লিভিং ইনসাইড

হঠাৎ বন্ধুর দেখা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/01/2019


Thumbnail

বাসের জন্য বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে সজীব। ভয় হচ্ছে অফিস ধরতে আবার দেরি না হয়। ঘড়ি দেখছে বার বার, এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। হঠাৎই চোখ পড়লো একটা চেনা মুখের দিকে। কই দেখছি, কীভাবে যেন চেনা, এটা ভাবতে ভাবতে পরক্ষণেই মনে পড়লো এটা তো মুস্তাফিজ! সেই কলেজজীবনের মুস্তাফিজ। বহুদিন পর দেখা। বুকে জড়িয়ে ধরা, কেমন আছিস, এতোদিন পর কোত্থেকে, কতো খুঁজছি তোকে- কথাগুলো হড়বড় করে বলে ফেললো সজীব। তখনই মনে পড়লো অফিসের কথা। দেরি হয়ে যাচ্ছে আবার।

প্রায় ১৩ বছর পর দেখা তাদের, অনেকটা সময়। অনেকভাবে খুঁজেছেন তাকে, পাননি। অফিস যেতে হবে বলে এখনই বিদায় দিয়ে দিতে হবে। তাই বলে কথা শেষ হবেনা, তা কি হয় নাকি। আগে অফিস সামলান। বন্ধুটিকে একবার যখন পেলেন, আর হাতছাড়া করবেন না অবশ্যই। তার সঙ্গে আড্ডা হবে প্রচুর, তবে অফিস সময়ের পরে।

সময়ের বিভিন্ন তাড়নায় সব বন্ধুদের খোঁজ রাখা সম্ভব হয়না। চাইলেও সেটা হয়ে ওঠে না। অনেকের কথা হয়ত ভুলেও যেতে হয়। সামাজিক মাধ্যমের তুলনায় বন্ধু হারানোর ভয় এখন কম। তারপরেও কেউ কেউ হারিয়েই যায়।

আপনার মহাব্যস্ততার মাঝে কোনো একদিন হারিয়ে যাওয়া বন্ধুর সঙ্গে হুটহাট দেখা হয়ে যেতেই পারে। কই আছিস, কেমন আছিস, কতোদিন কথা হয়নি- কতো কথাই তো বলতে মন চাইবে। পুরনো কথা মনে হবে, আপনি নস্টালজিক হয়ে যাবেন। কিন্তু আপনার সময় কম, অফিস যেতে হবে, মিটিং ধরতে হবে, বাসায় ফেরার তাড়া আছে, কোনো প্রোগ্রামে যেত হবে- বন্ধুর সঙ্গে আলাপ শেষ করতে পারলেন না। আপনাকে দৌঁড়াতে হলো তখনই। তাই বলে কথা তো শেষ করছেন না।

তখনকার মতো বিদায় নিন। কিন্তু একেবারে যোগযোগের বাইরে চলে যাবেন না আবার। যোগাযোগ শুরু করার দায়িত্ব তো আপনদারে হাতেই। কীভাবে কী করবেন, সেটা জেনে নিন-

১. আপনার কোনো কার্ড থাকলে সেটা তাকে দিয়ে দিন। তার কার্ড থাকলে সেটাও নিয়ে নিন। আর বাসা এবং অফিসের ফোন নম্বর মনে করে দেওয়া নেওয়া করে নিন। যাতে ব্যস্ততা শেষে দুজনেই দুজনকে খুঁজে নিতে পারেন।

২. এখন তো সামাজিক মাধ্যমের যুগ। এখানেই সবকিছু খুঁজে নেওয়া যায়, সবাইকে চোখের সামনেও রাখা যায়। বন্ধুটির সামনেই সামাজিক মাধ্যমে একে অপরকে খুঁজে নিন। তাকে বন্ধুতালিকায় যোগ করে নিন। এখানে থাকা মানে হারাবার ভয় কম।

৩. কথা চলার মাঝখানেই তাকে মনে করে বাসায় আসতে বলে দিন। আপনার বাসার ঠিকানাটা তাকে ভালো করে বুঝিয়ে দিন। বাসা মানেই মন খুরে সব কথা বলা যাবে। তাকে তার পরিবারসহ ডাকুন। আপনার পরিবারের সদস্যরা তাকে হয়ত একসময় চিনতো। তাই তাকে বাসায় এনে সবাইকে চমকে দিন।

৪. ফোন নম্বর, কার্ড দিয়েই বসে থাকবেন না। যোগাযোগটা রক্ষা করুন। না হলে আবার হারিয়ে যাওযার ভয় থাকছে। হাতে সময় নিয়ে তার সঙ্গে নিজে উদ্যোগ নিয়ে যোগযোগ করুন। দুজনেরই নিশ্চয়ই অনেক কতা জমে আছে, স্মৃতি রোমন্থনের অনেক কিছুই আছে। তাকে নিয়মিত ফোন দিন, মেসেজ করুন।

৫. বন্ধুর সঙ্গে আপনাদের চির পরিচিত, স্মৃতিবিজড়িত কোনো জায়গায় দেখা করুন। তাতে পুরোনো অনেক কথাই মনে পড়বে। ব্যস্ততার শেষে তাকে কোনো কফি শপ, রেস্টুরেন্ট বা পার্কে দেখা করে নিন।

৬. তার পাশাপাশি আপনার অন্য বন্ধুদেরও খোঁজখবর নিন। আপনাদের বন্ধু চক্র, ক্লাসমেট, ঘনিষ্ঠদের খবর দেওয়া নেওয়া করুন। এতে করে অন্য হারিয়ে যাওয়ার বন্ধুদের খোঁজখবরও পেয়ে যাবেন। এতে করে আপনি হয়ত আর কোনো বন্ধুর কাছে থেকেই বিচ্ছিন্ন থাকবেন না।

একটা সময়ে বন্ধু পরম আপন থাকে। ছাত্রজীবনে বন্ধু মানে অনেককিছু। সময়ের স্রোতে তারা হারিয়ে যায়। কর্মজীবনে তাদের খোঁজ রাখারও ময় নেই। তারপরেও বন্ধু জরুরি। তাদের সঙ্গে রাখুন, পাশে থাকুন সবসময়।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/এমআর



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭