ইনসাইড পলিটিক্স

এরশাদের আশা ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 19/01/2019


Thumbnail

এবার কোন অভিনয় নয়, নাটক নয়। সত্যিই তিনি অসুস্থ। চিকিৎসকরা বলছেন, তার আশা কমে আসছে। কেউ কেউ বলছেন, ক্রমাগত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন এরশাদ। জীবন-মৃত্যু মহান আল্লাহ্‌র হাতে। একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন, কে কখন ইহলোক থেকে চিরবিদায় নেবেন। তারপরও একজন মানুষের যখন শেষ বিদায়ের সময় হয়, তখন মানুষ বোঝে। বার্ধক্য বা গুরুতর অসুস্থ মানুষ যখন আস্তে আস্তে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হন, তখন আমরা বুঝি। তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। দুঃখ পাই, কান্নায় আর্তনাদ করি। কিন্তু ‘মৃত্যু’ এমন এক বাস্তবতা যেখানে মানুষ অসহায়। সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ এখন সত্যিই গুরুতর অসুস্থ। আগামীকাল তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন। কিন্তু এরশাদের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এরশাদ ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়ছেন। তিনি খেতে পারছেন না, হাটা চলাও করতে পারছেন না। এরশাদের একজন চিকিৎসক বলেছেন, ‘তিনি ক্রমশঃ নিস্তেজ হয়ে পড়ছেন। আমরা তাঁর আশা সৃষ্টিকর্তার উপর ছেড়ে দিয়েছি।’ এরশাদের ছোট ভাই জিএম কাদের বলেছেন, ‘এরশাদ সাহেব ক্রমশঃ দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে পড়েছেন। এমনকি তিনি এখন বিছানায় নড়াচড়া পর্যন্ত করতে পারছেন না ।’

এরশাদের আত্মীয়-স্বজন মনে করছেন, তাঁর বিদায়ের লগ্ন উপস্থিত হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, তাঁদের আর কিছু করার নেই। এ কারণেই আগামী রোববার শেষ চেষ্টা করতে এরশাদকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এরশাদের একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেছেন, ‘হয়তো চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে কিছুদিন বাঁচিয়ে রাখা যাবে, কিন্তু তিনি আগের মতো চলাফেরা, কথাবার্তা বলতে পারবেন না। অভাবনীয় কিছু না ঘটলে, বাকি দিনগুলোতে নিষ্প্রাণ এক অসুস্থ এরশাদ থাকবেন। যিনি থেকেও না থাকার মতো।’

চিকিৎসকরা বলছেন, ‘গত নভেম্বর থেকেই আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন এরশাদ। এটা ছিল বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা। এইসময়ে তিনি সিঙ্গাপুর যান চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, এখন খুব বেশি কিছু করার নেই। এরপর এরশাদ ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় এসে তার শরীর আরো দুর্বল হতে থাকে। তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে যান হুইল চেয়ারে করে। শপথ নেয়ার পর ক্রমশঃ দুর্বল হয়ে পড়েন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। এরপর এরশাদকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নেয়া হয়। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের চিকিৎসকরাও সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের মতোই খুব বেশি কিছু করার নেই বলেই মন্তব্য করেন। চিকিৎসার পরিভাষায় এটাকে বলা হয় বার্ধক্যজনিত রোগ। গত কয়েকদিন ধরেই এরশাদের ক্ষুধা মন্দা বেড়েই চলছে। 

উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এরশাদ জন্মগ্রহণ করেন। এ বছর তিনি নব্বইয়ে পা দেবেন। নয় বছর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রাখা এই সামরিক একনায়ককে ‘স্বৈরাচারী শাসক’ হিসেবে অভিহিত করা হতো।

৯০ এর গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত এরশাদ কিছুদিন কারাবরণ করলেও বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি এখন পর্যন্ত একজন গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। এবার নির্বাচনের আগেও এরশাদ অনেক নাটক করেছিলেন।

বাংলা ইনসাইডার/এমআর



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭