ইনসাইড থট

‘মধ্যবর্তী নির্বাচন’ এর আশায় বর্জনের ঘোষণা আসছে!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/12/2018


Thumbnail

সারা দেশে একের পর এক আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা, আগুনের লেলিহান শিখায় জ্বলছে দলীয় কার্যালয়, আততায়ির গুলিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ কর্মী হত্যা করা হচ্ছে। সারা দেশে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় ২০ জনের মত আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের কর্মী হত্যা করা হয়েছে। এসব দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দলীয় কর্মীদের ধৈর্য ধারণের জন্য বলেছেন। তাহলে কারা এসব করছে? আখেরে যাদের লাভ হবে তারাই করবে এটা, সেটা সবার জানা। কিন্তু লাভ কাদের হচ্ছে? অনেকেই এটাকে আওয়ামী যড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করার জন্য জান বাজি করে লেগে পড়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায়, অন্যান্য মাধ্যমেও। আবার অপর পক্ষ বলছে এটা বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের স্বাধীনতাবিরোধী অংশের সাথে ‘ভাইবার মান্নাদের’ যৌথ প্রযোজনার লাশ মাড়িয়ে ক্ষমতা আহরণের জন্য মরণ কামড়ের অংশ বিশেষ মাত্র। তাতে সফল না হলে ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে বিএনপি-জামাত জোট যে জাল ব্যালট পেপার ছাপাচ্ছে। তা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জাল ভোটের নাটক সাজাবে, পাশাপাশি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে’ এমন তথ্য দিয়েছে একটা গোয়েন্দা সুত্র। তারা নির্বাচনকে বিতর্কিত বা নির্বাচন থেকে মুখে মুখে সরে যাবার পথ খুঁজছেন বলেই সারা দেশে আগুন, গুলি, মারামারির আশ্রয় নিচ্ছে। আবার তাঁদের বর্তমান নেতা হুংকার দিয়ে বলছেন, ‘মরে গেলেও নির্বাচনের মাঠ ছাড়বে না’।     

সব ঘটনার বিস্তারিত লিখতে গেলে তা উপন্যাসের আকার নিতে পারে তাই আলোচনার জন্য  কয়েকটি ঘটনার নমুনা তুলে ধরা যাকঃ

-বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব এবং মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে মহাজোটের নৌকা মার্কার প্রার্থী মাহী বি চৌধুরীর বাসভবন লক্ষ্য করে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে বাসার জানালার কাঁচ ভেঙে যায়। আটপাড়া গ্রামে আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।

- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। বোমা হামলায় রিপন নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী আহত হয়েছেন।

- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চোরকোল বাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে বুধবার সন্ধ্যার পর দুর্বৃত্তরা বোমা হামলা চালিয়েছে। তারা অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। চেয়ার টেবিল ভাংচুর করে। সেখানে উপস্থিত ৮-১০ জন কর্মীকে মারধোর করে। ৩০টি হাতবোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ।

- মাগুরার শালিখা উপজেলায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা, বোমা বিস্ফোরণ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার সীমাখালি বাজারের ওই কার্যালয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যার এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের তিন কর্মী আহত হয়েছেন।

- মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটার দিকে ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কামাল মজুমদারের প্রচারকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মিরপুরের ৬০ ফিট সড়ক সংলগ্ন মোল্লাপাড়ার প্রচারকেন্দ্রে এই হামলায় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় একজন গুরুতর আহত হলেও কেউ গুলিবিদ্ধ হয়নি। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির। ঢাকা-১৫ আর ঢাকা-১৬ আসনেও এমন ঘটনা ঘটেছে।

- টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।সোমবার দিনগত মধ্যরাতে উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মাটিকাটা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত পার্টি অফিসে এ হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।

- শনিবার ও রবিবার কক্সবাজারের চকরিয়ায় পৃথক দুটি আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা, ভাংচুর, গুলি ও পাঁচজন আহত

- রোববার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ১৪ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

- হোমনায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিমা আহমাদ মেরীর নির্বাচনী অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপির দুই শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ঘাড়মোড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

- ১২ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া-১ আসনের আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী বাদশা’র গাড়িবহরে হামলায় দুটি মোটরসাইকেলে আগুন, ২০ নেতাকর্মী আহত হয়।

উপরের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে বিএনপি বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন না করে প্রশ্নবিদ্ধ করার উপায় খুঁজছে। তারা পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করে জেলে যাচ্ছে, পুলিশকে উস্কে দিচ্ছে। কিছু খারাপ লোক আর প্রশাসনের কিছু অসৎ মানুষ এর সুযোগ নিচ্ছে। কারাগারে থেকে ভোটে অংশ নেওয়া ১১ প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপি যে সব নেতা, তাঁদের অধিকাংশই আগে থেকে জেলে ছিলেন, ২/৩ জন গায়ে পড়ে ঝগড়া মানে বোমাবাজি করে আটক হয়েছেন যাদের নাম আছে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি মদদদাতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ৪৭ জন ধানের শীষ প্রার্থীর তালিকায়।  

ফেসবুক বন্ধু সাব্বির খান বলেছেন, অত্যন্ত সুকৌশলে এরই মধ্যে বিএনপি ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন বয়কট করেছে। বিএনপি সারাদেশে তাদের তৃতীয় বা চতুর্থ স্তরের ভূয়াদের ধানের শীষে মনোনয়ন দিয়ে কি পরোক্ষভাবে নির্বাচন বয়কট করে বসে আছে না? তারা কি নির্বাচনে ফাইট দেয়ার জন্য বা জেতার জন্য দেশের কোথাও এতটুকু কাজ করছে? প্রতিটা আসনে নির্বাচনের নামে তারা যা করছে, তা শুধুই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কাজ ছাড়া ভিন্ন কিছু নয়। একাজটি এমন কি খোদ নির্বাচন কমিশনের ভিতরএ বসে বিএনপির এক বড় নেতার শশুর ও বিএনপি মনোনীত নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারও করে যাচ্ছেন অত্যন্ত নির্বিঘ্নে! তাদের উদ্দেশ্য নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে পরবর্তী সরকারের কাছ থেকে `মধ্যবর্তী নির্বাচন` আদায় করা। 

এতে দুটো লাভ তারেক জিয়াগং আর কামাল হোসেনগংদের। `মধ্যবর্তী নির্বাচন` হলে আবার বেশুমার মনোনয়ন বাণিজ্য হবে। আবার পলিটিক্যাল কনসালটেন্সির নামে বিপুল অংকের টাকা পাবেন ড. কামাল বা তাঁর মেয়ে-জামাই। এর ছিটেফোঁটা ভাগ পাবেন বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক এতিম আসম রব, মাহামুদুর রহমান মান্না, কাদের সিদ্দিকীরা তারেক জিয়ার দয়ায় পাওয়া ধানের শীষের প্রতীকের কাগজ বিক্রি করে। তবে ড. কামাল হোসেনের শারিরিক ও মানসিক যে অবস্থা তাতে তাঁর ‘পলিটিক্যাল কনসালটেন্সির পেমেন্ট তারেক জিয়া আর জামায়াতের কাছ থেকে’ হয়ে গিয়ে থাকলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বিলেতে পাড়ি দেওয়াও অসম্বব নয়। বৃহস্পতিবার বিকেলের সংবাদ সম্মেলন স্থগিত হয়েছে অসুস্থতার কথা বলে, শুক্রবার বিকেলে কী হয় তা দেখার অপেক্ষায় সবাই। 

তথ্যঋণঃ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল, অন্যান্য  

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭