ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 16/12/2018


Thumbnail

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকী আছে ঠিক দু’সপ্তাহ। কিন্তু এরকম সময় যেরকম নির্বাচনী প্রচারণায় উত্তাল থাকে দেশ, এবার তেমনটি নেই। ৯১ সাল থেকে বাংলাদেশের নির্বাচন মানেই দুই নেত্রীর বিরামহীন প্রচারণা। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে তাঁদের ছুটে চলা। কিন্তু এবার একজন জেলে। অন্যজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শুধু তাঁর নির্বাচনী এলাকায় সফর করেছেন। জাতীয়ভাবে নির্বাচনী প্রচারণা বলে এখনো কিছু নেই। আসনভিত্তিক প্রচারণা হচ্ছে সেটাও সংঘাতময়। তাহলে কি নির্বাচন নিয়ে এখনো শংসয় রয়েছে? এখনো কি নির্বাচন বাঞ্চালের প্রচেষ্টা সক্রিয়? এরকম প্রশ্ন কান পাতলেই শোনা যায়। সাধারণ মানুষের মধ্যেও উৎসাহ এবং উদ্দীপনার চেয়ে ভয় এবং উৎকণ্ঠাই বেশী। কান পাতলেই শোনা যায়, শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হবে তো?

যদিও আওয়ামী লীগের নেতারা স্পষ্ট করেই বলছেন, ‘নির্বাচন বানচালের কোন ষড়যন্ত্রই সফল হতে দেওয়া হবে না।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি-জামাত-ঐক্যফ্রন্ট নিশ্চিত ভরাডুবি জেনে এখন পালাবার পথ খুঁজছে। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু দেশবাসী এখন ভোট উৎসবে সামিল হয়েছে। তাদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না।’ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্বাচনী প্রচারণা এবার কম কেন? জিজ্ঞেস করা হলে ওবায়দুল কাদের পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কই কম দেখলেন? গত এক বছর ধরে তিনি সারাদেশ চষে বেড়িয়েছেন। এখন প্রার্থীরা প্রচার করছেন। নেত্রী আরও কয়েকটি স্থানে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবেন।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নেত্রীর নিরাপত্তা এবং নির্বাচনী আচরণ বিধির কারণে আমরা তাঁর প্রচারণা একটু সীমিত করেছি। কিন্তু তিনি সার্বক্ষণিক ভাবেই নির্বাচনের প্রচারণাতেই আছেন।’

নির্বাচনী প্রচারণায় কেন্দ্রীয় উদ্যোগ নেই কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের নেত্রী জেলে। নেতারা পলাতক অথবা জেলে। এরকম অবস্থায় কৌশলগতভাবে আমরা কেন্দ্রীয় প্রচারণা কম করছি। তবে জতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলগতভাবে আমরা বেশ কিছু কর্মসূচী গ্রহণ করছি।’ নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘প্রচারণা করবো কি? যেখানেই প্রার্থীরা প্রচারণা করছে, সেখানেই তাদের উপর হামলা করা হচ্ছে। আমাদের মাঠে থাকাই কঠিন হয়ে পড়ছে।‘

দেশের তৃতীয় বৃহত্তম দল জাতীয় পার্টিও নির্বাচনী প্রচারণায় নেই। দলের চেয়ারম্যান রহস্যজনকভাবে সিঙ্গাপুরে। কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদও ঘরে নিজেকে আটকে রেখেছেন।

নির্বাচনের মাঠে দুএকটি নির্বাচনী এলাকা ছাড়া কোথাও জাতীয় পার্টির কোনো প্রচারণা চোখে পড়ছে না। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ার জি এম কাদের নিজেও এটা স্বীকার করেছেন। বলেছেন, ‘দলের চেয়ারম্যান অসুস্থ হওয়ার কারণেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।’ তবে তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টি যাদের প্রার্থী করেছে তাঁরা জনপ্রিয় এবং নিজেরাই প্রচারণায় সক্ষম।’

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০০৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়েছিল ৯ ডিসেম্বর থেকে। প্রথম ৫ দিনের প্রচারণায় আওয়ামী লীগ সভাপতি মোট ৭৩টি জনসভা এবং পথসভা করেছিলেন। ৫ দিনে তিনি সিলেট, গোপালগঞ্জ ফরিদপুর এবং ঢাকায় প্রচারণা করেছিলেন। এবার ৫ দিনে আওয়ামী লীগ সভাপতি মাত্র ৭টি নির্বাচনী প্রচারণা, জনসভা, পথসভায় অংশ নিয়েছেন। গোপালগঞ্জ, ফরিদপুরে  তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা এবং সিলেটে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি তাঁদের দলের চেয়ারপারসনের নেতৃত্বে ৮১টি জনসভায় বক্তব্য রাখে। সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে বেগম জিয়া ফেনী, লক্ষীপুর নোয়াখালীতে নির্বাচনী প্রচারণা করেছিলেন। নির্বাচন নিয়ে কি এবার তাহলে কোন অনিশ্চয়তা আছে?

বাংলা ইনসাইডার/এমআর



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭