লিভিং ইনসাইড

ভোটে নারী প্রার্থীদের সুবিধা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 04/12/2018


Thumbnail

এবারের নির্বাচনে নারী প্রার্থীর সংখ্যা নেহায়েতই কম নয়। আমাদের স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও বেগম মতিয়া চৌধুরী, ডা. দীপু মনিসহ অসংখ্য নারী প্রার্থী রয়েছে। এছাড়া বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলোতেও অসংখ্য নারী প্রার্থী রয়েছে।

নারী প্রার্থীদের নির্বাচনের প্রচারণা পদ্ধতি পুরুষদের থেকে অবশ্যই আলাদা হয়। তুলনা করতে গেলে সুবিধা বা অসুবিধা দুটোই রয়েছে। আপনি যদি নারী প্রার্থী হন, তবে প্রথমে আপনার অসুবিধা বা সমস্যার কথা যদি ধরি, তাহলে বলতে হবে একজন নারী প্রার্থী পুরুষ প্রার্থীর মতো যখন তখন যেখানে সেখানে প্রচারণায় চলে যেতে পারেন না, তাদের চলাফেরাও ভিন্ন হয়। আমাদের মুসলিম প্রধান দেশে নারীদের অনেক বিষয়ে সীমাবদ্ধতার কথা আমরা সবাই জানি। ভোটারদের সঙ্গে হাত মেলানো বা অন্যান্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বাধা তো আপনার থাকবেই।

এগুলোর বাইরেও নারী প্রার্থী হিসেবে আপনি আলাদা বিশেষ কিছু সুবিধা পাবেন। আপনার কিছু ইতিবাচক অবস্থান থাকার কারণে এই সুবিধাগুলোকে কাজে লাগাতে পারলে নির্বাচন আপনার পক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাংলা ইনসাইডার আপনাকে তেমন কিছু সুবিধার কথাই জানাচ্ছে-

ভোটারদের বেশি কাছাকাছি যাওয়া যায়

প্রচারণায় নামলে ভোটার, জনগণের একেবারে কাছাকাছি চলে যেতে হয়, তাদের বাড়িতে পর্যন্ত যাওয়া লাগে। কিন্তু হুটহাট করে কারো বাড়িতে চলে গেলে সেটা পুরুষ প্রার্থীদের জন্য কিছুটা বিব্রতকর হলেও নারী প্রার্থীদের জন্য সেটা অনেকটা সহজ। তারা যেকোনো সময়ে ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা, মত বিনিময় বা সমস্যার কথাগুলো শুনতে পারেন। এতে প্রাইভেসির ক্ষেত্রে সমস্যা কম হয়।

নারী ভোটারদের সমর্থন পাওয়া যায়

দেশের সর্বশেষ ভোটার তালিকা অনুযায়ী, প্রায় অর্ধেক ভোটারই নারী। নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরেও অনেকক্ষেত্রে তারা এখনো অনেক পিছিয়ে। তাদের মানসিকতা কিছুক্ষেত্রে এখনো আবদ্ধ। নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারীরা সবসময় নারী প্রার্থীদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়ে থাকে। তাদের আসনে দলের থেকে বেশি জরুরি থাকে প্রার্থীটি নারী নাকি পুরুষ সেটি। মোট কথা, নারী প্রার্থীদের প্রতি নারী ভোটারদের আগ্রহ বেশি থাকে। এটা তাদের জন্য বড় একটি সুবিধা।

নারীরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়

আমাদের সমাজে নারীদের বিষয়ে এখনো একটি ধারণা প্রচলিত, সেটা হলো নারীরা সাধারণত দুর্নীতি বা অনিয়ম থেকে দূরে থাকেন। তারা যে প্রতিশ্রুতিগুলো দেন, তা পালনের চেষ্টাও করে। কাজেই একজন নারী প্রার্থীর দুর্নীতিবাজ বা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। ফলে নারী প্রার্থীকে দিয়ে সমাজের উন্নয়ন, বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হবে বলে এলাকার ভোটাররা বিশ্বাস করে।

প্রতিপক্ষজনিত সমস্যাগুলো কম হয়

একই আসনে বিভিন্ন দলের প্রার্থী থাকবে, তাদের মধ্যে অন্তঃকলহ, দলীয় বিভিন্ন কোন্দল হবেই। কিন্তু একটা আসনে যদি নারী প্রার্থীর বিপরীতে পুরুষ প্রার্থী থাকে, তাদের মধ্যে কোনো রেষারেষি হলে সেক্ষেত্রে নারী ভোটাররাই অন্যদের সমর্থন পায়। পুরুষ প্রতিপক্ষ যদি তাকে নির্বাচন আচরণবিধির পরিপন্থী কোনো ভাষায় আক্রমণ করে, তাহলে সেটি নেতিবাচক-ভাবে নেওয়া হয়। আমাদের দেশে এখনো পুরুষের তুলনায় নারীকে কোনো নোংরা সমালোচনা, কটূক্তি, অশ্লীল কোনো কথা বললে সেটি বেশি অগ্রহণযোগ্য হয়। সেই বিবেচনা থেকে একজন নারী প্রার্থী অনেক বড় সুবিধাজনক অবস্থায় থাকে।

পরিবারের ভূমিকা

ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে পারিবারিক আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একটু সহজভাবে বলি। একজন নারী প্রার্থীর নির্বাচনের প্রচারণা এবং যাবতীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গী নারীরাই থাকে বেশি। মানে পুরো দলটিতে নারী সদস্যদের প্রাধান্য থাকে। এই সদস্যরা বাড়িতে তাদের প্রার্থী নিয়ে আলোচনা করলে বড় জনগোষ্ঠীর মধ্যে তার বিষয়ে আলোচনা হয়, সমর্থন তৈরি হয়। ফলে তার প্রচারও বাড়ে।

খরচ কম হয়

একজন পুরুষ প্রার্থীর তুলনায় নারী প্রার্থীর খরচ তুলনামূলক কম হয়। পুরুষরা প্রচারণায় বের হলেই বিশাল জনগণের মধ্যে যেতে হয়। তাদের চা-নাস্তা করানো, মাঝেমাঝে হাতে কিছু টাকাপয়সা দেওয়ার মতো বিষয়ও আছে। কিন্তু নারীদের প্রচারণার পদ্ধতি সেই তুলনায় আলাদা হয়। তাদের অন্তত খরচটা অত বেশি হয়না। তাই এই ক্ষেত্রেও তাদের সুবিধা বেশিই থাকে।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭