ইনসাইড বাংলাদেশ

যশোরের সীমান্তর্বতী হাকর নদী দখল করে ভবন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/04/2019


Thumbnail

যশোররে সীমান্তর্বতী শার্শা উপজেলার বেনাপোলরে সাদিপুর গ্রামে ভারত-বাংলাদশে সীমান্তরে ১৮ নম্বর সীমানা পিলার এলাকা দিয়ে হাকর নদী বাংলাদেশে ঢুকেছে। শার্শার বড়আঁচড়া, ছোট আঁচড়া, ভবারবেড়, বেনাপোল ও নারায়ণপুর মৌজার মধ্য দিয়ে রঘুনাথপুরের কোদলা নদী হয়ে বেতনা নদীর সাথে মিশে গেছে এ নদী। ভারতের অংশে নদীটি থাকলেও বাংলাদেশের অংশে নদীর বুকে গড়ে উঠেছে একাধকি ভবন ও বিভিন্ন স্থাপনা।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, ভূমি অফিসের কিছু র্কমর্কতা নদীকে `সমতল ভূমি` দেখিয়ে ব্যক্তি মালিকানায় রের্কড করে দিয়েছেন। আর ভূমি র্কতৃপক্ষ বলছে বিষয়টি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

বেনোপোল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি র্কমর্কতা আবু সাঈদ মোল্লা বলেন, কুমুদিনী দাসী ও সূর্যকান্ত রায় চৌধুরী নামে দুইজন জমিদার নদীর জমির স্বত্ব দখলীয় হিসেবে ছিলেন। পরে এর স্বত্ব সরকারের কাছে চলে যায়। ১৯২৭ সালরে সিএস রেকর্ডেও তা সরকারের নামইে ছিল।

পরে ১৯৬২ সালের এসএ জরিপে দেখা যায়- ছোটআঁচড়া মৌজার ১ নম্বর দাগে ৮ দশমিক ১৩ একর, বড়আঁচড়া মৌজার ১ নম্বর দাগের ৫ দশমিক ৬০, ভবারবেড় মৌজার ১ নম্বর দাগের ৪ দশমিক ২৩ ও বেনাপোল মৌজার ১, ৩৭২ ও ৪১১ নম্বর দাগে ২৪ দশমিক ৩৯ একর জমি বিভিন্ন ব্যক্তির নামে রের্কড হয়ে গেছে। এইভাবে স্থানীয় ৩০০-৩৫০ ব্যক্তি র্বতমানে নদীর জমি নিজেদের নামে রের্কড করে ভোগ-দখল করছেন বলে সাঈদ মোল্লার ভাষ্য।

তিনি আরও বলেন, “ভারতের প্রেট্টাপোল- বাংলাদেশে প্রবেশমুখে বেড়ি বাঁধ দিয়ে নদীর পানি চলাচল নিয়ন্ত্রেণ রাখা হয়েছে। কন্তিু প্রতি বছর র্বষাকালে পানির চাপে বাঁধ খুলে দিলে বেনাপোল সীমান্তে বন্যার সৃষ্টি হয়।” ভূমি র্কমর্কতার বিরুদ্ধে নদী দখলের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভূমি জরিপ অফিসে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রমাণ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলীকদর সাগর বলেন, স্থলবন্দর বেনাপোলের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে নদীটি দখলমুক্ত করার বিকল্প নেই। আন্তঃসীমান্ত সংলগ্ন নদীটি দখলদারদের কারণে নাব্যতা হারিয়েছে। এতে পানি নষ্কিাশন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর শার্শা উপজেলার র্বির্তন এলাকা প্লাবিত হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

বেনোপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলুর রহমান বলেন, "নাভারনের বতেনা নদীর সঙ্গে বেনাপোলের হাকর নদীর সংযোগ বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত পানির চাপে প্রতি বছর ক্ষতগ্রিস্ত হয় মাঠরে ফসল ও বাড়িঘর।"

ভারত সীমান্ত থেকে বেনাপোল পৌর ভবন পর্যন্ত হাকর নদীকে দখলমুক্ত করে পৌরবাসীর জন্য একটি সেরাবর(লেক) তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, “হাকর নদী উন্মুক্তকরণের জন্য মন্ত্রণালয়ের আদেশের অপক্ষোয় আছি। বর্ষা মৌসুমে পানির চাপ বৃদ্ধি পেলে শার্শার বাহাদুরপুরের বিপরীতে ভারতের শুটিয়ায় ফারাক্কার আদেল একটি বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। অতিরিক্ত পানির চাপ এলেই ভারত সেই বাঁধ খুলে দেয়। এতে বর্ষা মৌসুমে শার্শার বর্স্তিণী এলাকা প্লাবিত হয়।”

শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জু বলেন, “বাংলাদেশ অংশে হাকর নদী অবৈধ দখলদারদের কব্জায় চলে গেছে। অথচ ভারতের অংশে নদীটি স্বাভাবিকভাবেই প্রবহমান আছে। সিএস রের্কডের মালিকানা ধরে নদীটি দখলমুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।”

র্শাশা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মৌসুমী জেরিন কান্তা বলেন, অবৈধ দখলদারদের কারণে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে হাকর নদী। সরকারি জমি কখনই ব্যক্তিমালিকানায় রের্কডে হওয়ার সুযোগ নেই। তখনকার সময় সেটেলমেন্ট র্কমর্কতাদের ম্যানেজ করে বর্তমান দখলদাররা সর্ম্পূণ অবৈধভাবে নিজেদের নামে রের্কড করে নিয়েছে। হাকর নদী দখলমুক্ত করতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডল বলেন, হাকর নদীর দখলদারদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। মামলার বিষয়েও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দখলমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭