ইনসাইড বাংলাদেশ

নিমতলী থেকে চকবাজার: কবে শিক্ষা হবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/02/2019


Thumbnail

নিমতলীর সেই ক্ষত এখনও শুকাতে পারেনি স্বজন হারানোরা। ২০১০ সালের ৩ জুন নবাব কাটরায় রাত ৯টার দিকে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের বিস্ফোরণ থেকে প্লাস্টিক কারখানায় আগুন ধরে যায়। বিপজ্জনক কেমিক্যালভর্তি কারখানা আগুনের লেলিহান শিখায় ঢেকে যায়। শত শত মানুষের চোখের সামনে আগুনে পুড়ে নিহত হন ১২৪ জন। ২৩টি বসতবাড়ি, দোকান ও কারখানা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। স্বজন হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় অনেক মানুষ। আহত যারা বেঁচে আছেন, তারাই বলতে পারবেন সেদিনের সেই বিভীষিকার কথা। সর্বহারা তিনজন মেয়েকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের কন্যা মর্যাদায় গণভবনে বিয়ের ব্যবস্থা করেন।

সে ঘটনায় গঠিত হয় একটি তদন্ত কমিটি। কমিটির তদন্তে উঠে আসে, ৫২ বাজার ৫৩ গলির পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢোকার মতো রাস্তা নেই। প্লাস্টিক কারখানা ও আশপাশের জনবহুল এই এলাকায় প্রত্যেক ভবনে গড়ে উঠেছে কেমিক্যাল কারখানা। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয়।

তদন্ত শেষে দাবি ওঠে, সেখান থেকে সকল কেমিক্যাল কারখানা সরানোর। নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তারপর প্রায় ৯ বছর কেটে গেলেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। সরিয়ে নেওয়া হয়নি কোন কারখানা। বরং একের পর এক গড়ে উঠেছে কেমিক্যাল কারখানা ও গুদাম।

আবারও ঘটলো একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। গতকাল বুধবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে চকবাজার চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবনে। অন্তত ৪টি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একটি প্রাইভেট কারের গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭০ জনের প্রাণহানির কথা নিশ্চিত করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী।

নিমতলীর সেই বিভিষীকার পর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি কেন? গতকাল রাতের আগুন লাগার পরপরই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট। কিন্তু সরু গলির কারণে সেগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে হিমশিম খায়। যদি দ্রুত গাড়িগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারতো তাহলে হয়তো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব হতো বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

নিমতলীর সেই ঘটনা থেকে যদি আমরা শিক্ষা নিতাম তাহলে হয়তো আজ নতুন করে এই বিভীষিকার সামনে দাঁড়াতে হতো না। পুরান ঢাকা মতো ঘিঞ্জি ও জনবহুল এলাকা থেকে কেমিক্যাল ও প্লাস্টিকের কারখানা ও গুদাম অন্যত্র সরিয়ে নেয়া এখন সময়ের দাবি।

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭