ইনসাইড পলিটিক্স

ডাকসু নিয়ে আন্দোলনের নির্দেশ তারেকের, সিনিয়রদের না

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 19/02/2019


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই সরকার বিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করতে চায় বিএনপি। ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে যে অচলাবস্থা তৈরী হয়েছে,সেটাকে আন্দোলনে রুপ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তারেক জিয়া। ছাত্রদলের একাধিক নেতার সঙ্গে তিনি গতকাল এবং আজ টেলিফোনে আলাপ করেছেন এবং তাদেরকে বলেছেন, ডাকসু নির্বাচনে যে দাবি-দাওয়া দিয়েছে তাতে অনড় থাকতে হবে এবং এই ভিত্তিতে আন্দোলন তৈরী করতে হবে। একই সঙ্গে তারেক জিয়া এই নির্দেশও দিয়েছেন যে, কোটাবিরোধী আন্দোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাত-শিবিরের গ্রুপসহ অন্য যারা আছেন তাদের সবাইকে নিয়ে একটা আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্দোলন শুরু করলে তা সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। তবে তারেকের এই চিন্তার সঙ্গে একমত নন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। তারা মনে করছেন যে, এরকম সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতি এবং এরফলে ছাত্রদলই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ছাত্রদল যেটুকু শক্তি সঞ্চার করেছিল এবং যেভাবে ক্যাম্পাসে যেতে পারছিল, তা নষ্ট হয়ে যাবে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন যে, এখন আন্দোলনের উপযুক্ত সময় নয় বরং ধাপে ধাপে আন্দোলন করতে হবে। তাঁরা আপত্তি সত্বেও ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের পক্ষপাতি। তাঁরা মনে করেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সাধারন শিক্ষার্থীদের কাছে যাওয়া যাবে। এনিয়ে প্রচার প্রচারণাও করা যাবে। কার্যত শুধু ডাকসু নির্বাচন নয়, নানা রকম বিষয় নিয়েই বিএনপিতে তারেক জিয়ার সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের বিভক্তি প্রকাশ্য আকার ধারণ করেছে। মূল বিএনপির নেতৃত্ব তারেক বিরোধী হলেও ছাত্রদল, যুবদল,  স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনগুলো সম্পূর্ণভাবে তারেকের নিয়ন্ত্রনে এবং তারেকই তাদের পরিচালনা করছেন।

একটি সূত্র জানাচ্ছে যে, তারেক জিয়ার পরিকল্পনায় ডাকসু নির্বাচনে একটি বড় ধরনের গোলযোগ করা হবে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলাই হচ্ছে তার  লক্ষ্য। কিন্তু বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যত ছাত্রলীগ এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণে। ছাত্রলীগ যদি চায়, তাহলে ছাত্রদল একমুহূর্ত ক্যাম্পাসে থাকতে পারবে না। এই অবস্থায় ছাত্রদল যদি কোন কর্মসূচী গ্রহণ করে বা কোন আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। তাহলে তারা ক্যম্পাস থেকে বিতাড়িত হওয়া বৈ অন্যকিছু করার সামর্থ্য হবে না। এজন্য শীর্ষস্থানীয় নেতারা মনে করছেন যে, এখন আন্দোলন না করে বরং ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহনের মাধ্যমে যদি সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছাকাছি যাওয়া যায়, তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলা যায়, তাহলে নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন, ছাত্রদলের সাগঠনিক শক্তির বিকাশ ঘটবে এবং ছাত্রদল সংঘবদ্ধ হতে পারবে। কিন্তু তারেক এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন। এনিয়ে বিএনপিতে বিভক্তি প্রকাশ্য রুপ লাভ করেছে। শেষ পর্যন্ত হয়তো ছাত্রদল তারেকের কথাই শুনবে বলে সিনিয়র নেতারা মনে করছেন। এবং এরফলে বিএনপি আরেকটি নতুন সংকটের মুখে পড়বে বলে তাদের ধারণা।

তবে একাধিক নেতা আজ ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের ডেকেছেন, তাদেরকে এখনি কোন বড় ধরনের আন্দোলন বা নির্বাচন বর্জনের মত কর্মসূচী গ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ করেছেন। কিন্তু ছাত্রদল শেষ পর্যন্ত সেটাই করবে, যেটা তারেক নির্দেশনা দিবে। এই প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত বিএনপির মত ছাত্রদলও অস্তীত্বর সংকটে পরে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।  

 

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭