ইনসাইড গ্রাউন্ড

ক্রীড়াঙ্গনে ২০১৮-তে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 01/01/2019


Thumbnail

সাফল্য ও ব্যর্থতা দিয়ে শেষ হয় ক্রীড়াঙ্গনের ২০১৮ সালের দিনপঞ্জিকা। গেল বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য এসেছে ওয়ানডে ফরম্যাটে- ২০ ম্যাচের ১৩ টিতেই জয়। কিন্তু ব্যর্থতা ছিল টি-২০ ও টেস্টে। নতুন কোচে স্টিভ রোডসের ছত্রচ্ছায়ায় আট টেস্টের জয় এসেছে মাত্র তিনটিতে, ড্র একটি। ১৬ টি-২০ তে বাংলাদেশ জিতেছে চারটিতে। টেস্ট বা টি-২০ কোনটিতেই আশানুরূপ কোন ফল নেই টাইগারদের।

সামনের বছর আইসিসি বিশ্বকাপের মতো বড় ইভেন্ট ছাড়াও দেশে বিদেশে বাংলাদেশকে টানা সিরিজ খেলতে হবে। নিউজিল্যান্ড সফর, আয়ারল্যান্ড সফর তারপর বিশ্বকাপ ক্যাম্পেইন শেষ করে অস্ট্রেলিয়াকে স্বাগত জানাবে টাইগাররা। বছরের শেষ দিকে ভারত ও শ্রীলঙ্কা সফরেরও কথা রয়েছে। নতুন বছরের শুরুতে সফলতার প্রতিশ্রুতি নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

নারী ক্রিকেট দলের এই বছর সাফল্য একটি মাত্র। জুনে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত ছয় জাতির এশিয়া কাপের ফাইনাল ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে ফাইনালে ৩ উইকেটে হারিয়ে নতুন রেকর্ড গড়ে রুমানা-জাহানারারা। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত আইসিসি টি-২০ নারী বিশ্বকাপের ক্যাম্পেইনটা ভালো কাটেনি বাংলাদেশের। এ বছর ২৪টি টি-২০ খেলে ১২টিতে জয় পায় নারী ক্রিকেট দল।

ক্রিকেটে বিশেষত পুরুষ ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্য দীর্ঘদিন ধরে। স্পন্সর, অত্যাধুনিক সুবিধা এবং অর্থনৈতিক দৈনতা না থাকার পরও ক্রিকেটে সামগ্রিক অর্জন খুব একটা ভালো নেই। এমনকি নতুন খেলোয়াড় তৈরির ব্যাপারে খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না বিসিবি। দলভিত্তিক বা জেলাভিত্তিক কোন বড় প্রতিযোগিতার আয়োজন নেই যদিও এই বছর সর্বাধিক সংখ্যক নতুন খেলোয়াড় জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে। পাশাপাশি নারী ক্রিকেট দলের উন্নয়নে সচেষ্ট হতে হবে বোর্ডকে, আয়োজন করতে হবে বিভিন্ন মহিলা ক্রিকেট লিগ। 

ব্যর্থতার ধারা বজায় ছিল বাংলাদেশের ফুটবলেও। নতুন কোচ জিমি ডে’র প্রতিশ্রুতির হিসাব মাঠে পাওয়া যায়নি। ফেডারেশনের সদিচ্ছা বা জেলা ফুটবল অ্যাসোশিয়েশনের অদূরদর্শিতায় ফুটবলকে দীর্ঘ সময় ধরেই অন্ধকারে থাকতে হয়েছে। সম্প্রতি কিছু পেশাদারিত্ব লিগ ও বয়সভিত্তিক প্রতীযোগিতা আয়োজনে ব্রতী হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কিন্তু গত বছর সেখান থেকে চোখে পড়ার মতো কোন অর্জন ছিল না তাদের।   

গেল বছর পুরুষ ফুটবল দল আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে ৮টি। জিতেছে ৩টি, হেরেছে ৪টি, ড্র করেছে ১টি। বছরের শুরুতে ফিফা র‌্যাঙ্কিং ছিল ১৯৭, আর শেষ করে ১৯২-এ অবস্থান করে। বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশ জাতীয় দল অংশ দেয় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ও বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। কিন্তু ব্যর্থতা এখানেও ছিল।  

অন্যদিকে, আগস্টে ভুটানে মেয়েদের সাফ অ-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনালে ভারতের কাছে ১-০ গোলে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। সেপ্টেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এএফসি অ-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইয়ে বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। অক্টোবরে ভুটানেও সাফল্য আসে, সাফ অ-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের মেয়েরা ফাইনালে ১-০ গোলে হারায় নেপালকে।

বছরের শেষ দিকে মেয়েরা অংশ নেয় মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত টোকিও অলিম্পিক গেমস বাছাইপর্বে। তবে প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি। চার দলের গ্রুপে তাদের সংগ্রহ মাত্র ১ পয়েন্ট।

এ বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ মিয়ানমারে এএফসি অ-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয়পর্ব অনুষ্ঠিত হবে যেখানে বাংলাদেশ অংশ নেবে। মার্চে সাফ মহিলা ফুটবল দলের খেলা রয়েছে কাঠমান্ডুতে। তারপর প্রস্তুতি নেবে অক্টোবরে সাফ অ-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য। এছাড়া মহিলা ও পুরুষ উভয় দলের জন্য ২০১৯ সালের মার্চে হতে যাওয়া দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত এসএ গেমস একটা বড় সুযোগ হতে পারে।

গত বছর হকিতে সব থেকে বড় সাফল্য পায় বাংলাদেশ। এশিয়ান গেমসের গেল আসরে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে জিমি-চয়নরা। এর ফলে আগামী এশিয়ান গেমস হকিতে সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ আছে বাংলাদেশের জন্য। এছাড়া হকিতে কোন বিশেষ অর্জন আসেনি পুরো বছরে।

নারী হকিতে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে ২০১৮ সালে। নতুন করে যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশ নারী হকি দলের এবং প্রথমবারের মতো কোন আন্তর্জাতিক সিরিজে অংশগ্রহণ করে কলকাতা অ্যাথলেটিক ওয়ারিওর্সের বিপক্ষে তিন ম্যাচের দুটিতে জয় পায় বাংলাদেশের প্রমীলারা।

এবছর সব থেকে বড় ব্যর্থতা এশিয়ান গেমসে। ১৪ ডিসিপ্লিনে ১১৭ জন ক্রীড়াবিদ অংশ নিয়েও পদকশূন্য হয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে দেশের ফিরে আসে বাংলাদেশ। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ করে। প্রথম দুই আসরে পদকশূন্য ছিল বাংলাদেশ। তারপর ৩২ বছর পর আবার পদকশূন্য হয়ে দেশে ফিরল বাংলাদেশ। কাবাডি, আর্চারি ও শ্যুটিং এ পদক জয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও শূন্য হাতে ফিরে আসে অ্যাথলেটরা।  

প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও ক্রীড়ায় গত বছর ছাপ রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। পুরুষ ক্রিকেট দল, বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক নারী দলের সাফল্য ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোন অর্জন নেই। ফেডারেশনগুলোর সদিচ্ছা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়। 

বাংলা ইনসাইডার/ডিএম/এমআর

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭