কালার ইনসাইড

হারিয়ে গেছে সিনেমার ‘শুদ্ধ বাংলা’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/02/2019


Thumbnail

একটা অজুহাত, আমার যা চরিত্র তাই তো দেখাতে হবে। চরিত্রানুযায়ী হবে মুখের ভাষা। এই অজুহাতে বাংলাদেশের নাটক-চলচ্চিত্রে বাংলা ভাষাটা আর নেই। বাংলা ছবিতে মূলত এখন প্রাধ্যান্য পাচ্ছে আঞ্জলিক ভাষা। বিশেষ করে ঢাকাইয়া ভাষা। ঢাকাই সিনেমার প্রায় শতভাগ সিনেমা কুট্টি ভাষায় হচ্ছে। কুট্টি ভাষা তেজগাঁও, মুগদা, মান্ডার বস্তিবাসী মানুষের ভাষা। বলতে পারেন কোন শিক্ষিত সমাজে এই ভাষা ব্যবহৃত হয়?

অনেকের মতে, সিনেমা সব ভাষার সব সমাজের প্রতিনিধিত্ব করবে। সিনেমায় চরিত্রটি তার চরিত্রের উপযোগী ভাষা ও শব্দেই কথা বলবে। সিনেমায় ভাষা চাপিয়ে দেয়া উচিত নয়।

কিন্তু গেল দশ ২০ বছরে পুরো ঢাকাই সিনেমা শিল্প অদ্ভুত এক ভাষা দখল করে ফেলেছে। ঢাকাই সিনেমায় শুদ্ধ, প্রমিত বাংলা আর নেই। আমরা দীর্ঘদিন ধরে রেডিওতে বাংলিশ ব্যবহারে আপত্তি করে আসছিলাম। কিন্তু টিভি বা সিনেমা আমাদের দিচ্ছে কী? তারা যে বাংলা ভাষার ভয়াবহ ব্যবহার করছেন।

আমাদের সিনেমার অধ:পতনে ভাষা বড় একটি বিষয়। সত্তর থেকে নব্বই দশকে সিনেমার ভাষার যে শানিত উচ্চারণ ও আবেদন ছিল, কালক্রমে তা হারিয়ে যায়। দখল করে আঞ্চলিক কিংবা ঢাকাইয়া ভাষা। মানুষ নিজ ভাষার চেয়ে উন্নত ও মধুর শব্দ বহুল ভাষার সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হয়। আমরা যে বাস্তবতার দোহাই দিয়ে নাটক-সিনেমা নির্মাণ করি। সেটা মানুষ গ্রহণ করছে না। অনেকে বলে, শুদ্ধ ভাষায় এসব নির্মাতারা নাটক লিখতে পারেন না বলেই এমন সব নিজের ভাষা ব্যাবহার করেন। ফলে সিনেমা বিমুখ হচ্ছে মানুষ। এইসব আঞ্চলিকতা সিনেমার উচ্চমার্গীয় ব্যাপারটি লোপাট করে দিয়েছে।

এই মাধ্যমের অস্তিত্বের জন্য শুদ্ধ বাংলার মধুর প্রয়োগ জরুরি। অনেকের মতে, বিশেষ করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকির মতে, নাটক বা চলচ্চিত্রে সংলাপের ভাষা কেবল প্রমিতই হবে না শহুরে কথ্য ভাষাও চলবে।
তবে ফারুকী নানা সময়ে বলেছেন, সংবাদপাঠের মতো অনুষ্ঠানগুলো প্রমিত বাংলাতেই করতে হবে। কিন্তু টেলিফিল্মে চরিত্রানুযায়ী অনানুষ্ঠানিক বা কথ্যভাষার ব্যবহার হওয়াটা দোষের কিছু হতে পারেনা।

কিন্তু অনেকে বলেন, ‘তুমি কোথায়’ এর জায়গায় ‘তুমি কই’ যখন কোন প্রেমিকা প্রেমিককে বলে। সেটা নিশ্চয়ই সুন্দর শোনায় না। সেটা স্ক্রিপ্টেরও দোহাই আসে না। কলকাতার নাটক সিনেমার প্রতি এখনো এদেশের মানুষের টান রয়েছে। এর কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করেন, ওদের ভাষাটা মুগ্ধ করে। শুদ্ধ করে বাংলা উচ্চারণ করে। তবে তার মধ্যে তো অবশ্যই কলকাতার টান থাকে। কিন্তু আমরা না রাখি আমাদের কথা না রাখি বইয়ের ভাষা। শুদ্ধ ভাষাটা সবার মান ধরে রাখে। সে ভাষাটা আর যাই হোক কারও খারাপ লাগে না। কিন্তু ‘আইছি’ ‘গেছি’ টাইপ ভাষা নাটক সিনেমাকে কদর্য করে।


বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ 

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭