ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকেই আটকে খালেদার প্যারোল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 03/04/2019


Thumbnail

তারেক জিয়ার কারণেই আটকে যাচ্ছে বেগম জিয়ার প্যারোল। সরকার এবং বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা বলছেন, তারেক জিয়া কোন অবস্থাতেই বিএনপির পদ ছাড়বে না। আর সরকার তারেক জিয়ার ব্যাপারে দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে। প্রথমত, তারেক জিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে বিএনপির পদ ছাড়বে। দ্বিতীয়ত; তারেক জিয়া দেশে ফিরে সাজা ভোগ করবে বা আত্মপক্ষ সমর্থনে আইনী লড়াইয়ে অংশ নেবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র গুলো বলছে, বেগম জিয়া প্রথম প্রস্তাবের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখালেও তারেক জিয়া দুটি প্রস্তাবের একটিতেও রাজী হননি। বরং এছাড়া বেগম জিয়ার প্যারোল নিয়ে সমঝোতার জন্য তিনি প্রস্তাব দেন। কিন্তু বিএনপির সংগে সমঝোতার উদ্যোগ নেয়া সরকারের সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, তারেক জিয়ার ব্যাপারে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত ছাড়া প্যারোলের প্রশ্নই আসে না। এই অবস্থায় বিএনপি নেতৃবৃন্দ, আজ-কালের মধ্যে তারেক জিয়ার সংগে স্কাইপে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।

গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে বেগম জিয়া কারাগারে। প্রথমে এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় দন্ডিত তিনি দন্ডিত হন, পরে জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলায় তার সাত বছরের সাজা হয়। কারাগারে বেগম জিয়া বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন। এই প্রেক্ষিতে, বিএনপির পক্ষ থেকে তার মুক্তি দাবী করা হচ্ছে। অবশ্য বিএনপির নেতারা বলছেন, মুক্তি না দিলেও তাকে যদি তার পছন্দের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় সেক্ষেত্রেও তাদের আপত্তি নেই। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যেহেতু বেগম জিয়া দন্ডিত আসামী এবং যেহেতু সর্বোচ্চ আদালত তার চিকিৎসার স্থান হিসেবে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত করে দিয়েছে, তাই এর বাইরে সরকারের কিছু করার নেই। এরকম পরিস্থিতিতে প্যারোলে মুক্তির প্রসংগটি সামনে চলে আসে। বিএনপির আইনজীবী খন্দকার মাহাবুব হোসেন বলেছেন, প্যারোল সম্পূর্ণ সরকারের ইচ্ছাধীন একটি বিষয়। আদালতের মাধ্যমে হোক কিংবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের মাধ্যমেই হোক এখানে সরকারের ইচ্ছাই হলো শেষ কথা। সরকার নির্বাচনের পর বেগম জিয়ার ব্যাপারে যথেষ্ঠ নমনীয়। সরকারের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন ‘ বেগম জিয়া নয় তারেক জিয়ার ব্যাপারেই আমাদের মনোযোগ। কারণ তারেক একজন ক্রিমিনাল মাইডেন্ড পলিটিশিয়ান। সে সব কিছুই দূবৃত্তায়ন প্রক্রিয়ায় হাসিল করতে চায়। বাংলাদেশ এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতির জন্য বিপদজনক। একারণেই আমরা তাকে ফিরিয়ে এনে আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণের পক্ষে।’

বিএনপিতে তারেক জিয়ার অনুসারীরাও এখন চাইছেন আপাতত: তারেক জিয়া রাজনতি থেকে দুরে থাকুন। তাদের মত হলো, আনুষ্ঠানিক ভাবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বা সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের পদ ছাড়লেও দলে তার প্রভাব ক্ষুন্ন হবে না। এখন তিনি যেভাবে নির্দেশ এবং পরামর্শ দিচ্ছেন সেভাবে পদে না থেকেও দল চালাতে পারবেন। সুবিধা হবে যে, তারেক পদ ছাড়লে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার সরকারের আগ্রহ কমে যাবে। অন্য দিকে পদ না ছাড়লে হয়তো সরকার সর্বাত্মক কূটনীতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারেক কে দেশে ফিরিয়ে আনবে। এটা হবে তার জন্য ভয়ংকর। কিন্তু তারেক জিয়া সুভাকাংখীদের এসব পরামর্শে আগ্রহী নন। বিএনপির একজন নেতা জানিয়েছেন, বিএনপিকে জিয়া পরিবার মুক্ত করতেই তারেক জিয়াকে পদ ছাড়তে বলা হচ্ছে বলেই তারেক মনে করেন আর একারণেই পদ ছাড়ার ব্যাপারে তার আপত্তি। আর এই আপত্তিতেই হয়তো শেষতক আটকে যাবে বেগম জিয়ার প্যারোল।

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭