ইনসাইড গ্রাউন্ড

ফিরিয়ে দাও পেলে-রোনালদোর সেই ব্রাজিল (২য় পর্ব)

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 16/02/2019


Thumbnail

২০০২ এর ব্রাজিল নিয়ে যদি লিখতে হয়, তাহলে আরেকটি মহাভারত লেখা হয়ে যাবে। দলটিকে ১৯৭০ ব্রাজিলের সাথে তুলনা করলে খুব একটা অসমীচীন ব্যাপার মোটেও হবে না। কারণ এই দলেও ছিল বেশ কিছু লিজেন্ডারি খেলোয়াড় যাদের খেলা দেখে ফুটবলকে ভালবেসে ফেলে অনেকেই।

এ দলের রক্ষণভাগে যেমন ছিল লুসিও, রকি জুনিয়র, রবার্তো কার্লোস ও কাফুদের দিয়ে গড়া অভেদ্য এক চীনের মহাপ্রাচীর, আর আক্রমণভাগের সেনাপতি ছিলেন সর্বকালের সেরা নাম্বার নাইন ২৫ বছরের যুবক রোনালদো দ্য ফেনোমেনন।

ঐ সময় রোনালদো ছিলেন তার ক্যারিয়ারের একেবারে তুঙ্গে। তার সঙ্গী ছিল ‘স্মাইলিং অ্যাসাসিন’ (হাস্যোজ্জ্বল ঘাতক) রোনালদিনহো, ৩০ বছরের অভিজ্ঞ রিভালদো, কাকা, গিলবার্টো সিল্ভা ও ‘গড অব ফ্রি কিক’ খ্যাত জুনিনহো। এই দলের জন্য বিশ্বকাপটি ছিল প্রাতিষ্ঠানিক সনদপত্র মাত্র। তবুও, সেবার যদি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হতে ব্যর্থ হতো ব্রাজিল, দলটিকে জিকোর দলের মতো আরেকটি অযথাযথ তকমা যে পেতে হতো এটি নিশ্চিত।

আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বলতেই হয়- ২০০২ বিশ্বকাপ পর্যন্ত ব্রাজিল যেন ছিল এক সোনালী অতীতের নাম!

কারণ, ২০০৬ বিশ্বকাপে আরও একবার ব্রাজিলকে হোঁচট খেতে হয় জিদানের ফ্রান্সের কাছে। এরপর ব্রাজিল যেন আর মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি। ২০১০ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডের কাছে শোচনীয় হারে বিদায়, তারপর ২০১৪ তে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলের এক ট্রমাটিক পরাজয়, যা ব্রাজিলকে অনন্তকাল ধরে ভোগাবে।

২০১৮ বিশ্বকাপে কোচ তিতের দিক নির্দেশনায় নেইমার ও কুতিনহোরা কিছুটা আশার আলো দেখাতে পারলেও শেষ পর্যন্ত ঐ যা তাইই রয়ে গেল যেন। কোচের দূরদর্শিতার অভাব ও ব্যাকআপ পরিকল্পনা না থাকার কারণে ব্রাজিলকে আরেকটি খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়।

ব্রাজিলের বর্তমানটা যেন এক অচেনা এক গল্প। বর্তমান কোচ থেকে শুরু করে সকল খেলোয়াড় ইউরোপে পাড়ি জমাতে বা তাদের খেলার ধরণ আত্মস্থ করতে যেন সদা ব্যস্ত। সেই সাম্বা জাদু, সেই ছন্দময় পাসিং আজ যেন এক কোন অতীতের গল্প। হারিকেন দিয়ে খুঁজলেও একজন জেনুয়িন নাম্বার ৯ (স্ট্রাইকার) পাওয়া যাবে না এই ব্রাজিল দলে। পেলে, জর্জিনহো, সক্রেটিসের যুগের কথা না হয় বাদই দিলাম। রোনালদো, রোনালদিনহো, রিভালদো, কাকা ও আদ্রিয়ানোর মতো একটা খেলোয়াড়ও বর্তমান ব্রাজিল দলে নেই, যাদের উপর দল কিছুটা হলেও নির্ভর করতে পারে।

নেইমার শুরুতে কিছুটা আশা জাগাতে পারলেও এখন মনে হচ্ছে সেও কালের গর্ভে হারিয়ে হাচ্ছে। ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির বিপক্ষে খেলার আগের ম্যাচে ইনজুরিতে পড়তে হয় নেইমারকে। ২০১৮ বিশ্বকাপ খেলতে হয় ইনজুরি থেকে পুরোপুরি রিকভারি না করেই। ২০১৯ কোপা আমেরিকার আগে আবার ইনজুরিতে। ইনজুরি যেন নেইমারকে কোনভাবেই সফল হতে দিতে নারাজ।

বার্সাতে নেইমার ভালই করছিলো। নেইমার, মেসি ও সুয়ারেজ মিলে গড়ে তুলেছিলো এমএসএন ত্রয়ী। তারা তিনজন প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে রীতিমতো নাকানি চুবানি খাওয়াচ্ছিল।

হঠাৎ নেইমার বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসলো। কারণ তার মনে হয়েছিল যে, বিশ্বের নাম্বার ওয়ান খেলোয়াড় হতে হলে তাকে মেসির ছায়া থেকে বের হতেই হবে। এছাড়াও নেইমার নিজেকে বনের একমাত্র রাজা হিসাবে প্রমাণ করতে চাচ্ছিলো। তাই পাড়ি জমালো ফরাসী ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই মোনাকো থেকে আসা কুড়ি বছরের এক তরুণ এমবাপ্পে তার সাম্রাজ্যে ভাগ বসাতে চাইছে যেন।

ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ হয়ের পর তার দাবী যেন আরও জোড়াল হয়ে গেছে। অপরদিকে সিংহাসনচ্যুত এডিনসন কাভানির দৃষ্টি তো আছেই পিএসজির সিংহাসনের দিকে তাক করা। দু’জনের পেনাল্টি নিয়ে খোলামেলা একবার বিরোধও লেগেছিল।

(চলবে…)

বাংলা ইনসাইডার/জেডআরএম/এমআর



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭