লিভিং ইনসাইড

পোস্টার, দেওয়াল লিখন ছাড়াই হোক নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 06/12/2018


Thumbnail

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। চারদিকে মহাসমারোহে চলছে প্রস্তুতি। প্রার্থীরা ব্যস্ত তাদের প্রচারণা নিয়ে। নির্বাচন হবে অথচ চারদিকে পোস্টার বা দেয়াল লিখনে প্রচারণা চলবে না- আমাদের দেশে সেটা সম্ভব না। এগুলো যেন নির্বাচনেরই অন্যতম নিয়মিত অনুসঙ্গ।

কিন্তু খেয়াল করলে দেখবেন, কোনো নির্বাচন এলেই চারদিকে ভুরি ভুরি পোস্টার আর দেয়াললিখনে পুরো এলাকাই যেন আবর্জনার স্তুপে পরিণত হয়। আবর্জনার স্তুপ বলছি কারণ, এমনিতেই আমাদের দেশ মানব কোলাহলে ভরপুর। ছোট্ট একটা দেশে এত মানুষের বাসের ফলে শহর-নগর-গ্রামগুলো যেন বেশিই এলোমেলো থাকে। সেখানে আবার সারাদেশ ছেয়ে যাচ্ছে লেখা আর ছবিতে। এখানে সেখানে ঝুলছে পোস্টার। আবার কারো মন চাইলে সেগুলো ছিড়ে ফেলে যাচ্ছে যত্রতত্র। আবার বিভিন্ন শ্লোগানের দেয়াল লিখনগুলো দেখলেও কখনো সেগুলো অদ্ভুত মনে হয়।

প্রতিটি আসনের প্রার্থীদের বিষয়ে সেই আসনের ভোটাররা এমনিতেই বিস্তারিত জানে। দেয়াল লিখন আর পোস্টারের নামে সেখানে আর নতুন করে জঞ্জাল সৃষ্টি করার প্রয়োজন পড়ে না। উল্টো একই ধরনের জিনিসগুলো দেখতে লোকজনের আরও বিরক্তি তৈরি হয়।

অতিরিক্ত পোস্টারকে পরিবেশবান্ধবও মনে করা হয় না। সহজভাবে বললে, এই যে পোস্টারের কাগজের যে যোগানগুলো, তা আসে গাছ থেকে। সেজন্য শত শত গাছ কেটে ফেলতে হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় কাজে পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলার কোনো দরকার আছে বলে মনে হয়না।

আবার এই পোস্টার বাণিজ্যের পেছনে দেশের বিশাল পরিমাণ একটা বাজেট খরচ হয়। পোস্টার নকশা, ছাপানো, বিলি করা, লাগানোর পেছনে সারাদেশ যে পরিমাণ খরচ হয় তা অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। এমনকি পুরোবিশ্বে এখন পোস্টারের রীতি অনেক কমে গেছে।

প্রচারণা চালানোর জন্য দেয়াল লিখন বা পোস্টারের তেমন কোনো প্রয়োজনই নেই। এতে আপনার এলাকাটা নষ্ট হচ্ছে। এক আসনে একাধিক প্রার্থী থাকে। প্রতিটি প্রার্থীর রংবেরঙের পোস্টার ঝোলানো থাকলে সেটা দেখতে আরও বেশি জঞ্জাল মনে হতে থাকে। একটু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে, পোস্টার বা দেয়াল লিখনের তেমন কোনো কার্যকর ভূমিকাও নির্বাচনে পড়ে না।

এগুলো আসলে কতোটা জরুরি তা নিয়ে ভাববার প্রয়োজন রয়েছে। উপরন্তু এগুলোর ফলে শহর নোংরা হয়, মানুষের মধ্যে বিরক্তি তৈরি হয়, পরিবেশের ক্ষতি করে। এসব বিবেচনাসাপেক্ষে আমরা এমন নির্বাচনের প্রচারণা করতেই পারি যাতে কোনো পোস্টার বা দেয়াল লিখনের কোনো প্রয়োজনই নেই। সবখানে এগুলো প্রচারণায় ব্যবহারে বরং নিরুৎসাহিত করা হয়। তাহলে নির্বাচন সামনে রেখে কেন এই পোস্টার, দেয়াল লিখন নিয়ে আপনি ভাবছেন? কিছু কিছু প্রার্থী যদি এই প্রথা ভেঙে অন্যভাবে প্রচারণাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে, সেটা তো আরও বেশি গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা।

আমরা তো এখন সবদিক থেকেই ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হয়েছে, সেখানে আপনি প্রার্থী হিসেবে প্রযুক্তির সাহায্য নিন। ওয়েব ডিজাইনের মাধ্যমে পোস্টার বানিয়ে সেগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিন। এতে করে আপনি খুব দ্রুত ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। ছোটখাট কোনো ভিডিও বানিয়ে ফেলতে পারেন আপনার পরিচিতির জন্য। সেগুলো সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করুন। দেখবেন সেগুলো পোস্টার, দেয়াল লিখনের চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হবে, আপনার জনপ্রিয়তা বাড়বে। এগুলো নিয়ে সচেতন নাগরিক হিসেবে প্রার্থী হিসেবে আপনাকেও সোচ্চার হতে হবে, অন্যকেও আগ্রহী করে তুলতে হবে।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭