লিভিং ইনসাইড

নারীর শিফট যখন রাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/03/2019


Thumbnail

চাকরিটা নিয়ে ইদানীং খুব কথা শুনতে হচ্ছে রত্নার। রাতের ডিউটি নিয়ে বেশ বিপাকে পড়ে গেছে সে। পরিবার বিশেষ করে শ্বশুরবাড়ি সামলাতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে। শাশুড়ি আকারে ইঙ্গিতে প্রায়ই বলছেন যে রাতে এমন বাইরে থাকা তার কাছে ভালো লাগে না একদমই। তার কথা এমন চাকরি করতে হবে কেন! তাই বলে ডাক্তারির মত প্রফেশনকে কীভাবে বাদ দেওয়া সম্ভব! হাসপাতাল থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে দিলেও রত্নার নিরাপত্তা নিয়ে দারুণভাবে চিন্তিত পরিবারের অন্য সদস্যরা। কী করবে বুঝতেই পারে না সে। ছোট্ট মেয়েটা, স্বামীর জন্যেও দুশ্চিন্তা কাজ করে তার। 

মেয়েদের জন্য ক্যারিয়ারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ কর্মস্থলে রাতে কাজ করা। যদিও এখন অনেক মেয়েই নাইট শিফটে কাজ করছে। কিন্তু অনেকেই এটা সহজে ভালো চোখে মেনে নিতে পারে না। আর রাতের চাকরিতে মেয়েদের ঝুঁকি থাকে। একা রাতে ফেরা, দেরিতে বাসায় ফেরার ফলে অনেকে অনেককিছুই মনে করেন।

পরিবার-সমাজ কী বলবে, সন্তানের উপর কেমন প্রভাব পড়বে- এটা থেকে বাঁচতে মেয়েরা রাতে কাজ এড়িয়ে চলেন। সঙ্গে আছে নিরাপত্তার প্রশ্ন। এতসব আপত্তির পরেও তারা এখন আছেন গণমাধ্যমে, কলসেন্টারে, হাসপাতালে, সামরিক বাহিনীতে।

কী করবেন নারীরা

রাতে চাকরির ক্ষেত্রে প্রথমে নিরাপত্তার বিষয় পরিষ্কার রাখা দরকার। কিছু প্রাথমিক সতর্কতার কথা মাথায় রাখুন। রাতে কাজ করতে গেলে সিকিউরিটিকে জানিয়ে রাখুন কোথায় কাজ করেছেন, যাতে সে আপনার খোঁজটা রাখতে পারে। বেশি রাত পর্যন্ত একা কাজ করলে নিজের চেম্বারের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ রাখবেন।

কাজের ফাঁকে বাড়িতে ফোন করে নিজের সম্পর্কে আশ্বস্ত করুন। যত ব্যস্তই থাকেন না কেন বাসার সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। বাড়ির বড় সদস্যদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখার অনুরোধ করুন। একজন বিশ্বস্ত কাজের লোক রাখলে অন্যদের উপর চাপ কমবে।

নাইট শিফটে কাজ করলে সাধারণত অফিস কর্তৃপক্ষ বাড়ি ফেরার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা রাখেন। গাড়িতে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে বাড়ি ফিরুন। তাড়াহুড়া করে বাস বা ট্যাক্সি অন্য যানবাহনে করে না যাওয়াই ভালো হবে।

নাইট শিফটে চাকরি শুরুর আগে পরিবারের সবার সঙ্গে বিশেষ করে স্বামীর সঙ্গে খোলাখুলি আলাপ করে নিন। সন্তান থাকলে তাকে বা তাদের আপনার কাজের ধরনটা বোঝান যাতে আপনি রাতে বাসায় ফিরলে তাদের খারাপ না লাগে। প্রয়োজনে তাদেরকে আপনার অফিসের পরিবেশটা ঘুরিয়ে দেখিয়ে আনতে পারেন। স্বামী, সন্তান এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে দিনে ভালোভাবে সময় কাটান।

আপনার নিরাপত্তা আর পরিবারের দুচিন্তা কমাতে নিজের ফোন নম্বরের পাশাপাশি অফিসের নম্বরটিও  বাসার সবার কাছে দিয়ে রাখুন। গুরুত্বপূর্ণ কোথাও সেটি লিখে রাখুন যাতে সহজেই সবার চোখে পড়ে। সবাইকে নিজের কাজের গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা করুন, সবার সহযোগিতা চান।

সবার জন্য করণীয়

১. চেষ্টা করবেন যাতে পরপর ৪-৫ দিনের বেশি নাইট শিফটে কাজ করতে না হয়। এতে নরমাল স্লিপ প্যাটার্ন বা ঘুমের ধরন পাল্টে যায়। স্বাস্থ্যেরও কোনো সুস্থতা থাকে না। আর টানা নাইট শিফটে কাজের পর অবশ্যই একদিন পূর্ণ বিশ্রাম নেবেন।

২. নাইট শিফটে দীর্ঘক্ষণ কাজ করলে ক্ষুধা তো অবশ্যই লাগবে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি বাসা থেকে খাবার নিয়ে যাওয়া যায়। আর বিকল্প না পেয়ে বাইরের খাবার খেতে হলে মাংস আর ডিম এড়িয়ে চলুন। কারণ রাতে হজম প্রক্রিয়ার গতি কমে যায় বলে ভারী খাবার সহজে হজম হয় না। আর চেষ্টা করুন প্রতিদিন একই সময়ে খেতে।

৩. রাতে কাজ করতে গিয়ে পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকবেন- তা তো হতে পারে না। দিনের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট সময় ঘুমের জন্য বরাদ্দ তো রাখবেনই। অন্য সময়ে সামাজিক হতে চেষ্টা করুন। সবসময় দেখা করতে না পারলেও সামাজিক মাধ্যমে হলেও যোগাযোগের চেষ্টা তো করবেন।

৪. নাইট শিফটের পরে বাড়ি ফিরে কোনো দেরি না করেই সঙ্গে সঙ্গেই ঘুমোতে যান। কারণ বেশি দেরি করতে গেলে ঘুম আসবে না। আর যখনই সময় পাবেন বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করবেন। আর ঘুমের সময়ে অন্য কেউ যাতে সমস্যা করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/এমআর



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭