ইনসাইড গ্রাউন্ড

সুযোগের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছেন বাংলার ‘চামিন্দা’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 19/02/2019


Thumbnail

বোলিং অ্যাকশন ও দুই দিকে সুইং করানোর ক্ষমতার কারণে সৈয়দ রাসেলকে বলা হতো বাংলার ‘চামিন্দা ভাস’। ইনজুরি আর অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের অনেকগুলো জয়ে অবদান রাখা যশোরের এই পেসার।

ঘরোয়া ক্রিকেট

বয়সভিত্তিক ক্রিকেট দিয়ে শুরু হয় সৈয়দ রাসেলের পথচলা। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছেন বাঁহাতি এই পেসার। ২০০১ সালে নিজ বিভাগ খুলনার হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর। আটসাঁট বোলিং, দু’দিক থেকে সুইং, নিখুঁত লাইন ও লেন্থে বোলিং দক্ষতা তাঁকে দ্রুত নিয়ে আসে পাদপ্রদীপের আলোয়।

‘চামিন্দা ভাস’ নামকরণ

সময়টা ২০০৫ সাল। সে সময় বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো দুই পেসারকে। সে সময় তরুণ বেশ কয়েক ক্রিকেটারের সঙ্গে ছিলেন সৈয়দ রাসেলও। বর্তমান অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারের সঙ্গে অনুশীলন করার সুযোগ হয়েছিলো বাঁহাতি এই বোলারের। একদিন দুই বেলার অনুশীলনে ল্যাঙ্গারকে চারবার আউট করেছিলেন রাসেল। সে সময় তাঁকে শ্রীলংকার সাবেক বাঁহাতি পেসার ‘চামিন্দা ভাস’-এর সঙ্গে তুলনা করেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই ওপেনার।

বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ইংল্যান্ড সফর

অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে আসতে না আসতেই ইংল্যান্ড সফরের জন্য  ‘এ’ দলে ডাক পান তিনি। কাউন্টি ক্লাব কেন্টের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ৫০ রানে ৭ উইকেট। আর পুরো সফরে ২০ উইকেট নিয়ে নজরে আসেন নির্বাচকদের।

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার

২০০৫ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশ সফরে আসে শ্রীলংকা। টেস্ট এবং ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই অভিষেক হয় সৈয়দ রাসেলের। ২০০৭ বিশ্বকাপে তাঁর কৃপণ বোলিংয়ে উপকৃত হয় বাংলাদেশ দল। একই বছর ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম ওভারে আউট করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইলকে। অথচ আগের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছিলেন এই ক্যারিবিয়ান।

আরো তিন বছর খেলার পর ২০১০ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন সৈয়দ রাসেল। ক্যারিয়ারে মাত্র ৬ টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। শিকার করেছিলেন ১২ উইকেট। এছাড়া ৫২ ওয়ানডেতে ৬১ এবং আট টি-টোয়েন্টিতে নেন ৪ উইকেট। 

ইনজুরির কবলে

৫ বছরের ছোট্ট এই ক্যারিয়ারে দুইবার ইনজুরির কবলে পড়েন তিনি। ২০০৭ সালে বাঁ-কাঁধে চোট পান রাসেল। কিন্তু এ চোটের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বিসিবি। দীর্ঘ আট বছর চোট বয়ে বেড়ান তিনি। ২০১৫ সালে অপারেশনের জন্য যশোরের এই পেসারকে ভারত পাঠানো হয়। দু’বছর পর জানা যায়, সেই অপারেশন ছিল অসফল। পরে অপারেশন না করতে হলেও দীর্ঘ বিরতির কারণে অনেকটা শেষ হয়ে যায় সৈয়দ রাসেলের ক্যারিয়ার।

ক্রিকেটে ফেরার শেষ চেষ্টা

ক্রিকেটে ফেরার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন সৈয়দ রাসেল। সেখানেও সুযোগ মিলছে না বললেই চলে। ২০১৭ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মাত্র ছয় ম্যাচ খেলার সুযোগ দেওয়া হয় তাঁকে। শেষ ম্যাচে শিকার করেন চার উইকেট। এরপর গত বছর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ড্রাফটে তাঁকে সর্বনিম্ন ‘সি’ ক্যাটাগরিতে রাখা হয়। এছাড়া বিপিএলের ষষ্ঠ আসরে ড্রাফটেই জায়গা হয়নি তাঁর।

বাংলাদেশ দলে পেসারদের আধিপত্য অনেক বেশি। কাজেই জাতীয় দলের ফেরার সুযোগ নেই বললেই চলে। কিন্তু হাল ছাড়েননি রাসেল। কারণ স্বপ্ন নিয়ে বাঁচে মানুষ। তাই স্বপ্নের সেই পরিধিটাকে বড়ই রাখতে চান তিনি। আবারো লাল-সবুজ জার্সিতে ফিরতে চান ২২ গজে।

 

বাংলা ইনসাইডার/আরইউ/এএইচসি/এমআর



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭