ইনসাইড আর্টিকেল

একাত্তরের এই দিনে: অগ্নিঝরা ২১ মার্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/03/2019


Thumbnail

একাত্তরের মার্চে প্রতিটি দিন পার হচ্ছিল আর অগ্নিগর্ভে পরিণত হচ্ছিল দেশ। আজকের দিনটি অর্থাৎ ২১ মার্চও এর ব্যতিক্রম ছিল না। এদিন সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠকের পূর্বে তার ধানমন্ডির বাসভবনে আইনজীবী এ.কে.ব্রোহির সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। ব্রোহির সঙ্গে আলোচনার পর তিনি প্রেসিডেন্ট ভবনে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। এসময় প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমেদ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন।

একাত্তরের আজকের দিনটি ছিল অসহযোগ আন্দোলনের বিশতম দিন। এদিন মুক্তিকামী হাজার হাজার মানুষের দৃপ্ত পদচারণায় রাজধানী ঢাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। সর্বস্তরের মানুষ ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান তুলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অভিমুখে এগিয়ে চলে। সেখানে মুক্তি অর্জনের শপথ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে জনতার মিছিল।

এদিন বিকেলে চট্টগ্রাম ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পোলো গ্রাউন্ডে এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আলোচনায় ফল হবে না। এদেশের হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি থেকে চাপরাশি পর্যন্ত যখন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে মানে না, তখন শাসন ক্ষমতা শেখ মুজিবের হাতেই দেওয়া উচিত।’

একাত্তরের আজকের দিনে পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো বিকেলে সদলবলে করাচী থেকে ঢাকায় আসেন। ভুট্টোর আগমন উপলক্ষে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে সেনা মোতায়েন করা হয়। সাংবাদিকদের বিমানবন্দরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। ভুট্টোকে বিমানবন্দর থেকে হোটেল ইন্টার-কন্টিনেন্টালে নিয়ে আসার সময় রাস্তার দু’পাশের পথচারীরা ভুট্টোবিরোধী স্লোগান তুলতে থাকে। সন্ধ্যায় জুলফিকার আলী ভুট্টো কড়া সেনা প্রহরায় প্রেসিডেন্ট ভবনে যান। সেখানে দু’ঘন্টারও বেশি সময় ধরে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তিনি। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক শেষে হোটেলে ফিরেই ভুট্টো তার উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। এর আগে হোটেল লাউঞ্জে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের ভুট্টো বলেন, এ মুহূর্তে আমি এটুকু বলতে পারি যে, সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। এটুকু বলেই তিনি সাংবাদিকদের আর কোন কথার উত্তর না দিয়ে সরাসরি লিফটে উঠে পড়েন। সাংবাদিকরা তার সঙ্গে যেতে চাইলেও ভুট্টোর ব্যাক্তিগত প্রহরীরা অস্ত্র উঁচিয়ে বাধা দেয়।

১৯ মার্চ জয়দেবপুরে যে কারফিউ জারি করা হয়েছিল, এদিন দুপুর ১২টায় তা ৬ ঘন্টার জন্য প্রত্যাহার করা হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়।

এদিন রাজধানীর মগবাজারে মহিলা সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় মহিলা সমাবেশ। এই সমাবেশে সেনাবাহিনীর সাবেক বাঙালি সৈনিকদের নিয়ে একটি প্যারা-মিলিটারি গঠনের আহ্বান জানানো হয়। এভাবেই একটু একটু করে বাঙালীরা পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে থাকে। আর নিরস্ত্র বাঙালীর ওপর ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে একের পর এক গোপন বৈঠকে মিলিত হতে থাকে পাক শাসকশ্রেনী।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭