষ করে এনেছে। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা এবং দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহারের প্রধান বৈশিষ্ট্য। বিএনপি তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা করার জন্যে বিভিন্ন কর্মসূচীর ঘোষণা দিবে বলে জানা যায়।

বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার মোটামুটি চূড়ান্ত হয়েছে, আমরা আরও একটু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ইশতেহার ঘোষণা করতে পারবো বলে আশা করছি।’

বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহার প্রধান প্রধান যে বৈশিষ্ট্যগুলোর কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো হলো:

১. নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হলে নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্প্রবর্তন করবে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে গণভোটের আয়োজন করা হবে। 

২. বর্তমান দেশের যে সংবিধান আছে, তাতে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি এবং অসঙ্গতি রয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রথম যে সংসদের অধিবেশন হবে, সেই অধিবেশনে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংবিধান পুনর্লিখনের জন্য আইনগত ভাবে যা যা করা দরকার, তা করা হবে।

৩. বিএনপি ক্ষমতায় আসলে প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতা হ্রাস করা হবে। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করবে।  

৪. বিএনপি আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসলে সংসদীয় কাঠামোর আমূল পরিবর্তন করা হবে। এক কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের পরিবর্তে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ব্যবস্থা চালু করা হবে। নিম্ন কক্ষ বর্তমান যে সংসদ আছে, সেখানে নির্বাচিত  জনপ্রতিনিধিরা থাকবেন এবং উচ্চ কক্ষে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের সমন্বয়ে উচ্চ কক্ষের সভা গঠিত হবে। নিম্ন কক্ষ ও উচ্চ কক্ষের সভার মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা হবে।

৫. বিএনপি ক্ষমতায় এলে দুর্নীতি বন্ধ এবং সুশাসনের লক্ষে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। 

৬. বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রীয় যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলোকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করার জন্য আইনগত ও সাংবিধানিক উদ্যোগ নেওয়া হবে। সরকার এইসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তার এবং হস্তক্ষেপ করবে না।

৭. সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণ বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে। দলীয়করণ মুক্ত প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

৮. সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ন্যায়পাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে এবং অনতি বিলম্বে একজন ন্যায়পাল নিয়োগ দেওয়া হবে। সমাজের সর্বক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার নানা উদ্যোগ ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

৯. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন কালো আইনগুলো বিলোপের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

১০. বিগত ১০ বছরে যে হত্যা ঘুম এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সেগুলোর তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে। 

১১. পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে  বিএনপি তার নির্বাচনী ইশতেহারে বেশ কিছু অঙ্গীকার করেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অঙ্গীকারগুলো হচ্ছে, বিএনপি ক্ষমতায় এলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান যে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক এবং অগ্রগতির ধারা সূচীত হয়েছে, তা অব্যাহত রাখা হবে। সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বাংলাদেশকে স্বাধীন এবং মর্যাদাবান রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। 

১২. রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এটিই হচ্ছে বিএনপির মোটা দাগে নির্বাচনী ইশতেহার। তবে, বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, নির্বাচনী ইশতেহারে আরও কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয় ও কর্মসূচির উল্লেখ থাকবে।

বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭