ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনে জাপা-জামাত ফ্যাক্টর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 24/12/2018


Thumbnail

জামাত এবং জাতীয় পার্টি কখনো নিজেরা ক্ষমতায় আসতে পারে না। তবে আওয়ামী লীগ বা বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি এবং জামাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, অতীতের নির্বাচনে যারা জয়ী হয়েছে তাদের পেছনে হয় জাতীয় পার্টি নয়তো জামাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে দেখা গেছে, জামাত বিএনপিকে সমর্থন দিয়েছিল। সংসদে জামাতের সহযোগিতায় বিএনপি ক্ষমতায় গিয়েছিল। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামীগ ক্ষমতায় গিয়েছিল জাতীয় পার্টির সহযোগিতায়। ২০০১ সালে বিএনপি এবং জামাত জোট গঠন করে, বিএনপি এবং জামাতের সমঝোতার ফলেই ওই নির্বাচনে বিএনপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি সম্মিলীতভাবে মহাজোট গঠন করে। এবং এই মহাজোটের ফলেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়ী হয়। এবার নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি মহাজোটের সঙ্গে রয়েছে। অন্যদিকে জামাত ২০ দলীয় জোট তথা বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে রয়েছে। এবার নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এবং জামাতের ভূমিকা পরস্পরের বিরুদ্ধে। জাতীয় পার্টি মহাজোটে থাকলেও ১২৯ টি আসনে জাতীয় পার্টি স্বতন্ত্র ও উম্মুক্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এই ১২৯ টি আসনের মধ্যে ৫৮ টি আসনের নির্বাচনে যদি জাতীয় পার্টির প্রার্থী থাকে। তাহলে আওয়ামী লীগ বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। তারচেয়ে বড় কথা হলো জাতীয় পার্টি নির্বাচনে নিরুত্তাপ, নিস্ক্রিয় এবং তাদের উল্লেখ করার মত কোন রাজনৈতিক তৎপরতা চোখে পড়ে না। জাতীয় পার্টির প্রধান হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ নির্বাচনের আগে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। দলের অন্যান্য সিনিয়র নেতাদেরও নির্বাচনের মাঠে তেমনভাবে দেখা যাচ্ছে না।

যার ফলে জাতীয় পার্টি এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেই আওয়ামী লীগের পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে যে, জাতীয় পার্টির যেসব প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে দাড়িয়েছেন। তারা কার্যত বিভিন্ন স্থানে বিএনপির প্রার্থীদের পরোক্ষভাবে সমর্থন দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের হয়ে কোথাও তারা নির্বাচনী প্রচারণাতেও অংশ নিচ্ছেন না। জাতীয় পার্টির এ অবস্থান রহস্যজনক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির ভোটগুলো বিএনপি-জামাত- ঐক্যফ্রন্টের ঘরেই যেতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। অন্যদিকে জামাত অনিবন্ধিত হওয়ায় ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছে। এবার নির্বাচনে তাদের কোন প্রতীক নেই। বিএনপি ২২ টি আসনে তাদের ধানের শীষ প্রতীক জামাতকে দিয়েছে। জামাতের সারাদেশে যে ভোটব্যাংক রয়েছে। সে ভোটব্যাকং সক্রিয়ভাবেই বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টকে সমর্থন দিবে বলে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে। এক্ষেত্রে জামাতের যে ভোটগুলো সে ভোট তথা বিএনপি এবং জামাতের জয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।

কাজেই একদিকে জাতীয় পার্টির নিস্ক্রিয়তা তাদের প্রার্থীদের উদাসীনতা এবং বাণিজ্যের অভিযোগ অন্যদিকে জামাতের অবস্থান কি ভূমিকা রাখছে সেটা বোঝা যাবে ৩০ ডিসেম্বর। এবার নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর যে একক শক্তি, সেটা এবার নির্বাচনে প্রমান হবে কিনা তার অপেক্ষা করতে হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭