ইনসাইড পলিটিক্স

কারচুপির অভিযোগে সায় নেই কূটনীতিকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 07/01/2019


Thumbnail

বিএনপি বলছে, নির্বাচনে নজীর বিহীন কারচুপি হয়েছে। ব্যালট বাক্স ভরানো হয়েছে সীল মেরে। কিন্তু এর স্বপক্ষে কোন প্রমাণ নেই বিএনপি বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কাছে। গতকাল রোববার বিএনপি বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের কাছে নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন। কিন্তু কূটনীতিকরা বলেন, ঢালাও অভিযোগ নয়, তথ্য প্রমাণ চাই। নির্দিষ্ট করে বলতে হবে, কোন কোন নির্বাচনী এলাকায় কারচুপি হয়েছে। নির্বাচনে কোন কোন কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ভরানো হয়েছে, কিভাবে ভরানো হয়েছে। বিএনপি বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে তাৎক্ষনিক ভাবে এর প্রতিবাদ কি ব্যবস্থা  নেওয়া হয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে দাখিল করা হয়েছে কি না? এসময় জাতীয় ঐক্যফন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, সব কেন্দ্রে একইভাবে কারচুপি করা হয়েছে। কূটনীতিকরা অভিযোগের অনুলিপি চাইলে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ১২টি লিখিত অভিযোগ যেগুলো নির্বাচন কমিশনকে দেয়া হয়েছিল, তার অনুলিপি হস্তান্তর করে কূটনীতিকদের কাছে। দেখা যায় যে, ১২টি আসনের ব্যাপারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন কমিশনে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দিয়েছে, তার ৫টিতেই ঐক্যফ্রন্ট জিতেছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ করে তাই সাড়া পায়নি বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বরং নির্বাচন পর্যবেক্ষন নিয়ে বিভিন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষন গ্রুপের প্রতিবেদন দেখিয়ে কূটনীতিকরা যখন পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, তখন বিব্রত হয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেছেন, ভোট শুরুর আগেই অর্ধেক ব্যালট পেপারে সীল মেরে ব্যালট বাক্সে ভরে দেয়া হয়েছে।

আবার ঐ নেতাই বলেছেন, সকাল ১১ টায় আমাদের সব এজেন্টকে বের করে দেয়। একজন কূটনীতিক প্রশ্ন করেন, এজেন্টরা ভোট কেন্দ্রে কখন গিয়েছিলেন? বিএনপির ঐ নেতা বলেন,‘সকাল ৮ টার আগেই।’ এবার কূটনীতিকরা প্রশ্ন করেন, একজন এজেন্ট পোলিং বুথে গিয়ে প্রথমেই তো দেখবেন ব্যালট পেপার ঠিক আছে কিনা, ব্যালট বাক্স খালি কিনা। ভোটের আগেই যদি ব্যালট পেপারে সীল মেরে ভারানো হয়, তাহলে তো এজেন্টরা সেখানে গেলেই তা বোঝার কথা। এই যুক্তির পর ঐক্যফ্রন্টের নেতারা এ ব্যাপারে নীরব হয়ে যান। কয়েকজন কূটনীতিক সুনির্দিষ্টভাবে একটি ভোট কেন্দ্রে এরকম অভিযোগের প্রামান্য দলিল চাইলে তাও দিতে ব্যার্থ হন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

এ সময় কূটনীতিকরা বলেন, তৃতীয় বিশ্বের দেশে নির্বাচনে ছোট খাট কারচুপি একটা স্বাভাবিক ঘটনা। বাংলাদেশেও প্রতিটি নির্বাচনেই কিছু না কিছু কারচুপি হয়। একজন কূটনীতিক জানতে চান, নির্বাচনে তারা অন্য কোনো ফলাফল প্রত্যাশা করেছিল কিনা। উত্তরে বিএনপির একজন নেতা বলেন, ‘আমরাও জানতাম নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগই জিতবে। কিন্তু যে ব্যবধান হয়েছে তা বাস্তব সম্মত নয়। বৈঠকের শেষ পর্যায়ে কূটনীতিকরা বলেন, তথ্য প্রমাণ ছাড়া একটি দেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বিরোধী, এটা সম্ভব না। তাছাড়া, একটি স্বাধীন দেশকে পুন: নির্বাচনের কোনো নির্দেশনা দেওয়া জাতিসংঘের সনদের পরিপন্থী। কূটনীতিকরা বরং বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান। তারা আশা প্রকাশ করেন যে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংসদে যাবে এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা এগিয়ে নেওযার জন্য কাজ করবে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হযেছে নির্বাচন কারচুপি বিষযে তারা আরও তথ্য প্রমাণ জোগাড় করবে কিন্তু বিএনপির অভিযোগে এখন পর্যন্ত সায় দিতে পারছে না বিদেশী কূটনীতিকরা।


বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭