ইনসাইড পলিটিক্স

ডেটলাইন ২৩ ডিসেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/12/2018


Thumbnail

দেশের রাজনীতিতে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পরেছে। নির্বাচন উপলক্ষে আজ দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আলাদাভাবে তাদের ইশতেহার ঘোষণা করেছে। আজকের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার মধ্যে দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চূড়ান্ত পর্যায় উপনীত হল। এখন ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহনের জন্যে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কিন্তু বিরোধী দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে নির্বাচনের জন্য যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দরকার, তা এখনো তৈরি হয়নি। বিরোধী দল এখনও অভিযোগ করছে, প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের উপর গ্রেপ্তার এবং নির্যাতন করছে। এরপরেও ড. কামাল গতকাল বলেছেন কোন অবস্থাতেই তাঁরা নির্বাচনের মাঠ ছাড়বেন না, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না। গতকাল নির্বাচন কমিশন থেকে বের হয়ে ড. কামাল হোসেন আরও বলেন, প্রয়োজনে আমার লাশ ভোট কেন্দ্রে যাবে, তাও ভোট থেকে সরে দাঁড়াবো না। এমন অবস্থায় বিরোধী দল কতক্ষণ নির্বাচনে থাকবে, তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন আছে, তেমনি বিরোধী দলের মধ্যে থেকে এমন আশাবাদ শোনা যাচ্ছে যে ২৩ ডিসেম্বরের পর নির্বাচনের পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন হবে। তবে কি নাটকীয় পরিবর্তন হবে সেই বিষয়ে বিএনপির কেউ মুখ খুলছেন না।

অপরদিকে আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে বলে জানা গেছে, নির্বাচনে ভোটের লড়াই এখনও শেষ হয়ে যায়নি। ভোটগ্রহণের আগের শেষ ৭দিনের পরিস্থিতিই হল আসল সময়, সেই সময়ের দিকে নজর রাখতে হবে। ২৩ ডিসেম্বর ভোটের আগের শেষ সপ্তাহ শুরু। ২৪ ডিসেম্বর থেকে সারা দেশে সেনা মোতায়েন করার কথা রয়েছে। সেনাবাহিনী স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছেন,  সেনাবাহিনী স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করলেও, ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তায় গ্রেপ্তার করতে পারবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২৩ ডিসেম্বরের পর নির্বাচনের পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে এবং সেই আশাতেই বিএনপি এখনো বলছে তাঁরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবে না, নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকবে। বিএনপি ২৩ ডিসেম্বরকে ঘিরে আশার আলো দেখছে। কি ঘটতে পারে ২৩ ডিসেম্বর এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যে কথা গুলো বলছেন, সেগুলো হলো:

১.  ২৩ ডিসেম্বরের পরের দিন ২৪ ডিসেম্বর সেনাবাহিনী মাঠে নামলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কথিত পক্ষপাতের অভিযোগ কমে যেতে পারে। সেনাবাহিনী নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করলে বিরোধী দল নির্বাচনে প্রচারণার সুযোগ পেতে পারে। তখন যদি বিরোধী দলের উপর দমন নিপীড়ন বন্ধ হয়, বিরোধী দলের ভাষায় নির্বাচন তাদের অনুকূলে চলে আসবে।

২. আওয়ামী লীগ মনে করছে যে, সেনাবাহিনী যখন মাঠে নামবে, তখন বিএনপি জামাত চক্রের নির্বাচন বানচালের একটা ষড়যন্ত্র রয়েছে। শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে নির্বাচন বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার একটা কৌশল বিএনপি-জামাত জোটের আছে। সেই জন্যেই সেনাবাহিনী আগে নামানো হচ্ছে। ২৪ ডিসেম্বর সেনাবাহিনী মাঠে নামলে, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং নির্বাচন বানচালের মত এমন কোন কর্মসূচি বিএনপি জামাত জোট নিতে পারবে না। ফলে নির্বাচন নিয়ে এখনো যে সংশয় এবং অনিশ্চয়তা আছে তা দূর হবে।

৩. প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গায় এখনো ঘাপটি মেরে সরকার বিরোধী বিএনপি-জামাতপন্থী লোকজন রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন যদি এইসব বিএনপি- জামাতপন্থী লোকজন তাদের স্বরূপ উন্মোচন করে তাহলে নির্বাচনের আগে তাঁরা সরকারের চক্ষুশূল হতে পারে। সেই কারণে তাঁরা অপেক্ষা করছে শেষ সপ্তাহে তাঁরা মরণ কামড় দিতে পারে। বিএনপি-জামাতপন্থী এইসব লোকের মরণ কামড় নির্বাচনে বিএনপির জন্য ইতিবাচক ফলাফল আনবে বলে অনেকে মনে করছে।

৪. ২৪ ডিসেম্বর সেনাবাহিনী নামার পর বিএনপি যদি দেখে পরিস্থিতি তাদের অনুকূলে নয়, নির্বাচনে তাদের জয় লাভের কোন সম্ভাবনা নেই, তাহলে তারা নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতে পারে। নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে আসন্ন এই নির্বাচনকেও প্রশ্নবিদ্ধ করার একটা পরিকল্পনা বিএনপি করতে পারে। 

৫. নির্বাচনে যারা ভোটের মূল নায়ক, বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় সেই জনগণ এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় আছেন। বাংলাদেশের জনগণ সাধারণত শেষ মুহূর্তে ভোটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কাজেই জনগণের এই সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে ২৩ ডিসেম্বরের পর থেকে এবং তখনি বোঝা যাবে নির্বাচনে ভোটের জোয়ার কোন দলের পক্ষে। নির্বাচনের জোয়ার হোক বা বর্জনের আন্দোলন হোক সেটাও স্পষ্ট হবে ২৩ ডিসেম্বরের পর।

বাংলা ইনসাইডার/আরকে   



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭