ইনসাইড বাংলাদেশ

‘আশরাফের কোন সমালোচনা ছিল না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 30/01/2019


Thumbnail

জাতীয় সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিনেই শোক প্রস্তাব পাশ করেন  নবনিযুক্ত শিরীন শারমিন চৌধুরী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফসহ বিগত সংসদ থেকে এ সংসদের মধ্যবর্তী সময়ে স্পিকার নুরুল আলম, তরিকুল ইসলাম, টি আই এম ফজলে রাব্বি, আলহাজ্জ নুরুল ইসলাম, আশরাফুন্নেসা মোশাররফ, বোরহান উদ্দিন খানসহ আরও যারা মারা গেছেন তাদের জন্য শোক প্রস্তাব উথাপন করা হয়। পরে প্রয়াত সৈয়দ আশরাফের উপর আলোচনায় অংশ নেন সাংসদরা।

আশরাফের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে প্রথমেই বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘সৈয়দ আশরাফ খুব অল্প বয়সে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে পরিবারসহ হত্যা করা হলে সৈয়দ আশরাফ লন্ডনে ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে সারাজীবন কাজ করেছেন। রাজনীতিতে তিনি সবসময় বুদ্ধিমানের ভূমিকা রেখেছেন। তিনি সেটা প্রমাণ করেছেন যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল। সে সময়ের ষড়যন্ত্র থেকে আওয়ামী লীগকে রক্ষা করেছেন। সৈয়দ আশরাফ যখন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তখন দেশী এবং বিদেশী নানা ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করেন। আশরাফ অত্যন্ত সফলভাবে দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে লেখা থাকবে। তিনি একজন বিনয়ী নেতা ছিলেন। কোন লোভ ছিল না। তার পিতাকে সারা ময়মনসিংহের মানুষ স্যার বলে সম্বোধন করতেন। তেমনি সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর পর মানুষের ঢল নামে। সৈয়দ আশরাফের কন্যার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। সে আমাদের পরম আত্নীয়।’ তিনি ধারাবাহিকভাবে সৈয়দ আশরাফের ভূমিকা তুলে ধরেন।

সংসদ সদস্য নাসিম বলেন,‘সৈয়দ আশরাফ আমার ছোট ভাই। চার নেতার এক নেতার গর্বিত সন্তান। চার নেতা কখনো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বেইমানি করেননি। তেমনি চার নেতার সন্তানরাও আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু কন্যার সঙ্গে সবসময় ছিলেন। তিনি দেখে গেছেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা, চার নেতা হত্যার বিচার হয়েছে। এর জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যার কাছে কৃতজ্ঞ।’

ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু তৃতীয় বারের মতো নির্বাচিত স্পিকারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘কঠিন সময়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিয়েছিলেন আশরাফ। তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তার কোন শত্রু ছিল না। আশরাফের কোন সমলোচনা ছিল না। এই দেশের প্রত্যেক রাজনীতিবিদেরই থাকে। কিন্তু তার ছিল না।’ 

বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ বলেন,‘বাবার মর্মান্তিক মৃত্যর পর তিনি লন্ডনে চলে গিয়েছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ছিলেন। ১৯৯৬ সালে এসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন দুইবার। উনি দেশের জন্য আরও অনেক কিছু করতে পারতেন। আমরা সবাই চলে যাবো। কিন্তু উনি একটু আগেই চলে গেলেন।’

ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন,‘তার সঙ্গে আমার ছাত্রজীবন থেকেই পরিচয়। মুজিব বাহিনীর যখন দায়িত্ব পালন করেছি। মুজিব বাহিনীর সঙ্গে তিনি যুদ্ধ করেছেন। তার মধ্যে কোন অহংকার কিংবা দাম্ভিকতা ছিল না। ৩ জানুয়ারি তিনি আমাদের মাঝ থেকে চলে গেলেন। জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু কন্যা যখন কারাগারে বন্দি, তখন তিনি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন দলের।’   

শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন,‘তার সঙ্গে আমার পরিচয় ছাত্রজীবন থেকে। তিনি ছিলেন একজন রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। তিনি সৎ ছিলেন, নির্লোভ ছিলেন। বহুদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। তার চিকিৎসা করার টাকা ছিল না। কেউ বলতে পারবে না আশরাফ তাকে ধমক দিয়ে কথা বলেছেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় লন্ডন থেকে এসে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার একজন মেয়েই আছেন। তার মেয়েকে যেন আল্লাহ ধৈর্য্য দেয়, সহ্য দেয়। বঙ্গবন্ধু যে বলতেন আমি ভোগের রাজনীতি নয়, ত্যাগের রাজনীতি করি। আশরাফ কিন্তু সেই রাজনীতি করে গিয়েছেন।’

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭