ইনসাইড আর্টিকেল

‘স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতি করা উচিৎ নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/12/2018


Thumbnail

আমাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।  যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেছে বা দেখেনি, সবার কাছেই।  তবে মুক্তিযুদ্ধকে যারা প্রত্যক্ষ করেছে, আর যারা প্রত্যক্ষ করেনি- তাদের আদর্শ অনেকটাই আলাদা।  আমাদের বর্তমান বড় একটা প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধকে দেখেনি।  তাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধ ও তার চেতনা ধারণ নিয়ে আমরা জানতে চেষ্টা করেছি।  এর বাইরে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান ও তালিকা, রাজাকারদের পরিণতি ও রাজনীতিতে আসীন থাকা, মুক্তিযোদ্ধা কোটার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে তরুণরা কি ভাবছে, বিজয়ের মাসে সেগুলো নিয়ে থাকছে বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ আয়োজন ‘বিজয়ের মাসে প্রজন্মের ভাবনা’।

শারমিন সুলতানা মনি

সাবেক শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ, রাবি

স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমরা বরাবরই কৌতূহলী আর উৎসাহী।  আমাদের স্বাধীনতা এসেছে ঠিকই, কিন্তু এখনও আমাদের স্বাধীন সত্ত্বা অর্জনে এখনো অনেক ঘাটতি রয়ে গেছে।

আমার মনে হয় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করাটা অনেক আগেই দরকার ছিল। কারণ সেটা সবাই ই চায়।  আমরা এত যে স্বাধীনতা স্বাধীনতা করে উল্লাস করি, সেই মাটির মুক্তিযোদ্ধারা না থাকলে সেটা আদৌ সম্ভব ছিল না।  এই তালিকা না থাকার কারণেই তারা উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।  আমাদের গ্রামে এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছে যারা কখনোই তালিকাভুক্ত হতে পারেনি বলে সব ধরনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। আমরা তাদের জন্য কিছু করতে পারিনি।  অথচ ভাবতেই অবাক লাগে যে আর কিছু বছর পরে দেশে আর কোনো মুক্তিযোদ্ধাই থাকবে না।  তারা এমন অবহেলা নিয়েই চলে যাবে।

যেদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের পর্যাপ্ত সম্মান করা হয়নি, সেখানে আবার স্বাধীনতাবিরোধীদের দেখা যায় বুক ফুলিয়ে রাজনীতি করতে।  এটা দেখে মাথা নিচু হয়ে যায়, মনে হয় আমরা হেরে গেছি বোধহয়।  এদের বিরুদ্ধে যদি নাই দাঁড়াতে পারলাম, তাহলে দেশের ভালো চাইলাম কি করে? এমনো অনেক রাজাকারদের চিনি যারা আবার নিজেদের দাবি করে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে।  এর থেকে বড় প্রহসন আর হতে পারে না।  এজন্য মনে হয় রাজাকারদের তালিকাটা হওয়া দরকার ছিল। এতে করে অন্তত তাদের অপরাধী মুখটা বার বার দেখতে হতো না।

আমরা তো নিজেদের আর দেশের স্মৃতি রক্ষার্থে কতো স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করেছি।  সেগুলোতে নিয়মিত শ্রদ্ধাও জানাই।  তেমন যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি ঘৃণা বাঁচিয়ে রাখতে ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ তৈরির পরিকল্পনাও যথেষ্ট সময়োপযোগী।  আর ঘৃণাটা আসতে হবে মন থেকে।  মোট কথা তাদের সমাজ থেকে প্রত্যাখান করতে হবে।  যাতে তারা নতুন করে আর দেশের কোনো ক্ষতি করতে না পারে, নিজের সত্যকে লুকিয়ে রেখে মিথ্যা দেশপ্রেমের অভিনয় করতে না পারে।

স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতি করা উচিৎ নয়।  স্বাধীনতা হলো একটি রাষ্ট্রের নতুন জন্ম।  আর রাজনীতি হলো সেই রাষ্ট্র পরিচালনার সার্বিক কলাকৌশল। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধীরা তো এই নতুন রাষ্ট্রের জন্মটাকেই অস্বীকার করে। তাই এই স্বাধীন রাজনীতি তাদের জন্য নয়। 

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৭ বছর চলছে। এতবছর পর স্বাধীন জাতির প্রতিটি মানুষের মাথা তুলে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে।  মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধীকারীরাও এক্ষেত্রে সমান অংশীদার।  তাই আলাদা করে কোটা সুবিধা দিয়ে তাদের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর (যাদের উদ্দেশ্যে কোটা প্রয়োগ করা হয়) আওতায় আনা উচিৎ নয় বলে মনে করি না।  কোটা থাকুক, তবে স্বল্প পরিমাণে।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/এমআর



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭