কালার ইনসাইড

শিশুদের বিনোদন কী?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 17/03/2019


Thumbnail

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে যদি বলি, শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত বিনোদনের সুযোগ এখানে আছে? আজকালকার শিশুরা যদিও অবসর পায় না, কিন্তু সেই অবসরে তারা কতটা বিনোদিত হতে পারে? কী কী নিয়ে গড়ে উঠছে আমাদের শিশুদের পৃথিবী? বড়দের বিনোদনের জন্য কত কি নির্মাণ হচ্ছে আমাদের এই সমাজে। কিন্তু শিশুরা কী পাচ্ছে? অনেকগুলো প্রশ্ন আপনার মাথায় নিশ্চয়ই জড়ো হয়ে আছে। আপনার শিশুকে দেখলেই সেই অভাববোধটা আসে।কিন্তু কোথায় উত্তর মিলবে জায়গা খুঁজে পাওয়া দুস্কর। 

শহুরে শিশুদের বিনোদন:

বর্তমান সময়ে শহরে শিশুদের জন্য যে বিনোদনের ব্যবস্থা আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত রেস্টুরেন্টে শিশুদের জন্য প্লে-জোন৷ আর এই প্লে-জোনে আছে শিশুদের জন্য রয়েছে নানা ধরণের ভার্চুয়াল গেম৷ যেমন গাড়ি চালানো, বিমানে চড়া, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো বিষয়।ঢাকার অভিজাত প্রায় সব এলাকাতেই এইসব রেস্টুরেন্ট আছে। ছুটির দিন বা সন্ধ্যার পরে শিশুদের নিয়ে অভিবাবকদের ভীড় দেখা যায় এসব জায়গায়। 

ঘর থেকে শিশুরা কী বিনোদন পায়?

অনেক শিশুরা এখন বাংলা বলার আগে হিন্দী শিখে যায়। আর এর পুরো কৃতিত্বই তার মায়ের। শিশুকে পাশে রেখে তিনি দিব্যি হিন্দী সিরিয়াল দেখতে থাকেন। অনেক বাবা মা বিনোদনের নামে শিশুদের টিভি সেটের সামনে বসিয়ে দেন। তারা ভাবে না শিশুটি কি দেখছে।আর একটু বড় হলে পড়াশুনার এমন চাপ আসে, যেখানে শিশুরা পারে না কোন শিশুতোষ বই পড়তেও। শিশুরা মোবাইল, ভিডিও ও কম্পিউটার গেমে বিনোদনের নামে তাকে আসক্ত করে৷

শিশুর সামাজিক জীব হয়ে ওঠার ব্যবস্থা কে করবে?

শিশুকে সামাজিক জীব হিসেবে বেড়ে উঠতে দিতে হলে খেলার মাঠে যেতে দিতে হবে৷ সমাজের আট দশটা শিশুর সঙ্গে মিশতে দিতে হবে। তাতেই হয়তো শিশুর মেধার বিকাশ ঘটবে। কবিতা, গান, বিতর্কসহ নানা শিক্ষামূলক বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে। অভিবাবকরাও স্কুল কর্তৃপক্ষর সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে পারেন। একটি শিশু ‍এবিসিডি, কখগঘ পড়লেই শিক্ষিত হয়ে উঠছে না। ঢাকার বেশিরভাগ পার্কেই শিশুদের জন্য বিনোদনের আলাদা কোন ব্যবস্থা নেই। অধিকাংশ স্কুলে নেই খেলার মাঠ।শহরের লাইব্রেরিগুলোও শিশুর মানসিক বিকাশে সাহায্য করতে পারে। শিশুরা সেখানে গিয়ে একান্তে নিজের মনের মতো কোন বই পড়তে পারে।

ভয়ানক হয়ে উঠছে নাতো আপনার শিশু?

মোবাইল ফোন, ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিশুরা আজ বিপথে যাচ্ছে। পর্ণোগ্রাফি ও নানা রকম গেইমে আসক্ত হয়ে পড়ছে শিশুরা। নানা সময়ে তো মরণব্যাধি গেইমেরও প্রচলন ঘটে। শিশুরা ইন্টারনেটে নানা রকম অপরাধ কর্ম দেখে, তা থেকেও উদ্বুদ্ধ হয়ে অপরাধ প্রবণতা তার মধ্যে দেখা যায়। 

বিনোদন হতে পারে সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ:

শিশুদের সামাজিক কাজে অংশগ্রহণও বিনোদন হতে পারে। স্কুল বা অভিবাকরা অল্প বয়স থেকেই নানা রকম সামাজিক কাজে শিশুদের যুক্ত করতে পারে।পরিচ্ছন্নতা অভিযান, শীতবস্ত্র সংগ্রহ ও বিতরণ, গাছ লাগানো ইত্যাদি এর উদাহরণ হতে পারে৷

পথ শিশুদের কি বিনোদন?

অবহেলিথ পথ শিশুদের নিয়ে আসলে ভবাববার লোক খুব কম। বিভিন্ন এনজিও মাঝেমধ্যে এগিয়ে আসে শিশুদের বিনোদনের জন্য। একটু বড় হলেই এই পথ শিশুরা টাকা জমিয়ে সিনেমা হলে যায়। সেখানে নায়ক কিংবা ভিলেনদের সংলাপ মুখস্থ করে।সেগুলো সারাক্ষণ আওরায়। যেহেতু তারা খুব কম বয়সেই টাকা পয়সা কোন না কোনভাবে উপার্জন করা শুরু করে। এসব শিশুরা বেশিরভাগই নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। বেশিরভাগ তরুণ ও শিশুদেরই হাত কাটা ঠোঁট কাটা দেখা যায়।যা নেশার ফল। বিভিন্ন বস্তি বলা যায় নেশার অভয়ারন্য।

বাংলাদেশে নির্মিত কয়েকটি শিশুতোষ সিনেমা: এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী, দীপু নাম্বার টু, ছুটির ঘন্টা, দূরত্ব, আমার বন্ধু রাশেদ।

বলিউডের বিখ্যাত কয়েকটি শিশুতোষ সিনেমা: তারে জামিন পার, ভূতনাথ, মাকড়ি, স্ট্যানলি কা ডাব্বা, মিস্টার ইন্ডিয়া, মিস্টার ইন্ডিয়া, মিস্টার ইন্ডিয়া- এসব সিনেমায় শিশুদের প্রাধান্য দিয়ে নির্মাণ হয়েছে।

শিশুতোষ টিভি সিরিজ: ‘সেসেমি স্ট্রিট’, ‘ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট অ্যান্ড দ্য প্ল্যানেটিয়ার্স’, ‘দ্যা অক্টোনাটস’, ‘দ্যা ওম্বলস’, ‘দ্যা অ্যানিমেলস অফ ফার্দিং উড’, ‘বিল নাই দ্যা সায়েন্স গায়’, ‘দ্যা ম্যাজিক স্কুল বাস’ সিরিজগুলোও শিশুদের কাছে জনপ্রিয়।

বাংলাদেশে একমাত্র শিশুতোষ চ্যানেল ‘দুরন্ত’: দেশীয় সংস্কৃতি ও বিষয়বস্তুর আলোকে শিশুবান্ধব বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচারের লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে শিশু ও পরিবারভিত্তিক টিভি চ্যানেল `দুরন্ত`।২০১৭ সালে শুরু হওয়া এই টিভি চ্যানেল অনেকটাই শিশুদের আস্থার জায়গা হয়েছে। নানা রকম শিশুতোষ অনুষ্ঠান নিয়েই সাজানো হয় এর অনুষ্ঠানমালা।

 

বাংলা ইনসাইডার

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭