নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 07/12/2018
ভোট চাই, ভোট চাই, ভোট চাই। সারাবছর খবর নাই, ভোটের সময় ভোট চাই। স্লোগান মন্দ নয়। তবে এটাও ঠিক, মানুষ জন্মগত ভাবেই সত্যবাদী। মিথ্যার জন্ম হয় পরবর্তী চাহিদার উপর নির্ভর করে।
নেই ঘরে খাই বেশি, কথাটা গ্রাম বাংলায় অতি পরিচিত একটি প্রচলিত উদাহরণ। ঠিক একি ভাবে অর্থনৈতিক ভাবে দরিদ্র এমন সকল দেশেই নির্বাচনী সহিংসতা বেশি। যারা তর্ক করতে আগ্রহী তারা ইতিহাস ঘেটে, জেনে শুনে তর্কযুদ্ধে অবতির্ন হবেন সেটাই প্রত্যাশা।
অর্থনীতি স্বাবলম্বীতা যেখানে নেই, সেখানে অশিক্ষা, কুশিক্ষা, সামাজিক দৈন্যতা, মিথ্যাচার, ক্রোধ, আক্রোশ, লোভ, লালসা সবকিছুতেই পরিপূর্ণ থাকে। বিধায় ক্ষমতার লোভে নেতা যখন ২টি টাকা, সিগারেটের, গাজা, মদ তাড়ি, অবৈধ নারী, একটু সুবিধার আশ্বাস দেয় অমনি হামলে পড়ে মানুষ। সে মরবে কি বাঁচবে সেটা দেখারও সময় থাকে না।
অন্যদেশ নয়, আমি বাংলাদেশের দিকে যদি ১০ বছর পিছিয়ে দেখি তখন চারদিকে মাসের পর মাস শুধু আগুন, হত্যা, রাহাজানি, সন্ত্রাস দেখেছি। যে কোন একটি দল, একজন নেতা ডাক দিলেই এমন ধ্বংসাত্মক কাজে নিয়োজিত হতে দেখেছি হাজার হাজার লাখ লাখ উদীয়মান তাজা প্রাণ। তার একটাই কারণ, সামনে ছুড়ে দেয়া রুটির টুকরা সেই সময়ের জন্য অনেক দামি মনে হয়েছে তাদের কাছে। ২টি টাকা, একটু গাজা অনেক দুষ্প্রাপ্য মনে হয়েছে তাদের কাছে।
বিগত ১০ বছরে সেই সময়ের যে পরিবর্তন হয়েছে সেটা আন্তর্জাতিক বিশ্ব যেমন স্বীকৃতি দিয়েছে, এতোদিন স্বীকার না করলেও সেই বিরোধী সকল দলের নির্বাচনী ইশতেহারে (যদিও প্রকাশিত এখনও হয়নি) প্রতিটি শব্দের ব্যবহারের সাথে মিলিয়ন মিলিয়ন অর্থের সম্পর্ক রয়েছে এটা নিশ্চিত।
দেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি না থাকলে, আজ যে ইশতেহার তারা দেবে সেই ইশতেহার বিগত সময়ে দেবার সাহস তাদের কেন, কারো নিকট ছিলনা।
এখন তারা বলতেই পারে, দেশের সকল বেকারকে বেকারত্ব ভাতা দেয়া হবে, তারা বলতেই পারে একসাথে হাজার হাজার শিল্পকারখানা তৈরি করে সকল বেকারকে চাকরি দেয়া হবে, আজ তারা বলতেই পারে, সবার মাথার উপরে টাকার বস্তা ঝুলিয়ে রাখা হবে। বলতে পারে তার কারণ সেই বলার মতো সাহস বর্তমান বাংলাদেশের অর্থনীতি তাদের দেয়।
আর তাই বর্তমান সময়ে নির্বাচনে সহিংসতা হবার তেমন কোন সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। যেটা হবার সম্ভাবনা চারপাশে শোনা যায়, সত্যি যদি তেমন কিছু হয়, সেটাকে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা হিসাবে ধরে নেয়া যেতে পারে।
সন্দেহাতীত ভাবে বলছি, বাংলাদেশ সামরিক প্রশাসনের যে কোন ক্ষুদ্র অংশ দিয়ে সেটাকে থামিয়ে দেয়া সম্ভব।
আজ যুব সমাজ, আগুন চায় না, সন্ত্রাস চায় না, কারো কথায় লাফ দিয়েও ওঠে না। কারণ ওরা এখন একটি যথার্থ অর্থনীতির মধ্যে দাঁড়িয়ে, যেখানে দাঁড়িয়ে ওরা শ্রম দিতে চায়, মেধা দিতে চায়, ঘাম দিতে চায়। মুক্ত ভাবে সামনের দিকে ছুটতে চায়।
আসন্ন নির্বাচনে কাকে ভোটদিলে এই সমৃদ্ধি আরো বেগবান হবে সেটাও ওরা ভালোভাবেই জানে। দেশের মানুষ ভালোভাবেই জানে।
অতএব মিথ্যার ফুলঝুরি নিয়ে যতোই বাদ্য বাজুক, কোন লাভ হবে না মিথ্যাবাদীদের, প্রতারকদের।
এখন সেই সময় নেই, যে সময়ে দেশ দখল হতো, মাটি দখল হতো। এখন দখল হয় অর্থনীতি। এবারের নির্বাচনে ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশের অর্থনীতি কুক্ষিগত, দখলের নীল নক্সা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে চলেছে। এই দেশের অর্থনীতির দিকে তাকিয়ে বসে আছে ভুখানাংগা প্রায় দেউলিয়া একটি দেশ। ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে যাদের দৌড়ে বেড়াতে দেখা যায় এখন। যারা একদিন বাংলার মানচিত্র কামড়ে ধরেছিলো।
ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবার নামে ধেয়ে আসছে তেমন একটি নীল নক্সার দলীল। আমার বিশ্বাস শেষ অবধি বাঙালী সেই দলীল টুকরো টুকরো করে দেবে।
এরপর পূর্বের সকল ভুল, সকল অন্যায়, সকল অসংগতি, সকল বৈষম্য নিজেরা মিটিয়ে চলবে অগ্রযাত্রার হাত ধরে।
মো: তৈমুর মল্লিক ভূঁইয়া
কলামিস্ট
সাধারণ সম্পাদক
দুর্জয় বাংলা সাহিত্য ও সামাজিক ফাউন্ডেশন
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭