লিভিং ইনসাইড

তৃতীয় লিঙ্গের ভোট

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 07/12/2018


Thumbnail

সকাল হোক বা রাত, ধরুন আপনি শহরের বিশাল জ্যামের মধ্যে গাড়ি বা যেকোনো যানবাহনে বসে আছেন। আশেপাশে প্রচুর হকার দেখবেন। কেউ ফুল, খবরের কাগজ, আমড়া-পেয়ারা বিক্রি করছে, কেউ সাহাড্য চাইছে। এটা প্রতিদিনের ঘটনা। তবে আজকাল খেয়াল করবেন, তৃতীয় লিঙ্গ অর্থাৎ হিজড়ারা এসে আপনার কাছে টাকা চাইছে। এছাড়াও বিভিন্ন পার্ক বা ঘোরাঘুরির জায়গাগুলোতেও তারা হুট করে এসে টাকা চেয়ে বসবে। এরা আমাদের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত, অপছন্দের। কখনোবা ভয়েরও। আশার কথা হলো সাধারণ নাগরিক হিসেবে এরা সম্প্রতি ভোটাধিকার পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগেই এটি সম্ভব হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাদের অনেক সুযোগ-সুবিধার বিষয়েও তিনি যথেষ্ট মনোযোগী।

বাংলাদেশে তৃতীয় লিঙ্গ বা স্থানীয়ভাবে `হিজড়া` হিসেবে পরিচিত মানুষদের লিঙ্গ পরিচয়কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ারও অনেকদিন পরে নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারী বা পুরুষ পরিচয় বহন করেই নথিভুক্ত হতে হয়েছে তাঁদের। তবে এই বছরেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ নিয়ে অগ্রগতির কথা জানা গেল। ২০১৩ সালে হিজড়াদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া সংক্রান্ত নীতিমালা মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন পায়। ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি হিজড়াদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। সম্প্রতি ভোটার তালিকায়  নারী ও পুরুষের পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে আরেকটি পরিচয় অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। আর কমিশনের সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হিজড়ারা তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। নারী ও পুরুষের পাশাপাশি নিবন্ধন ফরমে তৃতীয় লিঙ্গদের জন্যও আলাদা আরেকটি পরিচয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ডটি তাদের নিজস্ব পরিচয় বহন করছে।

নির্বাচনে তারা প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করছে সত্যি। কিন্তু তাদের নিয়ে আলাদা তেমন কোনো হেলদোল চোখে পড়ছে না। প্রার্থীরা নারী আর পুরুষ ভোটারদের আকৃষ্ট করতেই বেশি আগ্রহী বরাবরের মতো। আলাদা করে নারী, পুরুষ, তরুণ, বৃদ্ধ ভোটারদের নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা থাকলেও তৃতীয় লিঙ্গ নিয়ে আলাদা কিছু নেই।

তারা ভোটাধিকার পেলেও সামাজিক মর্যাদা ও অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আলোচনা সমালোচনা নেই। এমনকি এখনো সমাজে তাদের আগের মতোই অচ্ছুত মনে করা হয়। সমাজ তাদেরকে আজ পর্যন্ত একীভূত করতে পারেনি। অথচ তাদের ভোটার করা হয়েছে। তারা ঠিক কোন পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে, সেটাও এখনো ঠিক করা হয়নি। এমনকি কোন আসনে কতোজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে সেই তথ্যও প্রার্থীদের কাছে নেই।

১. এজন্য প্রথমে জেনে নিন আপনার আসনে ঠিক কতোজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে।

২. এরপর তাদের বিষয়ে আলাদাভাবে খোঁজখবর নিন। তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে জানুন।

৩. প্রচারণার সময়ে তাদের প্রতি যে আলাদাভাবে মনোযোগ দিতে হবে, তেমনটা না। চেষ্টা করুন অন্য সবার মতো করে তাদের সঙ্গে ব্যবহার করতে বা আকৃষ্ট করতে।

৪. সমাজে তারা উপেক্ষিত বলে আপনিও তাকে এড়িয়ে যাবেন না। সাধারণভাবে কথা বলুন। আর এটা মনে রাখতে হবে যে তারা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আপনার কাছে তার অনেককিছু চাওয়ার আছে। আপনার চেষ্টা থাকবে তাদের সমঅধিকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করা।

৫. অন্যদেরকে তৃতীয় লিঙ্গের বিষয়ে সচেতন করে তুলবেন। মোট কথা সমাজকে তাদের পাশে দাঁড়াতে উদ্ভুদ্ধ করতে শিখুন। আপনি নির্বাচিত হলে সবসময় তাদের জন্য কাজ করবেন, সেটা তাদের বোঝান।


বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭