কালার ইনসাইড

এক যুগ পর খান সাম্রাজ্যের পতন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 08/01/2019


Thumbnail

যুগ যুগ ধরে বলিউডের একটি বিশাল জায়গা দখল করে আছেন শাহরুখ খান আমির খান ও সালমান খান। দর্শকদের কাছে তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা অন্য তারকাদের চেয়ে বহুগুণ বেশী। আর এসব হয়েছে তাঁদের অভিনীত ছবির কারণেই। বহু ব্লকবাস্টার ছবি রয়েছে এই তিন খানের। কিন্তু গত বছর দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। তিন জনের ছবিই বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছে। অথচ তাঁদের ছবি মুক্তি পায় পরপর তিনটি বড় উৎসবে।

গত বছরের জুনে ঈদুল ফিতরকে ঘিরে মুক্তি পায় সালমানের ‘রেস থ্রি’। ছবিটি ভারতে ১৬৬ কোটি ৪০ লাখ রুপি আয় করে বছরের অন্যতম সর্বোচ্চ আয়ের ছবির তকমা পেলেও বাজেটের তুলনায় প্রত্যাশিত ব্যবসা করতে পারেনি। উল্টো শুনতে হয়েছে দর্শকদের দুয়োধ্বনি। এরপর দিওয়ালি উৎসবকে ঘিরে গত ৮ নভেম্বর মুক্তি পায় আমির খানের ‘থাগস অব হিন্দুস্তান’। উদ্বোধনী দিনে রেকর্ড ৫২ কোটি ২৫ লাখ রুপি আয়ের ঝড়ো সূচনা করলেও সপ্তাহ শেষে মাত্র ১৪৫ কোটি ২৯ লাখ রুপি আয় করে ফ্লপ তকমা জোটে প্রায় আড়াইশ কোটি বাজেটের এই ছবির। সর্বশেষ বছরের শেষ চমক হিসেবে ক্রিসমাসে মুক্তি পায় শাহরুখের ‘জিরো’। সপ্তাহ শেষে মাত্র ৯৬ কোটি ৫০ লাখ রুপি আয় করা ‘জিরো’র ফ্লপ দিয়ে যেন দুই বন্ধুকে সঙ্গ দিয়েছেন শাহরুখ।

খানদের এমন অধঃপতনে গোটা বলিউডে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। কানাঘুষা শুরু হয়, এই বুঝি শেষ হলো খানদের দাপট। খানদের বাহাদুরি ভবিষ্যতে থাকবে কি থাকবে না সেটা হয়তো সময়ই বলবে। তবে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে আমির-শাহরুখ-সালমানরা বলিউডে যে সাম্রাজ্য গড়েছেন, সেটার পতন যে গত বছর হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। বলিউডের ইতিহাস ঘাঁটলে এমন পরিসংখ্যানই বেরিয়ে আসে।

দেখা যায়, ২০০৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমির, সালমান ও শাহরুখের ছবি বক্স অফিসে অন্তত সেরা তিনে জায়গা করে নিয়েছে।

২০১৭ সালে সালমানের ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’ বক্স অফিসে ৩৩৯ কোটি ১৬ লাখ রুপি আয় করে ওই বছরের সর্বোচ্চ আয়ের ছবি হিসেবে নির্বাচিত হয়।

২০১৬ সালে আমিরের দঙ্গল ৩৮৭ কোটি ৩৮ লাখ রুপি আয় করে ছিল প্রথম স্থানে। তাঁর ঠিক পরেই সালমানের সুলতান ৩০০ কোটি রুপি আয় করে দ্বিতীয় স্থান দখল করে নেয়।

২০১৫ সালটা ছিল ভাইজান সালমানের দখলে। তাঁর অভিনীত ‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’ ৩২০ কোটি ৩৪ লাখ রুপি আয় করে ছিল তালিকার প্রথম স্থানে এবং ‘প্রেম রতন ধন পায়ো’ ২১০ কোটি ১৬ লাখ রুপি আয় করে ছিল তালিকার দ্বিতীয় স্থানে।

২০১৪ সালে প্রথম স্থানে ছিল আমিরের ‘পিকে’। ছবিটি বক্স অফিসে ৩৪০ কোটি ৮০ লাখ রুপি আয় করে, যা ছিল বলিউডের প্রথম ৩০০ কোটি আয়ের ছবি। এরপর সালমানের ‘কিক’ ২৩১ কোটি ৮৫ লাখ রুপি আয় করে দ্বিতীয় এবং ২০৩ কোটি রুপি আয় করা শাহরুখের ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ তৃতীয় স্থান লাভ করে।

২০১৩ সালে ২৮৪ কোটি ২৭ লাখ রুপি আয় করে বছরের সেরা ছবির তকমা লাভ করে আমির খানের ‘ধুম থ্রি’। আমিরের ঠিক পর পরই ছিল শাহরুখের ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’। বক্স অফিসে ২২৭ কোটি ৩০ লাখ রুপি আয় করে ছবিটি।

২০১২ সালে সালমানের ‘এক থা টাইগার’ ১৯৮ কোটি ৭৮ লাখ রুপি আয় করে। অন্যদিকে ‘দাবাং ২’ ১৫৫ কোটি রুপি আয় করে। দুটি ছবিই বছরের সেরা ছবির তালিকায় ১ ও ২ নম্বর স্থান দখল করে নেয়।

২০১১ সালটিও ছিল সালমানময়। ১৪৮ কোটি ৮৬ লাখ রুপি আয় করা ‘বডিগার্ড’ পায় বছরের সেরা ছবির তকমা। এছাড়া ‘রেডি’ ১১৯ কোটি ৭৮ লাখ রুপি আয় করে তালিকার দ্বিতীয় স্থান দখল করে নেয়। অন্যদিকে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১৪ কোটি ১৯ লাখ রুপি আয় করে শাহরুখের ‘রা ওয়ান’।

২০১০ সালে ১৩৮ কোটি ৮৮ লাখ রুপি আয় করে বছর সেরা ছবি নির্বাচিত হয় সালমানের ‘দাবাং’।

২০০৯ সালে বলিউড প্রথম ২০০ কোটি রুপি আয়ের ছবি দেখতে পায়। আর সেটি ছিল আমিরের ‘থ্রি ইডিয়টস’। ছবিটি ২০২ কোটি ৯৫ লাখ রুপি আয় করে ওই বছরের সেরা ছবি নির্বাচিত হয়।

বলিউডে প্রথম ১০০ কোটি রুপি আয়ের ছবিও আমির খানই উপহার দিয়েছিলেন। ২০১০ সালে আমিরের ‘গজনি’ প্রথম বলিউডে ১১৪ কোটি রুপি আয় করে। ওই একই বছর শাহরুখের ‘রাব নে বানাদে জুড়ি’ ৮৪ কোটি রুপি আয় করে বছরের দ্বিতীয় সেরা ছবি নির্বাচিত হয়।

২০০৭ সালটি ছিল শাহরুখময়। ওই বছর শাহরুখের ‘ওম শান্তি ওম’ ৭৮ কোটি রুপি এবং ‘চাক দে ইন্ডিয়া’ ৬৭ কোটি রুপি আয় করে বছরের সেরা ছবির তালিকায় যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান লাভ করে।

প্রকৃতির নিয়মেই ‘শেষ’ কথাটি পৃথিবীর সব কিছুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সালমান, শাহরুখ, আমিররাও এই চিরন্তন সত্যির বাইরে নন। একদিন তাঁরাও ফুরিয়ে আসবেন। 

বাংলা ইনসাইডার/এইচপি/এমআর 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭