ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মুক্তি পেল সৌদি তরুণী রাহাফ, কিন্তু বাকিরা?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/01/2019


Thumbnail

রক্ষণশীল সৌদি পরিবার থেকে মুক্তি চাচ্ছিল মেয়েটি। সেজন্যেই পরিবারের কাছ থেকে পালিয়ে থাইল্যান্ডে চলে এসেছিল সে। ব্যাংকক হয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। কিন্তু এর আগেই এক সৌদি কূটনীতিকের কাছে ধরা পড়ে যায় ১৮ বছরের মেয়েটি। বলছি, সৌদি কন্যা রাহাফ আলকুনুনের কথা। যে বার বার বলছিল, পরিবারের কাছে ফেরত পাঠালে তাকে হত্যা করা হবে। নিজের পরিবারের থেকে বাঁচতে ব্যাংকক বিমানবন্দরের একটি কক্ষে নিজেকে অবরুদ্ধও করে রেখেছিল সে। এরপর টানা কয়েকদিনের অনিশ্চয়তার পর অবশেষে মুক্তি পেয়েছে রাহাফ। কানাডা মেয়েটিকে আশ্রয় দিয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, তার দেশ আনন্দের সঙ্গে রাহাফকে আশ্রয় দেবে।

ভাবুন তো একটু, মাত্র ১৮ বছরের একটা মেয়ে কেন নিজের পরিবার ছাড়তে এতটা মরিয়া হয়ে উঠলো? রাহাফ জানিয়েছে, ওর পরিবার সামান্য কারণেই ওকে হত্যার হুমকি দিত। চুল কেটে ছোট করার কারণে ছয় মাস ওকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। রাহাফকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল বলেও জানা গেছে। কিন্তু এই বিষয়গুলো কি শুধু রাহাফের সঙ্গেই ঘটেছে?

সৌদির গোঁড়া পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মেয়েদের পুরোপুরি পুরুষ অভিভাবকের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হয়। পড়াশুনা করতে, চাকরি করতে, ব্যাংক একাউন্ট খুলতে, এমনকি বাড়ি থেকে বেরোতেও তাদের পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নিতে হয়। কেউ এর উল্টোটা করলেই তার ওপর নেমে আসে ভয়ানক অত্যাচার।

রাহাফই প্রথম নন, এর আগেও অত্যাচার থেকে বাঁচতে পরিবার ছেড়ে পালিয়েছেন আরও অনেক সৌদি তরুণী। বছর দুয়েক আগে পরিবারের সঙ্গে তুরস্কে ছুটি কাটাতে গিয়ে পালিয়েছিলেন শাহাদ আল মুহাইমেদ। ১৭ বছরের মেয়েটি জর্জিয়ায় প্রবেশ করে নিজেকে শরণার্থী বলে ঘোষণা করেছিলেন। বর্তমানে সে সুইডেনে আছে।

২০১৭ তেও দিনা আলি লাসলুম নামের আরেক সৌদি তরুণী পালিয়ে ম্যানিলা পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু তাকে আবারও পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর তার সঙ্গে কী ঘটেছে, তা আর জানা যায়নি।

কী মনে হচ্ছে, সৌদির সাধারণ পরিবারগুলোতেই শুধু মেয়েদের ওপর অত্যাচার চালানো হয়? এমনটা ভেবে থাকলে ভুল করবেন। দেশটির রাজকুমারীরাও এই অত্যাচার থেকে রেহাই পান না। ৭০-এর দশকে এক সৌদি রাজকুমারী কঠোর অনুশাসন থেকে বাঁচতে প্রাসাদ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তার প্রেমিক। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। দুজনকেই হত্যা করা হয়েছিল।

রাহাফ ভাগ্যবান। সব অত্যাচার থেকে মুক্তি পেয়েছে সে। ইতিমধ্যেই কানাডার টরন্টোতে পৌঁছে গেছে মেয়েটি। নিশ্চিতভাবেই মুক্ত একটা জীবন পাচ্ছে রাহাফ। কিন্তু হাজার হাজার সৌদি তরুণী এখনও প্রতিনিয়ত নিজের পরিবারের মানুষগুলোর কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন। রাহাফ বন্দিশালা থেকে মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু বাকিরা?

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭