ইনসাইড পলিটিক্স

হাওলাদার সরানোর নেপথ্যে বাবুল?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 03/12/2018


Thumbnail

জাতীয় পার্টিতে নানা নাটকীয়তায় অবশেষে মহাসচিবের পদ হারালেন এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।দ্বিতীয় বারের মত তিনি মহাসচিবের পদ থেকে পদচ্যুত হলেন। রুহুল আমিন হাওলাদারের পরিবর্তে পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ নতুন মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব দিলেন ক্ষমতাসীন সরকারের আস্থাভাজন স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে। সম্পর্কে এরশাদের ভাগিনা তিনি। রংপুরের গঙ্গাচড়া আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য তিনি।

কয়েকদিন ধরেই জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরে মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভের আগুন জ্বলছিল। মূলত: দলের নেতা-কর্মীরা এজন্য সরাসরি অভিযুক্ত করেন মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে। বিশেষকরে ঢাকা-১ আসনে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে মনোনয়ন না দিয়ে সেখানে জোটের প্রার্থী হিসেবে শিল্পপতি সালমান এফ রহমানকে সমর্থন করে জাতীয় পার্টি। আর এতেই চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে সালমা ইসলামের মিডিয়া হাউজ দৈনিক যুগান্তর এবং যমুনা টেলিভিশন। এই দুটি মিডিয়াতে ধারাবাহিকভাবে এবিএম রুহুল আমিনকে নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। জাতীয় পার্টির বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা বনানীতে পার্টির চেয়ারম্যান এর কার্যালয় তালাবদ্ধ করে দেয় এবং মহাসচিবের গুলশানের বাড়িতেও বিক্ষোভ করে বিক্ষুব্ধরা। সারাদেশের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মনোনয়ন বাণিজ্যে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেন। জাতীয় পার্টির একাধিক সূত্র জানায়, যমুনা গ্রুপের নুরুল ইসলাম বাবুল প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিবের পদ থেকে সরাতে। বিভিন্ন মহলের মাধ্যমেও তিনি বিষয়টি নিয়ে দেনদরবার করেন বলে জানা যায়।

জাপার এক প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ইনসাইডারকে জানান, যমুনা গ্রুপ এর বাবুল জাতীয় পার্টির সবচেয়ে বড় ডোনার। পার্টি চালানোর সিংহভাগ অর্থই তিনি দিয়ে থাকেন। সেখানে তার স্ত্রী যদি জাতীয় পার্টির মনোনয়ন না পায় তাহলে বিষয়টি অবশ্যই তার জন্য প্রেস্টিজ এর। তিনি বলেন, মহাসচিব পরিবর্তনে নুরুল ইসলাম বাবুলের কোনো না কোনো ভাবে হাত থাকতে পারে। তবে সরকারের ইচ্ছাতেই মহাসচিব পরিবর্তন সহজ হয়েছে বলে অভিমত তার।

এদিকে, জাতীয় পার্টি থেকে তড়িঘড়ি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। বিএনপির টিকেটে তিনি ঢাকা-১ আসনে প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিএনপি থেকেও এ বিষয়ে সবুজ সংকেত দেয়া হয় অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে। গতকাল রাতে বিষয়টি গণমাধ্যমে ব্যাপক চাউর হয়ে গেলে এরশাদ নড়েচড়ে বসেন। কথা বলতে চান বাবুলের সঙ্গে। গোপন সূত্র জানায়, নুরুল ইসলাম বাবুল এরশাদকে আল্টিমেটাম দেন, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে পরিবর্তন করলেই তিনি জাপার সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। গতকাল রাতেই এরশাদ সিদ্ধান্ত নেন মহাসচিব পরিবর্তনের। আর কৌশলী এরশাদ শেষ পর্যন্ত দলকে পুনরায় ভাঙ্গনের হাত থেকে বাঁচাতে তারই ভাগ্নে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এলজিইডি প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গাকে নতুন মহাসচিব করার সিদ্ধান্ত নেন।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭