ইনসাইড পলিটিক্স

বিরোধী দল জাতীয় পার্টি: কী লাভ, কী ক্ষতি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 04/01/2019


Thumbnail

একাদশ জাতীয় সংসদে সরকারের সঙ্গে থাকছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি। তারা থাকছে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায়। মন্ত্রিসভায় থাকবে না তাদের কোন অংশিদারিত্ব। দশম জাতীয় সংসদেও তারা বিরোধী দলের ভূমিকায় ছিলো। আবার ক্ষমতা-পদ-অর্থের মোহ থেকেও বের হতে পারেনি। তাই সরকারের সঙ্গেও ছিলো রওশন এরশাদের জাতীয় পার্টি।

২০১৪ থেকে ২০১৮, এই ৫ বছরে কার্যত অকার্যকর একটি দলেই পরিণত হয়েছিল দলটি। তারা না পেরেছে সরকারী দলে থেকে প্রভাব খাটাতে না পেরেছে বিরোধী দলে থেকে সরকারে উপর চাপ প্রয়োগ করতে। অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের ভাষায় তারা ছিল ‘গৃহপালিত’ বিরোধী দল।

সংসদীয় কার্যপ্রণালী বিধিতে বিরোধী দলের যে সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যে, সংসদে সরকারের বাইরে যে সর্ববৃহৎ দল সরকারের বিরোধিতা করবে, সেটিই বিরোধী দল। প্রথম কথা হলো সরকারের বাইরে থাকতে হবে। এর ফলে জাতীয় পার্টি থেকে ২২ জন প্রার্থী সাংসদ নির্বাচিত হয়েছে তাদেরকে মন্ত্রিত্বের উচ্চাকাঙ্ক্ষা থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে। প্রত্যেক রাজনীতিকেরই ইচ্ছা থাকে মন্ত্রিত্বের স্বাদ নেওয়া। ক্ষমতা ভোগ করা। দশম জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ৩ জন মন্ত্রী পুরো পাঁচ বছরই দায়িত্ব পালন করেছেন৷ দলের প্রধান এরশাদ ছিলেন মন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত৷ কিন্তু এবার তাদের সেই সুযোগ আর থাকছে না।

তবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দলের ভূমিকা সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাদের ভূমিকা অতীব তাৎপর্যপূর্ণ। বিরোধী দলের গঠনমূলক সমালোচনা রাষ্ট্রের জনগণকে দিতে পারে সুন্দর এক শাসন এবং সেবক সরকার। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী সরকারের কাছে যৌক্তিক দাবি তুলে ধরবে তারা। সেই দাবির বাস্তবায়নে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করাই তাদের মূল কাজ। আন্দোলনে, সংগ্রামে জনগণ বিরোধী দলের প্রতিপক্ষ হতে পারে না। সাধারণ জনতাকে সঙ্গে নিয়েই, তাদের স্বার্থেই কাজ করতে হবে।

জাতীয় পার্টির সামনে সুযোগ এসেছে সেই কাজটি করার। আগামী ৫ বছর যদি তারা কার্যকর বিরোধী দল হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে তাহলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদেরকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করাতে পারবে।

তবে ২০১৪ সালে পরগাছার মতো থাকলেও একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দলে থেকে নীতির জায়গায় শক্ত হয়ে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ জাতীয় পার্টির সামনে। টালমাটাল অবস্থায় থাকা বিএনপির জায়গা দখল করে নিতে পারে তারা। সারাদেশে যেসব জেলায় জাতীয় পার্টি আছে সেসব জেলায় নতুন করে কাউন্সিল করে দলকে ঢেলে সাজানোর সুযোগ তাদের সামনে। যেসব জায়গায় জাতীয় পার্টি নেই সেখানে জাতীয় পার্টি সংগঠিত করবে। জাতীয় বা স্থানীয় পর্যায়ের আলোচনাযোগ্য সমস্যা তারা সংসদে উত্থাপন করবে। সরকারের সঙ্গে তর্কে জড়াবে। দরকার হলে ওয়াকআউট করবে। অর্থাৎ সত্যিকারের বিরোধী দল হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করে আগামী দ্বাদশ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবে তারা। তখন অন্য কোন দলের ‘হেল্পিং হ্যান্ড’ নং বরং শক্তিশালী দল হিসেবে ৩০০ আসনেই সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সক্ষমতা অর্জন করার সুযোগ তাদের সামনে। সামনে থাকা এই সুবর্ণ সুযোগ কি কাজে লাগাতে পারবে বারবার রং পাল্টাতে থাকা এরশাদের জাতীয় পার্টি?

 

বাংলা ইনসাইডার/এমআর

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭