ইনসাইড আর্টিকেল

ভোট ও বাকযুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে মওদুদ-কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/12/2018


Thumbnail

দুই প্রতিপক্ষের দুই হেভিওয়েট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। নোয়াখালী জেলার এই দুই নেতার বাকযুদ্ধ দেখে বুধবার খুঁজলাম তাদের ভোটের লড়াইয়ের তথ্য-উপাত্ত। পঞ্চম থেকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দু’জনই দুবার করে একই এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। ভোটযুদ্ধে দুজনই সমানে সমান। ১৯৯১ সালের আগে অবশ্য মওদুদ আহমেদ ১৯৭৯ সালে বিএনপি এবং ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। এই দুই নির্বাচনে এখানে প্রার্থী ছিলেন না ওবায়দুল কাদের।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ গত কয়েকদিন ছিলেন নিজেদের নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী-৫ আসনে। জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার একটি পৌরসভা, ৮টি ইউনিয়ন, সদর উপজেলার ২টি ইউনিয়ন ও কবিরহাট উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই আসনটিতে বরাবরই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে ।

বুধবার গণমাধ্যমে উচ্চকিত কণ্ঠ শোনা গেলো মওদুদ আহমেদ এবং ওবায়দুল কাদেরের। নিজেদের নির্বাচনী এলাকার কয়েকদিনের সফর শেষে ঢাকায় এসে ওবায়দুল কাদের বলেছেন বিএনপির মিথ্যাচার সফল হবে না। আওয়ামী লীগের উন্নয়ন দেখেই নৌকা মার্কায় ভোট দিবে জনগণ। তিনি আরো বলেন বিএনপির পক্ষে গণজোয়ার নয় , এখন তাদের গণভাটা চলছে। এর পাল্টা জবাবে বিএনপি আমলের আইনমন্ত্রী এবং জাতীয় পার্টির আমলের প্রধানমন্ত্রী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মওদুদ আহমেদ বলেছেন ভোটের মাঠে টিকতে হলে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করা ছাড়া উপায় নাই। নিজ এলাকার পরিবেশ উল্লেখ করে তিনি মন্তব্য করেছেন নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর সারাদেশের অবস্থা দেখে শেষ পর্যন্ত বিএনপি ভোটে থাকবে কি না, তা নিয়ে দ্বিতীয় চিন্তার সময় এসেছে।

দেশের রাজনীতির দুই প্রভাবশালী নেতা মোট আগামী ৩০ ডিসেম্বরের ভোটের আগেই চারবার পরস্পরের বিরুদ্ধে ভোটের লড়াই করেছেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। ১৯৯১ সালে নোয়াখালী-৫ আসনে জাতীয় পার্টির প্রাথী হিসেবে মওদুদ আহমেদ আওয়ামী লীগের ওবায়দুল কাদেরকে পরাজিত করেছিলেন ৩ হাজার ৫৩১ ভোটে। ঐ নির্বাচনে মওদুদ আহমেদ লাঙ্গল মার্কা নিয়ে পেয়েছিলেন ৩১ হাজার ৪৪৮ ভোট পেয়েছিলেন । নৌকার প্রার্থী ওবায়দুল কাদের পেয়েছিলেন ২৭ হাজার ৯১৭ ভোট। এই আসনে সেবার বিএনপির প্রার্থী এডভোকেট জাকির হোসেন পেয়েছিলেন ১৫ হাজার ৪৭ ভোট। ১৯৯৬ সালে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে ১১ হাজার ৫৩৬ ভোটে পরাজিত করেছিলেন ওবায়দুল কাদের। প্রথমবার সাংসদ হয়ে তিনি যুব ও ক্রীড়া এবং সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ভোটের আগেই জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে ফিরে আসেন মওদুদ আহমেদ। নির্বাচনে তিনি ওবায়দুল কাদেরকে পরাজিত করেন ৩৮ হাজার ৬০৬ ভোটে। এই আসনে সেবার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী নেতা একরামুল হক চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পেয়েছিলেন ৪২ হাজার ৩৮ ভোট। মওদুদ আহমেদ ও ওবায়দুল কাদেরের ভোট ছিল যথাক্রমে ৮৪ হাজার ৫৭৮ এবং ৪৫ হাজার ৯৭২। বিদ্রোহী আওয়ামী লীগ নেতা একনামুল হক চৌধুরী অবশ্য ২০০৮ সালের নির্বাচনে দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে পাশের আসন নোয়াখালী-৪ থেকে জয়ী হয়েছিলেন। ২০১৪ এবং এবারও তিনি ঐ আসনের প্রার্থী। আর ২০০৮ সালের নির্বাচনে ওবায়দুল কাদের মওদুদ আহমেদকে মাত্র ১ হাজার ৩৭১ ভোটে পরাজিত করেছিলেন। দুইজনের প্রাপ্ত ভোট ছিল নৌকা মার্কায় ১ লাখ ১২ হাজার ৫৭৫ এবং ধানের শীষের ভোট ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ২০৪টি। এবারও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাষ পাওয়া যাচ্ছে । যদিও ভোট গ্রহনের বাকি এখনো ১৭ দিন।

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭