কালার ইনসাইড

বাংলাদেশে আলোচনা বেশি, সাফল্য কম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 14/03/2019


Thumbnail

বাংলাদেশের শিল্পীরা কলকাতায় গিয়ে অভিনয় করতে মুখিয়ে থাকেন, এমন অভিযোগ নতুন নয়। এটা মিথ্যে নয়, একটা সময় কলকাতার অভিনয়শিল্পীরাও বাংলাদেশে অভিনয় করতে মুখিয়ে থাকতেন। কারণ সে সময় কলকাতার চেয়ে বাংলাদেশে পারিশ্রমিক বেশি ছিল। তাইতো যুগে যুগে কলকাতার ইন্ডাস্ট্রি থেকে অনেকেই এসেছে বাংলাদেশের ছবিতে অভিনয় করতে। অনেকে চেয়েছিল স্থায়ী হয়ে যেতেও। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু শিল্পী নিয়ে আলোচনাটা একটু বেশিই হচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় কেউ সাফল্য নিয়ে আসেতে পারেনি।

‘কামরূপ কামাখ্যা’ সিনেমার মাধ্যমে ফের বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন কলকাতার রিয়া সেন। এই নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের সিনেমায় অভিনয় করলেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। ‘যদি একদিন’ সিনেমায় তিনি অভিনয় করলেন।  যেখানে তিনি আলাদা করে নজর কাড়তে পারেননি। তাকে নিয়ে সিনেমা মুক্তির আগে ও মুক্তির সময় যে আলোচনা ছিল। তার কিছুই সিনেমার মুক্তির সপ্তাহ খানেক পড়ে নেই। আসলে তিনি সেই মাপের চরিত্র বা অভিনয় এই সিনেমার মাধ্যমে করতে পারেননি বলেই হয়তো আলোচনা স্তিমিত হয়ে গেছে। শ্রাবন্তীর আগে আলোচনায় এসেছিলেন ঋতুপর্ণা। নায়ক আলমগীরের পরিচালনায় ‘একটি সিনেমার গল্প’ রীতিমতো বস্তাপচা বলে সবাই অভিহীত করেছে।

বাংলাদেশের পূজার সঙ্গে কলকাতার আদৃত জুটি হয়ে করলেন ‘প্রেম আমার টু’। সিনেমাটি কলকাতায় যতটা আলোচিত হয়েছে। তার ছিটেফাটাও হয়নি বাংলাদেশে। ‘গাদ্দার’ ছবিতে অভিনয় করতে ২০১৭ সালে ঢাকায় আসেন রিতিকা সেন। সে সময় এ নিয়ে মাতামাতি। পরবর্তীতে অবশ্য ছবিটির আর কোন খবর নেই। ইন্দ্রনীল এসে বাংলাদেশে ‘সম্রাট’ ও ‘চোরাবলি’ নামে দুটি সিনেমা করলেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে বাংলাদেশি শিল্পীরাই ছিল বেশি উজ্জল। ছবিগুলোর সফলতার পেছনে তার আলাদা কোন অবদান আছে বলে কেউ মনে করেন না।
 
এ পর্যন্ত যৌথ প্রযোজনার ছবিতে ওপার বাংলার ঋতুপর্ণা, মিঠুন চক্রবর্তী, অঙ্কুশ, সোহম, ওম, রিয়া সেন, আশীষ বিদার্থীসহ বেশ কিছু মুখকে দেখেছেন আমাদের দেশের চলচ্চিত্র দর্শক। সবসময়ই তাদের প্রাধান্য দেওয়া হয় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে। পরমব্রতও বাংলাদেশের দুইটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। কিন্তু সেখানে পরমব্রত কোন উজ্জল দৃষ্টান্ত রেখে যেতে পারেনি। ‘ভুবনমাঝি’ তে কিছুটা প্রশংসিত হলেও ‘ভয়ংকর সুন্দর’ সিনেমায় রীতিমতো সমলোচনায় ধুয়ে গেছেন তিনি। নির্মাতা সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড তার দুই ছবিতে শাশ্বত চ্যাটার্জি এবং সমদর্শী দত্তকে নিলেন। স্বপন আহমেদের ‘পরবাসিনী’ মুম্বাইয়ের উর্বশী রাওতেলা এবং সব্যসাচীকে আশ্রয় দিল। অনন্য মামুন বলিউডের রাখি সাওয়ান্তকে ‘আমি তোমার হতে চাই’ ছবিতে কাস্ট করলেন ঠিকই, আনতে পারলেন না দেশের মাটিতে। নেপালে গিয়ে স্থানীয় এই ছবির শুটিং হলো। রফিক শিকদার দিলেন প্রিয়াংকা সরকারকে এফডিসিতে কাজের সন্ধান, দিলেন ‘হৃদয় জুড়ে’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ। এত অধিকসংখ্যক হারে, প্রচার মাধ্যমে হৈহৈ রৈরৈ করে, তর্ক-বিতর্কের তুফান ছুটিয়ে কখনই ভারতীয় শিল্পীদের কাজ করতে দেখা যায়নি। এই বিপুল কাজের সুযোগের বিনিময়ে হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। অনন্ত জলিল নিয়ে এসেছিলেন স্নেহা উল্লালকে। কিন্তু ওই ছবির পরে বাংলাদেশে তার আর কোন আলোচনা নেই। পাওলি দাম কত আলোচনা তৈরী করে বাংলাদেশের শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয় করলেন। তিনিও রাখতে পারলেন না কোন সফলতার চিন্হ। ইরফান খানের মতো অভিনয়শিল্পী বাংলাদেশে এসে কোন তাক লাগাতে পারেননি।

তবে ইদানিং তুলনামূলকভাবে ভারতীয় শিল্পীদের আগমন কম ঘটছে। কারণ তাদের ইন্ডাস্ট্রি আবার কাজে ফিরছে। অনেকই মনে করেন, একটা সময় সেখানে ছবির নির্মাণসংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে নায়ক-নায়িকাদের কাজের ব্যস্ততাও কমে গিয়েছিল। যার কারণে অনেক শিল্পী যৌথ প্রযোজনা কিংবা এ দেশীয় ছবিতে কাজের আগ্রহ দেখিয়েছেন।

এরই মধ্যে যৌথ প্রযোজনার ছবিতে জিৎ, সোহম, অঙ্কুশ, ওম, শ্রাবন্তী, শুভশ্রী, রিয়া সেন, ঋত্বিকা সেন, বনি, রজতভ দত্তসহ একাধিক শিল্পী অভিনয় করেছেন, এখনো করছেন। একইভাবে শুধু এ দেশীয় ছবিতেও কলকাতার পরমব্রত, ইন্দ্রনীল, পাওলি দাম, প্রিয়াংকা সরকার কাজ করছেন।

কলকাতার তারকাদের নিয়ে ছবি নির্মাণ করছেন তাঁদের মধ্যে কোনো কোনো নির্মাতা মনে করেন, এখানকার তারকাদের কেউ কেউ নিয়মিতই শুটিং সেটে আসেন দেরি করে, আবার মাঝেমধ্যে শিডিউল ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভ্যাসও আছে। ফলাফল, ছবির কাজ শেষ করতে কখনো কখনো এক থেকে দুই বছরও লেগে যায়। এতে করে ছবির বাজেট বেড়ে দাঁড়ায় দ্বিগুণ। কিন্তু একই পারিশ্রমিকে কলকাতার তারকাদের এনে কাজ করালে, টানা কাজ শেষ করা যায়। কোনো বাড়তি চাপ থাকে না। আর ওপার বাংলার প্রতি এদেশের দর্শকের মোহটা নতুন কিছু নয়।

তেমনি বাংলাদেশের যত শিল্পী কলকাতায় গিয়ে অভিনয় করেছেন। হাতেগোনা দুয়েকজন ছাড়া বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই ওই আলোচনা ছিল, কিন্তু সাফল্য ছিল না।



বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ

 

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭