ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির ‘টাকশাল’ বন্ধ কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/04/2019


Thumbnail

একটা সময় বিএনপিকে বলা হতো ধনীদের ক্লাব। টাকা যেন কোন বিষয়ই ছিলো না বিএনপির জন্য। টাকা যে শুধু বিদেশ থেকে আসতো বা চাঁদার টাকায় নেতাদের পকেট ভারী হতো এমনটি নয়। অনেক সময়, ধনাঢ্যরা অকাতরে দলের জন্য টাকা বিলাতেন। ক্ষমতায় থেকে বিএনপি অনেক ধনবান তৈরী করেছিল, যারা দলের জন্য খরচ করতো। এদের মধ্যে দুজন বিশেষভাবে আলোচিত ছিলেন, একজন হলেন তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। অন্যজন বেগম জিয়ার ঘনিষ্ঠ মোসাদ্দেক আলী ফালু। এই দুই জনের উথান কাহিনী রুপকথাকেও হার মানায়। শূন্য থেকে যেভাবে এরা সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, তা নিয়ে ভালো সিনেমা হতে পারে। এদেরকে একসময় বলা হতো টাকশাল। বিএনপির অনেকেই হাস্যরস করে বলতেন এগেদর কাছে টাকার মেশিন আছে। কিন্তু বিএনপির প্রধান দুই অর্থদাতাই এখন আড়ালে। মামুন জেলে। বিএনপি চালানোর জন্য অর্থ যোগান দেয়া তো দূরের কথা, নিজে চলাই তার জন্য দুস্কর এখন। আর মোসাদ্দেক আলী ফালু নিজেকে বাঁচাতে দুবাই বসে আছেন। ২০১৬ সালে বিএনপির কমিটি গঠিত হলে তাকে অবমূল্যায়নের অভিযোগে পদত্যাগ করেন ফালু। কিন্তু তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি। কিন্তু এ দুজন ছাড়াও বিএনপিতে অনেক বিত্তবান আছেন, যারা সুসময়ে খরচের হিসাব করেননি, এখন হাত গুটিয়ে নিয়েছেন। এদের মধ্যে অন্যতম আলোচিত মোর্শেদ খান। প্যাসিপিক গ্রুপের মালিক। আরব বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোক্তা। যদিও তার সিটিসেল মোবাইল ব্যবসায় লালবাতি জ্বলেছে। কিন্তু বিএনপি আমলের লুণ্ঠন অর্থনীতির প্রতীক মোর্শেদ খান। মোর্শেদ খান এখন দলের জন্য এক পয়সাও খরচ করেন না।

২০০১ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়ে চমকে দিয়েছিলেন ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টু। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তার আয় রোজগার মন্দ ছিল না। ২০০৮ সালের পর মিন্টুই বিএনপির ‘ক্যাশিয়ার’ হিসেবে পরিচিতি পান। যদিও দুষ্ট লোকেরা বলেন, নিজের টাকায় তিনি হাত দেননি। বরং বিএনপির নামে চাঁদাবাজি করে নিজের আখের গুছিয়েছেন। কিন্তু সেই ক্যাশিয়ারও এখন মুঠো বন্ধ করে রেখেছেন। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। দলে তিনি মর্যাদা পেয়েছেন। অনেক সিনিয়র নেতাদের ডিঙিয়ে তিনি কমিটির সদস্যপদ পেয়েছেন। কিন্তু দলের জন্য অর্থ খরচে তাঁর কৃপণতা নিয়ে দলেই চর্চা কম নয়। বিএনপির জন্য বিএনপির নেতা কর্মীদের জন্য একসময় বেহিসেবি খরচ করতেন সাদেক হোসেন খোকা। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে রীতিমতো লুট করার অভিযোগ ছিল এই নেতার বিরুদ্ধে। কিন্তু এখন ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধে তিনি নিউইয়র্কে। দলের জন্য টাকা পয়সা খরচ করেন না এখন। খোকার মতো হাত খোলা না হলেও বিত্তের অভাব নেই মির্জা আব্বাসের। পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে আছে ঢাকা ব্যাংক। কিন্তু দলের জন্য টাকা পয়সা খরচ করেন না মোটেও।

বিএনপি যে এখন সরকারের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারছে না তাঁর একটি বড় কারণ হলো অর্থ প্রবাহের অভাব। বিএনপি নেতারাই স্বীকার করেন, শুধু রাজনীতিতে নয়, আর্থিকভাবেও দেউলিয়া প্রায় দলটি। আর এজন্যই বিলীন হতে চলেছে দলটি।

 

বাংলা ইনসাইডার

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭