কালার ইনসাইড

সিনেমা নাকি অভিশাপ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 10/01/2019


Thumbnail

অভিনয়শিল্পীদের স্বপ্ন থাকে নিজেকে বড় পর্দায় দেখবেন। কিন্তু বড় পর্দায় সুযোগটাও যে মাঝেমধ্যে শাপে বর হয়ে যায়। আনিসুর রহমান মিলনের কথাই ধরা যাক। ছোট পর্দায় জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন মিলন। প্রশংসিত নাটকে অভিনয় করেছেন। সময়ের আলোচিত অভিনেত্রীদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। ছোট পর্দার জনপ্রিয়তার ঢেউ তাকে বড় পর্দায় নিয়ে যায়। কিন্তু বড় পর্দা তাকে গ্রহণ করেনি। একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করে গেছেন। কিন্তু সেই অর্থে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। তিনি ফের ছোটপর্দায় ব্যস্ত হয়েছেন। কিন্তু ছোটপর্দায় যেমন প্রথম সারির অভিনেতার তালিকায় ছিলেন। অনেকেরই হয়তো মনে আছে, অপূর্ব ও মিলন প্রায় একই সময়ে টেলিভিশন পর্দায় আসেন। রোমান্টিক নাটকে অপূর্ব ও মিলনের একটা প্রতিযোগিতা ছিল। সেটা কী এখন আছে? নিশ্চয়েই পারিশ্রমিক আর ফ্যান-ফলোয়ারারে দিক থেকে অপূর্ব অনেকটা এগিয়ে। মিলন হারালো তার স্থান।

সজলেরও ঠিক একই অবস্থা। একটা সময়ে মনে আছে নিশ্চয়ই? ঈদে সজলের সবচেয়ে বেশি নাটক প্রচারিত হত। একক নাটক মানেই ছিলেন সজল। তার সঙ্গে পেরে উঠতেন না নিশো, অপূর্বরাও। কিন্তু সেই জনপ্রিয়তাকে হঠাৎ তিনি পায়ে ঠেলে সিনেমায় ঝুঁকলেন। কিছুটা দিন ছোট পর্দা থেকে বিরতী নিলেন। নিজেকে তৈরী করলেন বড় পর্দার জন্য। বাণিজ্যিক সিনেমায় নাম লেখালেন। ‘রান আউট’ সিনেমাটি মুক্তি পায়। অতটা ভালো ফল আসলো না। সজল কাজ করলেন বাণিজ্যিক সিনেমার পরিচালক বদিউল আলম খোকনের সঙ্গে। সময়ের আলোচিত মাহিয়া মাহির বিপরীতে অভিনয় করেও সে সিনেমা প্রডিউসার সাহস করে আজঅব্দি মুক্তি দিতে পারেনি। অনেকটা হতাশ হয়ে সজল ছোটপর্দায় ফিরে এলেন। কিন্তু সজল ফেরার পর দেখলেন অন্যচিত্র। তার জায়গায় ছোটপর্দা দখল করে আছে অপূর্ব কিংবা নিশোরা। সজল এখন ছোটপর্দাতেই ব্যস্ত। কিন্তু সেই আগের মতো আর তিনি আলোচনায় নেই।

ইমন- নীরব দুই বন্ধুর একই দশা। অভিনয়ের চেয়ে মডেলিংয়ে পায় জনপ্রিয়তা। তার নিজেকে বড় পর্দায় প্রতিষ্ঠিত করতে চান। এর আগে অবশ্য দীর্ঘদিন ছোটপর্দাতেও অভিনয় করেছেন। কিন্তু বড় পর্দায় দুজনে বেশকিছু সিনেমায় অভিনয় করলেও, কোন সিনেমাতেই যুত করতে পারেননি। সবকিছুই ছিল তাদের। অভিনয় কিংবা নায়কোচিত চেহারার কমতি ছিল না। কিন্তু দর্শক তাদের গ্রহণ করেনি। ফের তারা ছোটপর্দায় নিয়মিত হয়। কিন্তু সেই যে শুরুর ইমন-নীরব। তা আর নেই।

বিদ্যা সিনহা সাহা মিমের সৌন্দর্যের গুনগান সবাই করবে। কিন্তু অভিনয়? সেখানেও যে তিনি প্রশংসা পাননি তা কিন্তু নয়। ছোটপর্দায় ভালোই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন মিম। অন্যান্য লাক্স সুন্দরীদের চেয়ে অভিনয়ে কম মার্ক পাওয়া ছিলেন না। কিন্তু যেই না গেলেন সিনেমায়। আমূল বদলে গেল তার ক্যারিয়ার। এককথায় বললে প্রত্যাশা অনুযায়ী তিনি কিছুই দেখাতে পারেননি। অনেকে বলেন, এ সময়ের সবচেয়ে দুর্ভাগা অভিনেত্রী মিম। একজন নায়িকার সব গুনাগুন থাকা সত্বেও চলচ্চিত্রে নাম করতে পারলেন না। ক্যারিয়ারে কোন ব্যবসাসফল সিনেমা নেই। ধুকে ধুকে চলছে সিনেমার ক্যারিয়ার। মডেলিংয়েই যা আছে ক্যারিয়ার দাড়িয়ে। ছোটপর্দায় হয়তো ফিরতে পারছেন না মানুষ কি বলবে! কিন্তু তিনি যে আছেন উভয় সংকটে। চলচ্চিত্র নির্মাতারা হয়তো তাকে সদ্বব্যাবহার করতে পারেননি।

আয়নাবাজি খ্যাত নায়িকা মাসুমা রহমান নাবিলা। জনপ্রিয় উপস্থাপিকা। উপস্থাপনাতেই পেয়েছেন খ্যাতি। তিনি আয়নাবাজি সিনেমার নায়িকা হলেন। যেই না নায়িকা হলেন উপস্থাপনা বা অন্যান্য ক্ষেত্রের ব্যস্ততা কমালেন। কিন্তু তাতে কি হলো? দ্বিতীয় সিনেমা শুরু করা হলো না। এখন আর তাকে উপস্থাপনাতেও অতটা দেখা যায় না। টেলিভিশন পর্দায় উপস্থানাতে না থাকলেও বিভিন্ন কর্পোরেট প্রগ্রামে নাকি ব্যস্ত থাকেন। তা যাই হোক, উপস্থাপনায় নাবিলার সেই জৌলুস আর নেই। নুসরাত ফারিয়ার দশাও যে খুব ভালো আছে তা নায়। ছোটপর্দার এই উপস্থাপিকার ব্যস্ততা দিনকে দিন কমছে। তার চেয়ে বরং উপস্থাপনাই ভালো ছিলো না?

এই যে ক্যারিয়ারের এপিট ওপিঠ দেখলেন তারকারা। তাতে আবার অনেকের শিক্ষাও হয়েছে। আফরান নিশো বড় পর্দায় অভিনয় করতে চান না। তার এক কথা, আমি অভিনয় করতে চাই। আর সেটা আমার মত করে ছোট পর্দাতেই পারি। আমার মনে হয় না বড় পর্দায় পারবো। সিনেমায় যে অভিনয় করবো না তা নয়। তবে সিনেমায় নয়, ছোট পর্দাতেই আমি ভালো আছি। অপূর্বরও একই কথা, সিনেমার জন্য ট্রাই- ই করি না। আমি হ্যাপি ছোট পর্দায়।


বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭