লিভিং ইনসাইড

বিয়ের পরেও টিকে থাকুক বন্ধুত্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/03/2019


Thumbnail

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অসংখ্য ভালো বন্ধুদের সঙ্গে অসম্ভব ভালো সময় কেটেছে জাকিরের। ক্লাস বা ছুটি যাই থাক, বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিদিন আড্ডা আর চা খাওয়া তো হতোই। আর কোনো কোনো দিন তো হুট করে বাসায় মিথ্যে বলে ঘুরতে চলে যাওয়া, পিকনিক করা, একসঙ্গে গ্রুপ স্টাডি আর কতো না আনন্দে গেছে সেই দিন। পড়াশুনার পাট চুকেছে, শুরু হয়েছে চাকরিজীবন। ঘরে এসেছে নতুন মানুষ, জীবনসঙ্গী স্ত্রী। নতুন পরিবার আর সঙ্গীকে সময় দিতে গিয়ে বন্ধুদের আর আগের মতো কাছে পাওয়া যায় না। কখনোবা বন্ধুদের সময় দিতে গেলে স্ত্রী অভিমান করছে, আবার ঘরকুণো বলে বন্ধুরাও কথা শোনাচ্ছে।

বিয়ের পর বন্ধুত্বের সংজ্ঞা পাল্টাবেই। তাই বলে কোনো পক্ষকে তো অবহেলা করা যাবে না। তাই অবশ্যই সঙ্গীর পাশাপাশি বন্ধুত্বও থাকুক অটুট-

সঙ্গীটিকে বন্ধুদের ব্যাপারে সব বলুন

মনে করে দেখুন, বিয়ের আগে বন্ধুরাই আপনার জীবনের অনেককিছু ছিল। বিয়ের পরে সময়টাতো পাল্টাবেই। কিন্তু ভুলবেন না যে এই বন্ধু আর সঙ্গী- দুইপক্ষই আপনার কাছে সমান জরুরি। নতুন সঙ্গীকে পেয়ে বন্ধুকে এড়িয়ে চলবেন বা তাদের মিষ্টিমধুর স্মৃতিগুলোকে সঙ্গীকে বলবেন  এড়িয়ে চলবেন- সেটা কেমন কথা! আপনার বন্ধুদের সঙ্গে আপনার কেমন সম্পর্ক তা সঙ্গীকে জানিয়ে রাখলে পরবর্তীতে আর সম্পর্ক ‍দুটি নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব থাকবে না।

সময় দিতে গিয়ে কৌশলে থাকুন

বিয়ের পরে তো বন্ধুদের সঙ্গে আর বাইরে আড্ডা, ঘুরতে যাওয়া বা হ্যাংআউট আগের মতো করে করতে পারবেন না। এসময় নতুন পরিবার, সঙ্গীকে সময় দেওয়াটা মূখ্য বিষয়। বন্ধুরা ডাকলেই আপনি চলে যেতে পারবেন না। বন্ধুদের কায়দা করেই বোঝাতে হবে যে আপনার বেরোনোর মতো অবস্থা নেই। একটা ছুটির দিনে সঙ্গীকে সময় দিলে আরেকটা ছুটির দিনে বন্ধুদের জন্য রাখুন। দিনের কাজ শেষে কিছুটা সময় নিয়ে কোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে নিন।

নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করবেন

অবিবাহিত জীবনে আমাদের কোনো পিছুটান থাকে না বলে যখন খুশি যা করা যায়, যেখানে সেখানে চলে যাওয়া যায়। কারণ আপনার হাত-পা একদম ঝাড়া। কিন্তু আপনি বিবাহিত হলে অনেক ব্যাপারে আপনাকে লাগাম টানতেই হবে, সংযত হতে হবে আপনাকে। যখন তখন বেরিয়ে যাওয়া, আড্ডা দেওয়ার মতো বিষয়গুলোতে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসুন।

দাম্পত্য জীবনের বিষয়গুলো বন্ধুদের না জানানোই ভালো

আপনার দাম্পত্য জীবন মানে সেই জীবন একান্তই আপনাদের দুজনের। সেখানে আবেগ ভালোবাসার পাশাপাশি ভুল বোঝাবুঝি বা সাময়িক বিচ্ছেদের মত ঘটনা ঘটতে পারে। এগুলো আপনার নিজেকেই সামলাতে হবে। প্রয়োজনে আপনার পরিবার বসবে আপনার সঙ্গে। কিন্তু বিষয়গুলো আপনার বন্ধুদেরকে না জানানোই ভালো। কারণ এতে বন্ধুদের মনে বিরূপ ধারণা তৈরি হতে পারে। এছাড়া দাম্পত্যে তৃতীয় পক্ষও ঢুকে পড়তে পারে। বন্ধুত্বও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

সঙ্গীর বন্ধুদেরকেও গুরুত্ব দিন

এই বিষয়টা কিছুটা পাল্টাপাল্টি। আপনি যদি আপনার সঙ্গীর বন্ধুদেরকে গুরুত্ব দেন তাহলে তিনিও আপনার বন্ধুদেরকে ভালোভাবে মেনে নেবেন, নিজের কেউ বলেই মনে করবেন। এতে করে বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কটাও ভালোভাবে রক্ষা করা সম্ভব হবে। আপনার বন্ধুদের বিপদে আপদে আপনার সঙ্গীও আপনার সঙ্গে থাকবেন।

একে অন্যের বন্ধুদের মধ্যে মিশে যান

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো তো এখন আমাদের হাতের নাগালেই। সেগুলোর কল্যাণেই আমরা এখন সবাই মোটামুটি ‘মিউচুয়াল ফ্রেন্ডশিপ’কথাটির সঙ্গে পরিচিত। মনের মধ্যে কোনো রেষারেষি বা ঈর্ষা, ক্রোধের স্থান না রেখে সঙ্গীর আর বন্ধুদের মধ্যে আপনি মিউচুয়াল হওয়ার চেষ্টা করুন। মাঝেমধ্যেই এমন কোনো আয়োজন করুন যেখানে সঙ্গী আর বন্ধুদের আপনি একখানে করে ফেলতে পারেন। এতে পরিচিতি ভালো হবে। আলাপ আর আড্ডার ভিড়ে সম্পর্কটা বন্ধুর মতো হয়ে যাবে। এতে আর বন্ধুদের নিয়ে অভিযোগের কোনো স্থান থাকবে না।

বন্ধুদের নিয়ে কখনো সন্দেহ করবেন না

বিবাহিত জীবনে বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ সন্দেহ। এই সন্দেহের কারণে সঙ্গী যদি তার কোনো বন্ধুকে নিয়ে কোনো প্রশংসা করেন, তাহলে তিনি তার সঙ্গীকে জড়িয়ে বন্ধুকে সন্দেহ করা শুরু করেন। এর পরিণতি খুব খারাপের দিকে যেতে পারে। এতে দাম্পত্য কলহও বাড়ে, বন্ধুত্বও নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা মনগড়া হতে পারে। তাই সন্দেহ করবেন না। বন্ধুত্বকে ভালো চোখে দেখুন। অথচ দেখা যায় এ ধরনের সন্দেহ বেশিরভাগ সময় শুধুই কল্পনা থেকে তৈরি হয়। সুতরাং সুন্দর সম্পর্কগুলো বাঁচাতে অহেতুক সন্দেহ করা থেকে দূরে থাকুন।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭